৯টি মডেল নিয়ে আবার হাজির হুন্ডাই স্যান্ট্রো।
১৯৯৮ সালে প্রথম যখন হুন্ডাই বাজারে তাদের নতুন হ্যাচব্যাক মডেল স্যান্ট্রো আনে, তখন মানুষ মারুতি ৮০০-র মতো গাড়ি চড়ে অভ্যস্ত। সময়ের তুলনায় আধুনিক ডিজাইন এবং ভাল গাড়ি হওয়ার দরুন অল্প সময়েই খুব ভাল সাড়া ফেলে দেয়স্যান্ট্রো। কিন্তু তার পর ধীরে ধীরে সুজুকি, হোন্ডা, মারুতি যত নতুন গাড়ি আনতে থাকে,স্যান্ট্রো পিছিয়ে যায় দৌড় থেকে। কোম্পানির তরফে তখন আই১০ কে বেশি করে প্রচারেআনা হয়। হারিয়ে যেতে থাকে স্যান্ট্রো।
আত্মপ্রকাশের একেবারে ২০ বছর পর, চলতি বছর আবার এল স্যান্ট্রো। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে তাকে হাজির করেছে হুন্ডাই। ৭ খানা আলাদা মডেল হাজির- ৫টা পেট্রল এবং ২টি সিএনজি মডেল। দাম শুরু হয়েছে ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার থেকে ৫ লক্ষ ৬৫ হাজার পর্যন্ত। ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে হাজির ৭টি বিভিন্ন রঙের স্যান্ট্রো। ফলে আপনার পছন্দ অনুযায়ী রং পেতে আর অসুবিধে হবে না!
পেট্রল গাড়িতে রয়েছে ১.১ লিটারের ইঞ্জিন, যার থেকে সর্বোচ্চ ৬৯ বিএইচপি ক্ষমতা এবং ৯৯ নিউটন/মিটার টর্ক পাওয়া সম্ভব। পেট্রল গাড়িতে রয়েছে ৫ টি গিয়ার, ম্যানুয়াল বা অটোম্যাটিক দুটোতেই। কোম্পানির তরফে জানানো হয়েছে, নতুন এই ইঞ্জিন যথেষ্ট তেল সাশ্রয়ী। এক লিটার তেলে ২০কিলোমিটার যাত্রা করা সম্ভব। সিএনজি গাড়ির ক্ষমতা পেট্রলের থেকে একটু কম। সর্বোচ্চ ৫৯ বিএইচপি ক্ষমতা এবং ৮৪ নিউটন/মিটার টর্ক পাওয়া সম্ভব। ৮ লিটারের সিএনজি ট্যাঙ্ক থাকবে গাড়ির পিছনে, দু’টি ইসিইউ কন্ট্রোলের সাহায্যে সহজেই পেট্রল এবং সিএনজি বেছে নেওয়া সম্ভব।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
আরও পড়ুন: ১২৫ সিসির ইঞ্জিন নিয়ে বাজারে হাজির হিরোর নয়া স্কুটার ডেস্টিনি
বাইরে থেকে স্যান্ট্রো খুব চাকচিক্যপূর্ণ কিছু নয়। অনেক গাড়ির মতো এতে কোনও অ্যালয় হুইল নেই, কোনও বডি স্টিকার বা এলইডি হেডলাইটও নেই।তবে ডিজাইনের দিক থেকে স্যান্ট্রো সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেশ স্মার্ট। সাধারণত এই ধরনের গাড়ির পিছনের সিটের লেগ স্পেস কম থাকে। ফলে লম্বা কেউ বসলে তার পা আটকে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু স্যান্ট্রো এই দামের গাড়ির মধ্যে সব থেকে বেশি পিছনের সিটে লেগস্পেস নিয়ে হাজির। আগের তুলনায় লম্বা, চওড়া, উচ্চতা, সব দিকেই বড়, ফলে লম্বা হন কী বেঁটে, গাড়ি থেকে ঢুকতে বেরতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।গাড়ির ভিতরে একটা ৭ ইঞ্চির টাচস্ক্রিন রয়েছে। তাতে ব্লুটুথ দিয়ে সহজেই আপনার ফোনে সংযোগ করা সম্ভব। অ্যান্ড্রয়েড হোক কী আইফোন, দুটোতেই সহজে সংযোগ করতে পারবেন। রয়েছে পিছনে এসির ভেন্ট, যেটা এই দামের গাড়ির মধ্যে আর কেউ দিতে পারেনি। সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বেস মডেলে একটাই এয়ারব্যাগ ড্রাইভারের জন্যে রাখা হলেও ‘এশিয়া’ মডেলে আরও একটি এয়ারব্যাগ হাজির, দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচাতে।
স্যান্ট্রো ভারতীয়দের কতটা প্রিয়, তা একটা সাধারণ হিসেব থেকেই পরিষ্কার। বুকিং শুরু হওয়ার ১৩ দিনের মাথায় প্রায় ২৪ হাজার বুকিং হয়ে গিয়েছে! এতদিন কেবল অনলাইন বুকিং ছিল।এ বার থেকে ডিলারদের থেকেও বুকিং করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। প্রথম ৫০ হাজার স্যান্ট্রো বুকিং হবে বিশেষ প্রারম্ভিক মূল্যে। ফলে তার জন্য এখন চাহিদা থাকবে তুঙ্গে। মাসে ১০ হাজার করে গাড়ি প্রস্তুত করতে পারবে বলে আশা করছে হুন্ডাই। ফলে যারা এখন অর্ডার করছেন,হাতে পেতে অনেকের সামনের বছর হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। মারুতি সুজুকি ওয়াগন আর, টাটা টিয়াগো, সুজুকি সেলেরিওর মতো গাড়ির সঙ্গে সরাসরি টক্করে গেলেও স্যান্ট্রো নিজের পরিচয়ে বাকিদের থেকে কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy