পাত্রী চাই? পাঠাচ্ছে এশিয়া

ডেনমার্কের কোলে স্ব-শ্বাসিত দ্বীপপুঞ্জ ফেরো। ভাষা, খাওয়া-দাওয়া, আবহাওয়ার দিক থেকে আর পাঁচটা দেশের থেকে একদম আলাদা। মেরেকেটে ৫০ হাজার লোকের বাস। তার মধ্যে আবার পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা অনেক কম।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তোরশান (ফেরো দ্বীপপুঞ্জ) শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৭ ০৭:৪০
Share:

ডেনমার্কের কোলে স্ব-শ্বাসিত দ্বীপপুঞ্জ ফেরো। ভাষা, খাওয়া-দাওয়া, আবহাওয়ার দিক থেকে আর পাঁচটা দেশের থেকে একদম আলাদা। মেরেকেটে ৫০ হাজার লোকের বাস। তার মধ্যে আবার পুরুষের তুলনায় মহিলার সংখ্যা অনেক কম। আর সেই জন্যই অন্য দেশ থেকে পাত্রী খুঁজে আনতে হচ্ছে ফেরোর বিবাহযোগ্য পুরুষদের। পরিসংখ্যান বলছে, তাইল্যান্ড ও ফিলিপিন্স থেকে আসা তিনশোরও বেশি মহিলার ঠিকানা এখন এই দ্বীপপুঞ্জ। স্বামী-সংসারের পাশাপাশি এখানেই আর্থিক ভাবে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছেন তাঁরা। কেউ শুরু করেছেন রেস্তোরাঁর ব্যবসা, কেউ বা মাসাজ পার্লার।

Advertisement

পড়াশোনার খাতিরে, চাকরির সন্ধানে সম্প্রতি ফেরোর যুবক-যুবতীরা বাইরে যাচ্ছেন। তবে তাঁরা অনেকেই ফেরেন না। মহিলাদের মধ্যে বিদেশে পাকাপাকি ভাবে থিতু হওয়ার প্রবণতা বেশি। ফলে পাত্রীর খোঁজে একমাত্র সহায় ডেটিং ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া। বিয়ে তো না হয় হল! তার পরে নিজের দেশ ছেড়ে ফেরোর গ্রামে মানিয়ে নেওয়া কিন্তু বেশির ভাগ নব্য বিবাহিতাদের পক্ষে সহজ ছিল না।

সেই গল্প বলছিলেন তাইল্যান্ডের আথায়া স্লেটালিড। ৬ বছর আগে স্বামী জ্যানের সঙ্গে ফেরোয় আসা। ফেরোয় টানা ৬ মাস শীতকাল। প্রথম প্রথম ঘরের মধ্যে হিটারের সামনে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতেন আথায়া। ঠান্ডা যেমন শরীরে ছিল, মনও অবসাদে ভারী হয়ে উঠেছিল। ছেলে জেকব যখন ছোট, আথায়া এক রকম গৃহবন্দি। তাঁর কথায়, ‘‘গ্রামের বয়স্ক লোকেরা ইংরোজি বলতে পারতেন না। ছেলের সঙ্গে খেলারও কেউ ছিল না।’’ কিন্তু তার পর জেকব যখন কিন্ডারগার্টেনে, আথায়া অন্য তাই মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে শুরু করলেন। সেই জন-সংযোগ তাঁর ব্যবসা শুরু করতেও সাহায্য করেছিল।

Advertisement

এশীয় মহিলাদের এখানে একটি বড় সমস্যা— ভাষা। সেই কারণে অনেককেই উপযুক্ত কাজ পান না। প্রধানমন্ত্রী অ্যাক্সেল জোহাননিসেন বললেন, ‘‘এশীয় মহিলাদের সাহায্যে সরকার বিনামূল্যে ফেরোর ভাষা শেখানোর ব্যবস্থা করেছে।’’

বর্তমান বিশ্বে শরণার্থী প্রশ্ন একটি স্পর্শকাতর বিষয়। সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ফেরো মুক্ত হস্তে অভিবাসীদের গ্রহণ করেছে। তবে নিজের প্রয়োজনেই! স্থানীয় রাজনীতিক মাগ্নি আর্গে বলেন, ‘‘অভিবাসীদের বেশির ভাগই মহিলা। তাঁরা এখানে আসছেন, কাজ করছেন। তবে কোনও রকম সমস্যা তৈরি করছেন না।’’ ফিলিপিন্স থেকে আসা অ্যান্তোনিও এগহোমও জানান, এখনও পর্যন্ত এখানে কোনও অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হয়নি তাঁর।

আথেয়ার বন্ধুরা প্রায়শই তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, গ্রাম ছেড়ে তাঁরা কেন শহরে আসে না? আথেয়া জবাব দেন, ‘‘আমি এখানেই খুশি। পাহাড়ের কোলে বেড়ে উঠছে জেকব। এখানে কোনও দূষণ নেই। অপরাধ নেই। পৃথিবীতে শেষ স্বর্গ যদি কিছু থাকে, তবে সেটা এখানেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন