জাল নোটের পাক চক্র ফাঁস ঢাকায়

কেউ চোরাচালানকারী, কারও ভারতে জাল নোট পাঠানোর কারবার, কয়েক জন আবার পরিচিত জঙ্গি-সঙ্গী। এক সঙ্গে এত জন দুষ্কৃতী এক জায়গায় জড় হয়েছে খবর পেয়ে পুলিশ ঢাকার বনানী এলাকার একটি আড্ডা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালায়। গ্রেফতার হয় এক দল লোক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

কেউ চোরাচালানকারী, কারও ভারতে জাল নোট পাঠানোর কারবার, কয়েক জন আবার পরিচিত জঙ্গি-সঙ্গী। এক সঙ্গে এত জন দুষ্কৃতী এক জায়গায় জড় হয়েছে খবর পেয়ে পুলিশ ঢাকার বনানী এলাকার একটি আড্ডা ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালায়। গ্রেফতার হয় এক দল লোক।

Advertisement

তার এক ঘণ্টার মধ্যেই থানায় চলে এসে এক জনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান ঢাকার পাক হাই কমিশনের এক ফার্স্ট সেক্রেটারি পদমর্যাদার অফিসার। গ্রেফতার হওয়া লোকেদের মধ্যে ছিলেন পাক দূতাবাসের এক অ্যাটাশে মহম্মদ মজহর খান।

জানুয়ারির ১২ তারিখের ঘটনা এটি। কিন্তু এত জন দুষ্কৃতীকে নিয়ে কী করছিলেন পাক দূতাবাসের এই কর্মকতা?

Advertisement

গ্রেফতার হওয়া এক দুষ্কৃতী দিন কয়েক আগে আদালতে দাঁড়িয়ে সবিস্তার জানিয়েছে তা। মুজিব-উর রহমান নামে এই দুষ্কৃতী নিজে জাল নোটের কারবারি। ভারতে জাল টাকা পাচারের এক জন মাথা। আদালতে সে জানিয়েছে, জাল নোট সরবরাহ ও তা ভারতে পাচারের গোটা বিষয়টি সমন্বয়ের কাজ করতেন পাক দূতাবাসের এই অফিসার। এই কাজ থেকে আসা টাকা ভাগাভাগি করে চলে যায় জামাতে ইসলামি ও অন্য দুটি জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহির ও আনসারুল্লা বাংলা-র কাছে। মুজিব জানিয়েছে, আইএসআইয়ের হয়েই কাজ করতেন পাক দূতাবাসের ওই কর্তা মজহর খান। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের জাল ছড়ানোর বিষয়টিও তিনি দেখতেন। এ সব নিয়ে সমন্বয় বৈঠক করতেই মজহরের নির্দেশে দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়েছিল বনানীর আড্ডায়।

আদালতে মুজিবের স্বীকারোক্তির পরই হইচই পড়ে গিয়েছে। আইএসআইয়ের পরিকল্পনা মাফিক ভারতে জাল নোট পাচার ও তা থেকে পাওয়া অর্থ জঙ্গিদের হাতে যায়— গোয়েন্দারা এ কথা বরাবর বলে আসছেন। কিন্তু মজহর খান গ্রেফতার হওয়ার পরে সে বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এল। এ কাজে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকাও সামনে চলে এসেছে।

নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ সরকারও। সন্ত্রাস, ভারতে জাল নোট পাচার ও জঙ্গিদের অর্থ জোগানে ঢাকার পাক হাই কমিশনের ওই কর্মকর্তার জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তাকে দেশে ফেরানোর দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রক। পাক হাই কমিশন তার পরে পাল্টা চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই মজহর খানকে তারা দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। ৩১ জানুয়ারি সপরিবার তিনি ইসলামাবাদে ফিরে গিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement