পোপের বিশেষ বিমান থেকে

ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করাটা স্বাধীনতা নয়, মত পোপের

মত প্রকাশের স্বাধীনতারও একটা সীমা থাকা উচিত, এমনটাই মনে করেন পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কা থেকে ফিলিপিন্স সফরে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন পোপ। শার্লি এবদো নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার মানে কারও ভাবাবেগকে আঘাত করা বা কারও ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করার স্বাধীনতা নয়। পোপের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আলবার্তো গ্যাসপারি। পোপের নানা সফর আয়োজন করেন তিনিই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩২
Share:

মত প্রকাশের স্বাধীনতারও একটা সীমা থাকা উচিত, এমনটাই মনে করেন পোপ ফ্রান্সিস। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কা থেকে ফিলিপিন্স সফরে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেন পোপ। শার্লি এবদো নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মত প্রকাশের স্বাধীনতার মানে কারও ভাবাবেগকে আঘাত করা বা কারও ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করার স্বাধীনতা নয়।

Advertisement

পোপের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আলবার্তো গ্যাসপারি। পোপের নানা সফর আয়োজন করেন তিনিই। তাঁকে দেখিয়ে পোপ ফ্রান্সিস বলেন, “এই যে আমার বন্ধু গ্যাসপারি। যদি উনি আমার মায়ের নামে কোনও খারাপ কথা বলেন, তা হলে একটা ঘুসি অবশ্যই ওঁর প্রাপ্য। সেটা স্বাভাবিক নয় কী!” তাঁর কথায়, “কাউকে তাতিয়ে তোলা উচিত নয়। অন্যদের বিশ্বাসকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। কারও ভাবাবেগ নিয়ে মশকরা করা যায় না।” যদিও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন, ঈশ্বরের নামে খুনোখুনির পক্ষপাতী তিনি মোটেও নন। পোপের কথায়, “ঈশ্বরের নাম করে কাউকে আঘাত করা, যুদ্ধ করা বা খুনোখুনি কখনওই সমর্থন করা যায় না।” প্রসঙ্গত, পোপ ফ্রান্সিসকে নিয়েও বেশ কিছু ব্যঙ্গচিত্র ছাপা হয়েছে শার্লিতে। কিন্তু তা নিয়ে তিনি কখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।

শার্লি এবদোর সাম্প্রতিকতম সংস্করণের প্রচ্ছদ-ব্যঙ্গচিত্রটিতে আঁকা হয়েছে ফের মহম্মদকেই। দেখা যাচ্ছে, তাঁর চোখে এক ফোঁটা জল। হাতে একটি কাগজ। তাতে লেখা“জ্য স্যুই শার্লি (আমিও শার্লি)।” শিরোনামের ঠিক নীচেই লেখা, “তু এ পার্দোন (সব ক্ষমা করলাম)।” এই ব্যঙ্গচিত্রটিও সমালোচিত হয়েছে মুসলিম জগতে। আফগানিস্তানি তালিবানের তরফে বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি জারি করে শার্লি এবদোর এই পদক্ষেপের নিন্দা করা হয়। পাকিস্তানের পার্লামেন্টেও শার্লি এবদোর বিরোধিতা করে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, “এই ধরনের ব্যঙ্গচিত্রগুলি আসলে সভ্য সমাজের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি করার ষড়যন্ত্র।” বহু মুসলিম প্রধান দেশেই শার্লির এই সংখ্যাটির প্রচ্ছদ ব্যঙ্গচিত্রটিকে উস্কানিমূলক বলেই সমালোচনা করা হয়েছে। কেনিয়ার একটি বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র ওই ব্যঙ্গচিত্রটি ছেপেছিল। বৃহস্পতিবার তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে কাগজটি। সেনেগালে ওই পত্রিকাটির বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে খবর।

Advertisement

প্রকাশ হওয়ার আগে থেকেই শার্লির এই সংখ্যাটির চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া। ৬০ হাজারের বদলে ৩০ লক্ষ পত্রিকা ছাপিয়েও সেই চাহিদা পূরণ করা যায়নি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ গত কাল ঘোষণা করেছিলেন, “শার্লির পুনর্জন্ম হয়েছে।” কিন্তু ব্যঙ্গচিত্রটি নিয়ে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হতে শুরু করলে বৃহস্পতিবার তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ফ্রান্সে প্রতিটি ধর্মকেই রক্ষা করা হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্মান্ধতার ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মুসলিমরাই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন