মৃতের মাস্কারা চোখে, তরুণীর ছবি ঘিরে বিতকর‌্

গত ন’দিন ধরে এমন ছবি প্রায়ই দেখা গিয়েছে। কিন্তু সে সব কিছুকে ম্লান করে দিল ইউক্রেনীয় তরুণীর ‘নিজস্বী’। খালি চোখে অবশ্য তার বিশেষত্ব বোঝার উপায় নেই। তবে ছবির নীচের লাইন থেকে স্পষ্ট, তরুণীর চোখে রয়েছে কোনও বিখ্যাত ডাচ প্রসাধন ব্র্যান্ডের ‘মাস্কারা’। সৌজন্যে এমএইচ-১৭ দুর্ঘটনা। মাস্কারার আসল মালকিন মারা গিয়েছিলেন তাতেই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ব্রাসেলস শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৩
Share:

একাতেরিনা পার্কোমেঙ্খো

গত ন’দিন ধরে এমন ছবি প্রায়ই দেখা গিয়েছে। কিন্তু সে সব কিছুকে ম্লান করে দিল ইউক্রেনীয় তরুণীর ‘নিজস্বী’। খালি চোখে অবশ্য তার বিশেষত্ব বোঝার উপায় নেই। তবে ছবির নীচের লাইন থেকে স্পষ্ট, তরুণীর চোখে রয়েছে কোনও বিখ্যাত ডাচ প্রসাধন ব্র্যান্ডের ‘মাস্কারা’। সৌজন্যে এমএইচ-১৭ দুর্ঘটনা। মাস্কারার আসল মালকিন মারা গিয়েছিলেন তাতেই। পরে তাঁর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মালপত্র থেকে এটি সংগ্রহ করে তরুণীকে উপহার দিয়েছেন এক ‘বন্ধু’। শুক্রবার সে ছবি ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। আর তার পরেই নতুন করে শুরু হয় বিতর্ক।

Advertisement

এমএইচ-১৭ কাণ্ডে নিহতদের জিনিসপত্র যে রুশপন্থী জঙ্গিরা লুঠ করছে, সে কথা প্রথম দিন থেকেই বলে আসছে ইউক্রেন। তবে তাই বলে নিহতের প্রসাধনী চুরি করে বন্ধুকে উপহার এবং তার পর তা নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সগর্ব ঘোষণা? এমনটা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। কিন্তু এমনটাই করেন রুশপন্থী জঙ্গিদের সমর্থক একাতেরিনা পার্কোমেঙ্খো। প্রথমে ছবির নীচে ক্যাপশন দেন, “আমস্টারডামের মাস্কারা বা বলা যায় খেত থেকে খুঁজে পাওয়া মাস্কারা।” পরে অনুরাগীরা বিষয়টি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করলে তোরেজের ওই তরুণী লেখেন, “আমার এক পরিচিত লুঠেরা আমায় দিয়েছেন।” গোটা বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে যায় তখনই। বিতর্কের জেরে পরে অ্যাকাউন্টটিই মুছে দেওয়া হয়েছিল। তত ক্ষণে অবশ্য তা দেখে ফেলেছে গোটা বিশ্ব।

ক্ষুব্ধ হলেও এতে বিস্মিত হচ্ছেন না কেউ। কারণ এমনটা গত ন’দিন ধরেই হয়ে চলেছে। বরং তার থেকেও বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা দেহাংশগুলি। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট এ দিনও জানিয়েছেন, দ্রুত সেগুলি উদ্ধার না হলে তাতে বিকৃতি হতে পারে। তা রুখতে অবিলম্বে ঘটনাস্থলে তদন্তকারীদের অবাধ যাতায়াতের দাবি তুলেছেন তিনি। সে জন্য নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে আলোচনাও করা হবে। ১৯০ জন অস্ট্রেলীয় ফেডেরাল পুলিশ-সহ সেনা বাহিনীর ক’জন সদস্যকেও নেদারল্যান্ডসে পাঠাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। প্রয়োজনে তাঁদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হতে পারে।

Advertisement

এর সঙ্গে ইউরোপীয় রাজনীতির যে কোনও সম্পর্ক নেই সে কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন টোনি। তাঁর বক্তব্য, “বাকিরা চাইলে পূর্ব ইউরোপের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়তেই পারেন। আমার উদ্দেশ্য একটাই নিহতদের দেহ খুঁজে বাড়ি ফিরিয়ে আনা।” বিষয়টি নিয়ে রাশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে যে চাপা উত্তেজনা শুরু হয়েছে, এ মন্তব্য করে তা থেকে দূরত্ব বাড়াতে চাইলেন টোনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবশ্য দূরত্ব বাড়াতে চাইছে না, সুরও নরম করতে চাইছে না। সম্প্রতি রাশিয়ার বেশ কিছু উচ্চপদস্থ আমলার ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর কথা ভেবেছে ইইউ। তাঁদের সম্পত্তির উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। পাশাপাশি রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যবসা ক্ষেত্রের উপরও নিষেধাজ্ঞা

চাপানো হতে পারে বলে শোনা গিয়েছে। ইইউ-র যুক্তি, রুশপন্থী জঙ্গিদের মদত দেওয়ার স্পষ্ট প্রমাণ আছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তা বন্ধ করতেই আর্থিক নিষেধাজ্ঞার এই পরিকল্পনা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার নেওয়া হবে।

বিস্ফোরণ ডোনেৎস্কে

এখনও শেষ হয়নি এমএইচ১৭-র তদন্ত। তারই মধ্যে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠল পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেৎস্ক। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত তিনটের সময় বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় রুশপন্থী জঙ্গিরা। সঙ্গে শোনা যায় গুলির শব্দও। প্রাণহানির খবর না থাকলেও আহত হয়েছেন এক মহিলা। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “রাত তিনটে নাগাদ গুলির শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। তার পর বিস্ফোরণের শব্দ। বাড়ির দেওয়ালে ফাটলও দেখা গিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন