Advertisement

Associate Partner

Style Partner

Associate Partner

Weddings Partner

Food Partner

Celebrity Durga Puja Celebration

‘পুজোতে অজস্র স্মৃতি,বেশির ভাগই জানানো ঠিক হবে না’

মহালয়া শুনতে বাড়ির সবাই ভোরবেলা উঠে রেডিয়ো চালিয়ে দেয়। টিভি দেখে।

ছবি: ঝুলন গোস্বামীর ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে সংগৃহীত।

ছবি: ঝুলন গোস্বামীর ইনস্টাগ্রাম পেজ থেকে সংগৃহীত।

ঝুলন গোস্বামী
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৪:৩৪
Share: Save:

আদ্যোপান্ত ভেতো বাঙালি আমি। পুজো আমার কাছে খুব গুরুত্বের। যেখানেই থাকি, পুজোর একটা গন্ধ পেতে থাকি। মনটা কেমন হয়ে যায়। মা আসছেন, টের পাই হৃদয়ে।

মহালয়া শুনলেই যেমন। বাড়িতে সবাই ভোরবেলা উঠে রেডিয়ো চালিয়ে দেয়। টিভি দেখে। আমি যে সবসময় তা শুনি, তা নয়। ঘুমোতেই হয়তো ভাল লাগে। কিন্তু, মহালয়ার নস্ট্যালজিক ফিলিংটা বড্ড টানে। বাঙালির কাছে এর আলাদা মূল্য। মহালয়ার আগমনী সুর কানে এলেই মনে হয়, পুজো শুরু হয়ে গেল।

তবে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখে বেড়ানোর দলে আমি নেই। প্যান্ডেল হপিং কোনও দিনই খুব ভাল লাগে না। প্রচণ্ড ভিড় নিতে পারি না। পুজোর সময় আড্ডা দিতেই ভালবাসি। কয়েকটা অনুরোধ থাকে উদ্বোধনের। সেগুলো চেষ্টা করি তৃতীয় বা চতুর্থীর মধ্যে সেরে ফেলতে। তার পর চলে যাই চাকদায়। ওখানে পুজো হয় বাড়িতেই। নানা কাজ থাকে। যখন যেটা দরকার পড়ে, তখন সেটা করি। পাশেই পাড়ার পুজো। এই দুটো পুজোতেই মিলিয়ে মিশিয়ে কেটে যায় সময়।

আরও পড়ুন: ‘রানি রাসমণি’ সেজে পুজোয় শো করব, নতুন জামা কখন পরব বলুন?​

আরও পড়ুন: পুজোর সময় দেখতে পাবেন প্যান্ডেলে ফুচকা খাচ্ছি: কৌশানী​

গত দু’বছর বাড়ির পুজোয় অবশ্য খুব একটা অংশ নিতে পারিনি। গিয়েছি ঠিকই, কিন্তু বেরিয়েও আসতে হয়েছে। আগে অনেক বেশি একাত্ম থাকতাম। বাড়িতে বড়রা থাকতেন। তাই পাড়ার পুজোয় বেশি সময় দিতাম। ঠাকুর দেখার থেকে আড্ডাতেই বেশি আগ্রহ থাকত। এখনও তাই হয়। অনেক পুরনো বন্ধু আসে। আবার অনেক ক্রিকেটার বন্ধুও চলে আসে। যারা কলকাতা থেকে একটু দূরে পুজোর আমেজ পেতে চায়, তারা হয়তো চলে এল বাড়িতে। আড্ডা দিল। এটাই হয়ে আসছে। এবারও তাই হবে।

পুজোর সময় বাইরের খাওয়ার আনিয়ে নিই বাড়িতে। এমনিতে অষ্টমীতে চলে পুরো নিরামিষ। সেদিন বাড়িতেই খাই। তাছাড়া বাকি দিনগুলোয় কোনও দিন চাইনিজ, কোনওদিন মোগলাই। বিভিন্ন দোকানে আগে থেকে বলে রাখি, কোনদিন কী পাঠাতে হবে। ফুচকা থেকে শুরু করে কিছু বাদ দিই না। আমি এমনিতেও সেভাবে ডায়েট করি না। বাইরে যখন থাকি তখন বাইরের খাবার খেয়ে অরুচি ধরে যায়। বাড়ি থাকলে চেষ্টা থাকে ঘরের রান্না শান্তিতে, তৃপ্তি করে খেতে। সেটাতেই আনন্দ পাই।

পুজোর সময় অবশ্য সব কিছুতেই ছাড়। মা দুর্গার নাম করে ডিসকাউন্ট পাওয়া আর কী। বাঙালিদের কাছে এটা বড় প্লাস পয়েন্ট। আমার যেমন লুচি-মাংস খেতে ভাল লাগে। বাড়িতে, পাড়াতে পুজোর সময় ভোগ রান্না হয়। সেটাও চলে। বাদ দিই না।

গত দশ বছরে পুজোয় অধিকাংশ সময়েই বাইরে থেকেছি। শুধু শেষ দুই বছর কলকাতায় থেকেছি। এ বারও যদি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে খেলতাম, তা হলে পুজোর সময় বাইরে থাকতে হত। না হলে, গত দশ বছরে পুজোর সময় কটা দিন যে বাড়িতে থেকেছি, গুণে বলা মুশকিল। বাইরে যখন থাকতাম, তখন পুজো মিস করতাম খুব। মন খারাপ হয়ে যেত।

মুম্বই আর বেঙ্গালুরুতে অধিকাংশ সময় আমি পুজোয় থেকেছি। ওখানে যে পুজো হত না, তা নয়। আমি গিয়েওছি, চুপচাপ অঞ্জলিও দিয়েছি বন্ধুদের সঙ্গে। কিন্তু প্রাণের সাড়া পাইনি। বড্ড খাপছাড়া লেগেছে। কলকাতার পুজোর যে আবেগ, ভালবাসা, আমেজ, তার তুলনা হয় না।

পুজোতে অজস্র স্মৃতি রয়েছে আমার। যার বেশির ভাগই জানানো ঠিক হবে না। অনেক দুষ্টুমিও তো করেছি! ছোটবেলায় অবশ্য পুজো মানেই ছিল নতুন জামা পরা। একবার অষ্টমীতে ঠাকুর দেখতে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম। নতুন জামা নোংরা হয়ে গিয়েছিল। সে বারের পুজো ওই দুঃখ নিয়েই কেটেছিল। তখন পিসি, মাসি, মামার বাড়ি থেকে পেতাম নতুন জামা। সারা বছর অপেক্ষা করতাম ওই পাঁচ-সাতখানা জামার জন্য।

উত্তর ভারতে দেওয়ালি অনেক বড় উৎসব। তাই ওই সময় সাধারণত খেলা পড়ত না। আমি তাই দেওয়ালির সময় বাড়িতে বেশিবার থেকেছি। বরং অষ্টমীর দিন অনেক ম্যাচ খেলতে হয়েছে। এ বারও যদি টি-টোয়েন্টিতে খেলতাম, বাইরে থাকতে হত। পুজো মিস হলে কষ্ট হত খুব। আমি প্রতি বারই মা দুর্গার কাছে প্রার্থনা করি, সারা বছর যেন নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে, ভাল ভাবে কাটাতে পারি। যে কাজটা করছি, সেটা যেন মন দিয়ে করতে পারি।

বিজয়ার পরে নাড়ু খেতে যাওয়ার আকর্ষণ আবার খুব থাকত। ঠাকুর ভাসানের পর বড়দের প্রণাম করতাম। এখনও দাদাদের প্রণাম করি বিজয়ার পর। ভাইবোনেরাও পুজোর পর আমাকে প্রণাম করে। এই রেওয়াজ এখনও রয়েছে। তারপর চলত মিষ্টিমুখ। পাড়ায় কোন বাড়িতে কে কেমন নাড়ু তৈরি করে, তার খোঁজ রাখতাম। চলে যেতাম। তার মজাই ছিল আলাদা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE