হেঁশেল তৈরি হোয়াইট হাউসে

মা নাকি সব জানেন! স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল, ছেলেকে তাই জোর করে ব্রকোলি খাওয়াতেন মা। কুইনাইন গেলার মতো মুখ করে ছেলেখেয়েও নিত।

Advertisement

চন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৪
Share:

মা নাকি সব জানেন!

Advertisement

স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল, ছেলেকে তাই জোর করে ব্রকোলি খাওয়াতেন মা। কুইনাইন গেলার মতো মুখ করে ছেলেখেয়েও নিত। কিন্তু কত দিন আর মুখ বুজে সহ্য করা যায়! বড় হয়ে তাইবিদ্রোহ ঘোষণা করল সেই বাধ্য ছেলে।বলল, ‘‘আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। জীবনে আর ব্রকোলি খাব না।’’

বছর তিরিশ আগেকার কথা। হোয়াইট হাইসের হেঁশেলে সে বার গলা চড়িয়ে নিজের অপছন্দের কথা জানিয়েছিলেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ। এ বার কার পালা? হিলারি ক্লিন্টন, নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প! আজ ভোট। কাল ফলপ্রকাশ। তবু আগেভাগেই প্রেসিডেন্টের ‘খানদানি-মেজাজ’ বুঝতে চাইছে হোয়াইট হাউস।

Advertisement

কিন্তু বারাক ওবামা, বিল ক্লিন্টনদের হেঁশেলের হাল জানাবে কে? দ্বারস্থ হলাম হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন শেফ জন মলারের। ১৯৯২ থেকে ২০০৫— টানা ১৩ বছর মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মন জুগিয়ে খাবারের বন্দোবস্ত করেছেন তিনি।

জনের সঙ্গে কথায় কথায় তাই স্মৃতির ভিড় জমল সেই হোয়াইট হাউসের সেকেন্ড ফ্লোরেই। ওখানেই রান্নাঘর, ডাইনিং-ও। জন বলছিলেন, ‘‘ওখানকার ব্যাপারই আলাদা। সবটাই ঘরোয়া। সিক্রেট সার্ভিসের নজরদারি নেই। চাইলেই যখন-তখন দেখা করা যায় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। আজ কী খাবেন— দিনের পর দিন এটা জানতে গিয়েই একটা ব্যাক্তিগত সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায় তাঁর সঙ্গে।’’

দুই বুশ এবং ক্লিন্টনের আমলে তিনিই ছিলেন হেঁশেলে। জনের কথায়, ‘‘শুধু কী খাবেন নয়, কী ভাবে সেই খাবার তৈরি হবে, সেটাও মাঝে মাঝে বলে দিতেন প্রেসিডেন্টরা।’’ বিদেশ সফর সেরে এসেই নানা ধরনের নতুন রান্নার গল্প শোনাতেন তাঁরা। শিখতেন জন। আর খাওয়াতেন প্রায় রোজ-রোজ নতুন-নতুন।

তাঁর দেখা প্রেসিডেন্টদের মধ্যে বাবা বুশই সব চেয়ে বেশি ভোজনবিলাসী ছিলেন বলে জানালেন জন। মুচমুচে সব স্ন্যাক্স ভালবাসতেন তিনি। আর ভারতীয় খাবার? এ বার ভোট গেল ক্লিন্টন দম্পতির ঝুলিতেই।

যত দিন হোয়াইট হাউসে রান্নার দায়িত্বে ছিলেন, বায়নাক্কাও কম পোহাতে হয়নি জনকে। রোজ তো আর পাতে মাংস দেওয়া যায় না! তাই তাইল্যান্ড থেকে শুরু করে ভারত, চিন, জাপান — যতটা পেরেছেন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে গেছেন জন মলার। তবে স্বস্তি বলতে এটুকুই যে, তাঁর তৈরি বেশির ভাগ মেনুই ‘সোনামুখ’ করে খেয়েছেন প্রায় সব প্রেসিডেন্ট। সপরিবার।

এখন শুধু ভোট দিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে জেতানোর পালা। চুটিয়ে চলছে ভোটদান পর্ব। জনের অবশ্য এ সবে বিশেষ হেলদোল নেই। তাঁর নজর আটকে ওই সেকেন্ড ফ্লোরেই।

মিল ইজ রেডি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন