লাসানা ব্যাথিলি
জঙ্গিদের বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়েও পণবন্দিদের প্রাণ বাঁচাতে দ্বিধা করেননি তিনি। বরং নিজের জীবন বাজি রেখেই ধুলো দিয়েছেন সন্ত্রাসবাদীদের চোখে। দেশবাসীকে শান্ত থাকার আর্জিও জানিয়েছেন।
ধর্মে তিনি মুসলিম। ধর্মের দোহাই দিয়ে যখন ফরাসি পত্রিকার দফতরে হত্যালীলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা, সেখানেই মানবতার নজির তৈরি করলেন লাসানা ব্যাথিলি নামে এই যুবক। পূর্ব প্যারিসের যে সুপারমার্কেটে গত শুক্রবার জঙ্গিরা হামলা চালায়, সেখানকারই কর্মী লাসানা। হামলার দিনও সময়েই দোকানে গিয়েছিলেন তিনি। জঙ্গিরা দোকানের দখল নিতেই সতর্ক হয়ে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত কয়েক জন পণবন্দিকে একটি রেফ্রিজারেটরে লুকিয়ে রাখেন লাসানা। আলো নিভিয়ে ফ্রিজের সুইচ বন্ধ করে দেন। তত ক্ষণে বন্দুকধারী জঙ্গি আমেদি কুলিবেলির নজরে পড়ে গিয়েছেন লাসানা। তবে সঙ্গী পণবন্দিদের শান্ত থাকতে বলে নিজেও ওই ফ্রিজে ঢুকে পড়েন। ফরাসি একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে লাসানা বলেন, “আমিই প্রথম ফ্রিজ থেকে বেরোই। বন্দুকধারী জঙ্গি সকলকে উপরে উঠে আসতে বলে। আমিও উঠে যাই। ওরা বুঝতে পারেনি, ফ্রিজের মধ্যে তখনও কয়েক জন লুকিয়ে আছে।”
তার পরের ঘটনা অজানা নয়। জঙ্গিদের গুলিতে পণবন্দিদের মৃত্যু এবং পরে পরেই পুলিশ-জঙ্গি সংঘর্ষ। আমেদির মৃত্যুর পরে চম্পট দেয় আর এক জঙ্গি। পুলিশ সুপারমার্কেটটির দখল নিতে শুরু করলে ফ্রিজে আটকে থাকা ওই পণবন্দিদের কথা পুলিশকে জানান লাসানা। সন্ত্রস্ত শহরে মানবিকতার নজির গড়ে এখন ফরাসি সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এসেছেন লাসানা। জাতীয় হিরোর তকমাও পেয়েছেন। ঢালাও প্রশংসিত হচ্ছেন ফেসবুক-টুইটারের মতো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে। তাঁর সাহসিকতায় গর্বিত আর এক মুসলিম ধর্মাবলম্বীর টুইট, “তোমার জন্য গর্ব হচ্ছে। ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করব না তোমায়।”