পুজোয় আমার কলকাতায় থাকতেই ভাল লাগে। শ্যুটিং না থাকলে অবশ্যই কলকাতায় থাকি! এবার আমার বাড়ির লোকজন পুজোয় পুরী যাচ্ছে।
আমি শুধু ভাবি, কলকাতা তো আমারই শহর। তা হলে পুজোর সময় কেনই বা বাইরে বেড়াতে যাব? সারা বছরই তো নানা কাজে বাইরে বাইরে থাকি!
বারোয়ারি দুর্গাপুজোর পরিক্রমা আর পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে বেশ কিছু ভাল ঠাকুর বা প্যান্ডেল দেখা হয়ে যায় আমার। পাড়ার পুজো, বন্ধুবান্ধবের বাড়ির পুজোতেও যাই। আমার বালিগঞ্জের বাড়ির 'কমিউনিটি'র উদ্যোগে খুব বড় করে দুগ্গা পুজো হয়। কলকাতায় থাকলে ওই পুজোয় আমি অবশ্য অবশ্যই অংশ নিই। ওঁরাও চান, অন্ত অষ্টমী, দশমীর দিন যেন আমি থাকি।
অষ্টমীর দিন সাজসরঞ্জাম নিয়ে পুজোর জোগাড়যন্ত্রে হাত লাগাই। অঞ্জলির ফুল গুছিয়ে রাখা, ১০৮টা পদ্ম ফোটানো তো আছেই। সন্ধি পুজোর সময় ১০৮ প্রদীপ জ্বালানো, এ সব কাজের দায়িত্ব আমি নিলে বড়রা খুব খুশি হন। দশমীর দিন ঠাকুর বরণের পরে সিদুঁর খেলাতেও পুরো দমে থাকি। সব শেষে ধুনুচি নাচ!
এ বছরের পুজোর ঠিক আগের সময়টা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। চিত্র পরিচালক প্রয়াত মৃণাল সেনের 'খারিজ' আমার খুব প্রিয় ছবি। সেই ছবির পরবর্তী অধ্যায় তৈরি করেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ছবির নাম 'পালান'। মুক্তি পাচ্ছে ২২ সেপ্টেম্বর। 'পালান'-এ আমি অভিনয় করেছি। এই প্রথম আমি আর কৌশিকদা এক সঙ্গে কাজ করলাম। খুব আনন্দ করে। মৃণাল সেনের শতবর্ষে কাজটা আমরা যে করতে পেরেছি, তা আমাদের সৌভাগ্য।
এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় একটা জাতীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মে আগাথা ক্রিস্টি'র গল্প অবলম্বনে বিশাল ভরদ্বাজের প্রথম ওয়েব সিরিজ ' চার্লি চোপড়া অ্যান্ড দ্য মিস্ট্রি অফ সোলাঙ্ ভ্যালি'-র স্ট্রিমিং হবে। এই সিরিজে আমি অভিনয় করেছি।
সিনেমার কথা বলছি বটে। আমি নিজে কিন্তু পুজোর চার দিন কোনও সিনেমা দেখি না। বাকি ৩৬১ দিন অবশ্য ওয়েব সিরিজ বা সিনেমা দেখতে দেখতে ঘুমোই।
পুজোর সময় সবাই প্রেমটেম করে শুনেছি। কিন্তু আমার কপালে সে সব হয়নি। কী করব! সুযোগই ছিল না! পুজোয় আমি যখন বাড়ি থেকে বেরোতাম তখন কাকা, মামা-মামী, মা-বাবা আমাকে ব্যারিকেড করে এগোতেন।
এখন পুজোর সময় দেশের বাইরে থেকেও বন্ধুবান্ধব আসে। তাদের সঙ্গে পুজো কাটানোর একটা প্ল্যানিং করি। আমার কাছে পুজো হল প্যান্ডেল হপিং, খাওয়া দাওয়া, গান-বাজনা, দেদার আড্ডা আর তার ফাঁকে মাঝেমাঝে ঘুমিয়ে নেওয়া।
এক বার পুজোয় আমি কাজের সূত্রে মুম্বইতে একা ছিলাম। ফাঁকা সময়টায় বেরিয়ে লোখন্ডওয়ালা আর বান্দ্রার পুজো একাই দেখে এসেছিলাম। সঙ্গে ছিলেন গাড়ির ড্রাইভার দাদা। যে আমি পুজোর সময় শাড়ি ছাড়া ভাবতে পারি না, সেই আমি ডেনিমের শার্ট নাকি টি-শার্ট পরে পুজো মণ্ডপে চলে গিয়েছিলাম!
সত্যি কথা বলতে কী, কিছু আনন্দের মুহূর্ত স্মৃতির ঝুলিতে সংগ্রহ করে নেওয়াটাই আমার পুজো।
অনুলিখন: সংযুক্তা বসু
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy