বড়দিন কী, জানে না সান্তা গড়ার কারিগরেরা

লাল মেঝে। লাল সিলিং। এমনকী জানলার পর্দাটাও লাল। এ বাড়ির মালিক কিন্তু কোনও কমরেড নন। বাড়িটি সান্তা ক্লজের। আর উত্তর মেরুতেও নয়, বাড়িটি চিন দেশের ছোট্ট গ্রাম ইউতে। সাংহাই থেকে প্রায় ৩০০ কিমি ভিতরে এই গ্রাম। যেখানে তৈরি হয় বিশ্বের বড়দিনের প্রায় ৬০ শতাংশ সরঞ্জাম। সান্তা ক্লজ, সান্তার লাল মোজা, পায়ের জুতো, ‘ক্রিসমাস-ট্রি’ বা এলিডি আলো হরেক জিনিস পাওয়া যাবে এখানে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সাংহাই শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৩
Share:

লাল মেঝে। লাল সিলিং। এমনকী জানলার পর্দাটাও লাল। এ বাড়ির মালিক কিন্তু কোনও কমরেড নন। বাড়িটি সান্তা ক্লজের। আর উত্তর মেরুতেও নয়, বাড়িটি চিন দেশের ছোট্ট গ্রাম ইউতে।

Advertisement

সাংহাই থেকে প্রায় ৩০০ কিমি ভিতরে এই গ্রাম। যেখানে তৈরি হয় বিশ্বের বড়দিনের প্রায় ৬০ শতাংশ সরঞ্জাম। সান্তা ক্লজ, সান্তার লাল মোজা, পায়ের জুতো, ‘ক্রিসমাস-ট্রি’ বা এলিডি আলো হরেক জিনিস পাওয়া যাবে এখানে। বড়দিন বলতেই ভেসে ওঠে উত্তর মেরুর পাইন ঘেরা কোনও বরফ ঢাকা পাহাড় থেকে নেমে আসছে সান্তা। হরিণ-টানা রথে চড়ে। আর সেই রথ চালাচ্ছে এক এস্কিমো শিশু। তবে, ইউতে না আছে বরফ। না আছে পাইন অরণ্য। রূপকথা নয়, ঘোর বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে দিনযাপনের জন্যই এখানে চলছে বড়দিনের প্রস্তুতি। এই ছোট্ট গ্রামে রয়েছে প্রায় ৬০০ কারখানা। সেখানে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। কারণ আর কটা দিন পেরোলেই যে বড়দিন।

‘বড়দিন কী?’। এই প্রশ্নটা সেই প্রস্তুতকারকদের করা হলে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায় না।

Advertisement

“বড়দিন? বড়দিন হয়তো বিদেশিদের নতুন বছর।” ১৯ বছরের কিশোর ওয়েই এমন উত্তরই দেয়। পেটের টানে বাবার হাত ধরে নিজেদের গ্রাম ছেড়ে এখন ইউতেই থাকছে ওয়েই। দিনের প্রায় ১২ ঘণ্টাই কেটে যাচ্ছে কারখানার চার দেওয়ালে।

প্লাস্টিকের পুতুলগুলোকে প্রথমে ডোবানো হচ্ছে আঠার মধ্যে। তার পর একটি মেশিনে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের। সেখান থেকেই লাল পাউডারে রঙিন হয়ে বেরিয়ে আসছে সান্তার দল। আর তার ফলেই সারা ঘর হয়ে উঠছে রঙিন। দিনে এখন প্রায় পাঁচ হাজার রূপকথার নায়কদের তৈরি করছে ওয়েইরা। কিন্তু রূপকথার কারিগরদের জীবনেই নেমে আসছে ঘোর অন্ধকার। সেই লাল পাউডার শ্বাসনালীতে ঢুকে পড়ায় হতে পারে ব্রঙ্কাইটিসের মতো কঠিন রোগও। তবে, নিরুপায় ওয়েই। বা তার বাবা। কোনও মতে ছেলের বিয়ের টাকা জোগাড় করেই নিজেদের গ্রামে যাবেন ওয়েইয়ের বাবা। আর, এ দিক মুখো হবেন না কোনও দিন।

কারখানা থেকে সেই সব সরঞ্জাম তার পর পাড়ি দিচ্ছে ইউ-র বাজারে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মতে যা কি না ছোট বস্তুর জন্য বিশ্বের সব চেয়ে বড় পাইকারি বাজার। আর সেখান থেকেই সে সব সান্তারা রওনা দিচ্ছে দেশ-বিদেশে। শিশুদের স্বপ্নের কারিগর হয়ে। কিন্তু আসল কারিগরদের খবর কে রাখে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন