Nepal Gen-Z Protest

সুদান গুরুং! যুববিদ্রোহের মুখ হয়ে উঠেছেন নেপালে, ভূকম্পে সন্তানহারা যুবক সমাজসেবার দল চালান, পরিচিত ডিজে-ও

মঙ্গলবার নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের। এতশত ‘তরুণ ঈশান’কে বিক্ষোভে শামিল করলেন কে বা কারা, তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৩১
Share:

সুদান গুরুং। —ফাইল চিত্র।

ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভে সোমবারের পর মঙ্গলবারও উত্তাল রয়েছে নেপাল। মঙ্গলবার রাজধানী কাঠমান্ডুতে আন্দোলনের সামনের সারিতে দেখা গিয়েছিল স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের। এতশত ‘তরুণ ঈশান’কে বিক্ষোভে শামিল করলেন কে বা কারা, তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই। নেপালের একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সরকার বিরোধী এই আন্দোলনের প্রধান চালিকাশক্তি বছর ছত্রিশের এক তরুণ, নাম সুদান গুরুং।

Advertisement

কে এই সুদান গুরুং

সুদান ২০১৫ সাল থেকে ‘হামি নেপাল’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালান। মূলত ছাত্র-যুবদের দ্বারা পরিচালিত এই সংগঠন দীর্ঘ দিন ধরেই নেপালের প্রান্তিক এলাকাগুলিতে শিক্ষার প্রসারে কাজ করে থাকে। এক সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ‘ডিসকো জকি’ বা ‘ডিজে’ হিসাবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন সুদান। ২০১৫ সালে একটি ভূমিকম্পে এক সন্তানকে হারান তিনি। তার পরেই স্থির করেন নেপালে তরুণ প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে কাজ করবেন তিনি। ২০১৫ সালের পরেই সুদান ত্রাণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলার কাজে হাত পাকাতে থাকেন। স্থানীয় স্তরে মেলামেশার ফলে নেপালের ছাত্র-যুবদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

Advertisement

অতীতে নেপালের বিপি কৈরালা ইনস্টিটিউটে দুর্নীতির প্রতিবাদ করে ঘোপা ক্যাম্প আন্দোলনের শামিল হয়েছিলেন সুদান। সেই সময়ও এই যুবককে নেপালের একাংশের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। তবে সোমবারের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর নতুন করে আলোচিত হচ্ছে সুদানের নাম। নেপালের অনেকেই মনে করছেন সে দেশে ফেসবুক, হোয়াট্‌সঅ্যাপ-সহ ২৬টি সমাজমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে যুব সমাজের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিলই। সেটাকেই সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে কাজে লাগিয়েছেন সুদান।

খাতায়কলমে এই আন্দোলনের হোতারা নিজেদের ‘জেন জ়ি’ বলে পরিচয় দিচ্ছেন। বিভিন্ন পোস্টারে দেখা যাচ্ছে, কেবল ফেসবুকের উপর বিধিনিষেধ আরোপের কারণেই নয় নেপালের ক্রমবর্ধমান আর্থিক বৈষম্য, সরকারি স্তরে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের কারণেও ক্ষুব্ধ সে দেশে ছাত্র-যুবদের একাংশ। নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির নাম করে মঙ্গলবারও বিভিন্ন মিছিল থেকে স্লোগান উঠেছে ‘কেপি চোর, গদি ছোড়’। সুদান নিজে অহিংস আন্দোলনের কথা বললেও তা ক্রমশ সহিংস রূপ নিয়েছে। হামলা হয়েছে নেপালের প্রেসিডেন্টের বাসভবনেও।

সুদানের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টে জ্বলজ্বল করছে তাঁর ডিজে পরিচয়। তিনি গান বাজাচ্ছেন, এমন ভিডিয়োও রয়েছে সেখানে। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে তাঁর অংশগ্রহণের ছবিও। সমাজমাধ্যম ব্যবহারে দক্ষ এই সুদানই এখন নেপাল সরকারের কাছে মাথাব্যথার কারণ। সমাজমাধ্যমের মাধ্যমেই তিনি নেপালের ছাত্র-যুবদের একাংশের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ‘টিকটক’-এর মতো যে অ্যাপগুলি সরকারি বিধিনিষেধের মুখে পড়েনি, সেগুলির মাধ্যমেই আন্দোলনকারীরা পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়িয়েছে বলে অনুমান। আপাতত ‘ডিজে’ সুদানের ‘প্রতিবাদী’ গানের তালে যোগ্য সঙ্গত করছে নেপালের ছাত্র-যুবরা। আর বেসুরে বাজছে নেপাল সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement