ম্যাচের পর জাপানের সমর্থকরা এভাবেই নেমে পড়েন গ্যালারি পরিষ্কারের কাজে। ছবি: এএফপি
জাপানের সমর্থকরা সহজেই ‘বেস্ট ফ্যান অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ পুরস্কার পেতেই পারেন। দেশ বিশ্বকাপের ম্যাচ জিতলে কী করতে পারেন তাঁরা? প্রচুর হুল্লোড়, চিৎকার। বাজি পোড়ানো? পানশালায় আমোদপ্রমোদ ?নিদেনপক্ষে দেশের দরিদ্র নাগরিকদের জন্য দানধ্যান? উহুঁ।
দেশ জিতলেই তাঁরা লেগে পড়েন স্টেডিয়াম পরিষ্কারের কাজে। বলা ভাল, দেশ যেখানেই খেলতে যায়, সেখানে ফলাফল যাই হোক না কেন। ম্যাচের পর স্টেডিয়াম যাতে নোংরা না থাকে, তার দায়িত্ব তুলে নেন নিজেদের কাঁধেই। সেইজন্য সঙ্গে করে বিন ব্যাগ নিয়ে ম্যাচ দেখতে ঢুকতেও ভোলেন না তাঁরা।
নিজের দেশ জাপানকে তাঁরা যেভাবে পরিষ্কার রাখেন। তেমনটাই পরিষ্কার রাখতে চান অন্য দেশের স্টেডিয়ামও। এটাই নাকি রীতি। হই-হুল্লোড়ের বদলে তাঁরা নেমে পড়েন স্টেডিয়াম পরিষ্কারের কাজে। সারা দিনে গোটা স্টেডিয়াম জুড়ে যত বর্জ্য রয়েছে, সেইসব প্যাকেট, বাক্স ইত্যাদি সাফাই করা শুরু করে দেন। কারণ এভাবেই নাকি মন ভাল হয়ে যায়।
দেখুন জাপানের সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কারের ভিডিয়ো:
গ্রুপ এইচ-এর খেলায় কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জিতেছিল জাপান। তার ঠিক পরেই শুরু হয়ে যায় ‘সেলিব্রেশন’। অর্থাৎ গোটা স্টেডিয়ামটাকে ঝকঝকে তকতকে করে ফেলা। যাবতীয় বর্জ্য বিনব্যাগে ভরে ফেলে দেওয়া।
দেখুন সেনেগালের সমর্থকদের স্টেডিয়াম পরিষ্কারের ভিডিয়ো:
চার বছর আগে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল ব্রাজিলে। সেখানে আইভরি কোস্টের সঙ্গে ম্যাচে পরাজয়ের পরে, গ্রিসের সঙ্গে ড্র-এর পরেও একই ভঙ্গিতে খাবার ও জলের বর্জ্য ও পলিথিনের প্যাকেট নিজেদের বিন ব্যাগে ভরে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করেছিলেন জাপানের সমর্থকরা।
এই শৃ্ঙ্খলার কারণেই ম্যাচ জেতার পরেও খুব বেশি উচ্ছ্বাস দেখাতেও তাঁরা পছন্দ করেন না। এই প্রসঙ্গে প্রাক্তন ফুটবলার ও ধারাভাষ্যকার সুকুমার সমাজপতি আনন্দবাজারকে বলেন, ‘‘জাপান অত্যন্ত শৃঙ্খলাবদ্ধ একটা দেশ। সত্যিকারের ফুটবলপ্রেম এটাই। নিজের দেশকে ভালবাসার এর চেয়ে সুন্দর বহিঃপ্রকাশ আর কিছু হতে পারে না।’’
আরও খবর: রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ থেকে সরল আমেরিকা
মার্কিন মুলুকে অন্য ছবি বানাচ্ছেন ঋত্বিকের নাতনি
শুধু জাপানই নয়, সেনেগালের সমর্থকদেরও দেখা গিয়েছে একই ভঙ্গিতে স্টেডিয়াম পরিষ্কার করতে। এ বছরের বিশ্বকাপের ম্যাচে পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেওয়ার পরে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন আফ্রিকার এই দেশটির সমর্থকরাও।
প্রথম এশীয় দেশ হিসাবে দক্ষিণ আমেরিকার কোনও দেশকে বিশ্বকাপের ম্যাচে হারিয়ে দিয়েছিল ব্লু সামুরাইরা। তাতেও তেমন হেলদোল ছিল না জাপান-ফ্যানদের। শুধু জিতলেই নয়, ম্যাচের ফল যাই হোক, এটা জাপানের ফুটবলপ্রেমী বা‘সাক্কাফান’-দের ‘জেশ্চার’।