‘ঋতুকালীন’ কুঁড়েঘরে মৃত্যু নেপালে

এখানকার বেশ কিছু সম্প্রদায় এখনও ঋতুকালীন সময়ে মহিলাদের ‘অপবিত্র’ মনে করে। তাই তাঁদের ওই সময়ে বাড়ি থেকে দূরে আলাদা কুঁড়েঘরে থাকতে হয়।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৭
Share:

—প্রতীকী ছবি।

ঋতুকালীন অবস্থায় জানলাহীন কুঁড়েঘরে বন্দি থাকতে হয় মহিলাদের —নেপালের বহু সম্প্রদায়ে এমনটাই প্রথা। দু’দিন আগে এমনই একটি কুঁড়েঘরে আগুন লেগে গিয়েছিল। সেখানে তখন দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন ৩৫-এর তরুণী অম্বা বোহারা। প্রাণ হারিয়েছেন সকলেই। পুলিশের সন্দেহ, ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে মা আর তাঁর দুই সন্তানের।

Advertisement

এখানকার বেশ কিছু সম্প্রদায় এখনও ঋতুকালীন সময়ে মহিলাদের ‘অপবিত্র’ মনে করে। তাই তাঁদের ওই সময়ে বাড়ি থেকে দূরে আলাদা কুঁড়েঘরে থাকতে হয়। যাতে একটা জানলা পর্যন্ত থাকে না। ২০০৫ সালে এই প্রথাকে বেআইনি ঘোষণা করার পরেও তা পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। শুধু পরিজনেদের থেকে দূরে থাকা নয়, এই প্রথায় মহিলাদের খাবার, দেব-দেবীর মূর্তি, গরু-বাছুর এবং পুরুষদের স্পর্শ করাও নিষেধ।

গত বছর প্রশাসন জানায়, এই প্রথা কেউ পালন করতে বাধ্য করলে সেই ব্যক্তির তিন মাস জেল এবং তিন হাজার টাকা জরিমানা হবে। তা সত্ত্বেও এই প্রথা চলছে এখনও। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে পশ্চিম বাজুরা জেলার বাসিন্দা অম্বা তাঁর ১২ আর ৯ বছরের দুই ছেলেকে নিয়ে ওই কুঁড়েঘরে ঘুমোচ্ছিলেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় সেখানে আগুন জ্বেলেই শুয়ে পড়েছিলেন তাঁরা।

Advertisement

বুধবার সকালে অম্বার শাশুড়ি যখন ওই কুঁড়েঘরে পৌঁছন, তখন কেউই আর বেঁচে নেই। স্থানীয় পুলিশ-প্রধান উদ্ধব সিংহ ভট্ট বলেছেন, ‘‘আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। তবে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়েই ওঁরা মারা গিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে আমাদের।’’

অম্বা বোহরার মতো এই প্রথা পালন করতে গিয়ে গত বছর এই ভাবেই কুঁড়েঘরে ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা যান ২১ বছরের এক তরুণী। এই প্রথার জেরে বেশ কিছু মহিলা আবার মারা গিয়েছেন সাপের কামড়ে। দেশের মানবাধিকার কমিশনের দাবি, পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় নয়। কমিশনের তরফে মোহনা আনসারি বলেছেন, ‘‘আরও কড়া শাস্তির ব্যবস্থা না করলে মহিলাদের এ ভাবেই মরতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement