বয়স প্রায় সাড়ে তিন মাস। জুন মাসেই অভিনেতা নীল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, লক্ষ্মী এসেছে তাঁর ঘরে। কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন স্ত্রী পৃথা চট্টোপাধ্যায়। এ বার তাকে নিয়েই প্রথম পুজো। কাজেই তারকা দম্পতির কাছে এই বছরের উৎসবের আমেজটা যে একটু বেশিই বিশেষ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এখন তো পরিবারের মধ্যমণি কন্যা-ই। আনন্দবাজার ডট কমকে অভিনেতা বলেন, “আসলেই তাই। ওকে ঘিরেই এখন সব কিছু। যাবতীয় যা পরিকল্পনা, সব ওর ইচ্ছেমতো আর কথা ভেবেই হচ্ছে।”
যদিও এই মুহুর্তে ঝাড়গ্রামে রয়েছেন স্ত্রী-কন্যা। নীলের ঠিকানা আপাতত কলকাতা। গোটা পুজোটা কি এখানেই কাটাবেন? তিনি বলেন, “আমি প্রতি বছর পাহাড়ে ঘুরতে চলে যাই এই পুজোর সময়ে। মেয়ে এখন খুবই ছোট। সেই কারণে আমিও ঝাড়গ্রামেই কাটাব পুজোটা।” অভিনেতা জানান, ভিড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখা তাঁর ছোট থেকেই না-পসন্দ। তাই স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে নীলের পুজোর সময়টা কাটবে শহর থেকে অনেক দূরে ঝাড়গ্রামের নিরিবিলিতে।
এই মুহুর্তে স্টার জলসার ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবাণী’ ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে নীলকে। পুজোর আগে বেশ ব্যস্ততার মধ্যেই কাটছে এখন। অভিনেতা বলেন, “এই সময়টা আমাদের প্রতি বারই খুব চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। পুজোর কয়েকটা দিন যেহেতু ছুটি থাকে, তাই আগে ভাগে বাড়তি শুটিং শেষ করে রাখতে হয়। তবে ষষ্ঠী থেকে একটু স্বস্তি।”
পুজোয় কটা জামা হল খুদের? মজা করে অভিনেতা বলেন, “ওর তো জামা হতেই থাকছে। আমি ওর জন্য এখনও পর্যন্ত দু’টো জামা কিনেছি। আরও হবে।” কেনাকাটায় যে খুব পারদর্শী নন, সে কথা অকপটেই স্বীকার করে নিতে খুব একটা দ্বিধাবোধ করেননি নীল। তিনি বলেন, “পৃথা এখানে নেই। সেই অর্থে কেনাকাটাও তাই হয়ে উঠছে না। আমার এখন ‘একটা কিছু হলেই হল’ পরিস্থিতি।”
জীবন তা হলে পাল্টেছে বলা চলে। পর্দায় তো বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়, তবে এখন বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। কতটা বদল এল? অভিনেতার কথায়, “বাবাদের দায়িত্বটা আসলে কী, সেটা এখন বুঝতে পারছি। ছোটবেলায় বাবার শাসনটা বুঝিনি। মনে হতো, পৃথিবীর সবাই আমাকে ভালবাসেন, একমাত্র ব্যতিক্রমী বাবা। এখন বুঝি কতটা ভুল ছিলাম।” তিনি আরও যোগ করেন, “বিয়ের আগের জীবনটা অন্য রকম ছিল। বিয়ের পর কিছুটা পাল্টাল। আর এখন তো সম্পূর্ণ রদবদল।”
বরাবরই কন্যা সন্তান চেয়েছিলেন নীল। আর লক্ষ্মী-ই এসেছে সংসারে। তিনি বলেন, “আমি পৃথাকে বলেই দিয়েছি যে মেয়েকে সব আদর-প্রশ্রয় আমি দেব, শাসনটা তুমি করো।” পুজোর সময়ে নিজের ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে? তিনি বলেন, “সোনালি সময় যাকে বলে! আমি স্কুল জীবনে খুব আনন্দ করেছি। এত স্মৃতি বোধ হয় আমার কলেজ জীবনে নেই। শাসনের মধ্যে থেকেও মজা করার অনুভূতিটা ভিন্ন।”
যদিও সেই সময় ফিরে না এলেও, আগামী সময়টা শুভ কাটুক এটাই চান অভিনেতা। দেবীর কাছে তাঁর একটাই প্রার্থনা, “আমার পরিবার ভাল থাক। সন্তান যেন সুস্থ থাকে। আর আমি যেন আরও ভাল কাজ করে যেতে পারি। ব্যস, এই টুকুই…”
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।