Advertisement
Bikram Chatterjee

Bikram Chatterjee: দার্জিলিঙে কাজে এসেছি, এ বার অষ্টমীর অঞ্জলি নেই, ভোগও খাওয়া হবে না

আমার জন্য নতুন জামা কেনার দায়িত্ব হল মায়ের। প্রতি বছর মায়ের দেওয়া পোশাক পরেই অঞ্জলি দিতাম।

আমি একটু অদ্ভুত প্রকৃতির। সবাই যেখানে কাজ ফেলে পুজোর নেশায় নিজের বাড়ির দিকে দৌড়োয়, আমি কাজের হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকি।

আমি একটু অদ্ভুত প্রকৃতির। সবাই যেখানে কাজ ফেলে পুজোর নেশায় নিজের বাড়ির দিকে দৌড়োয়, আমি কাজের হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকি।

বিক্রম চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২১ ১৮:০৪
Share: Save:

আজ ষষ্ঠী। সমতল ছেড়ে আমি পাহাড়ে। দার্জিলিং, শৈল শহরে থাকব লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত। পুজোর কয়েক দিন কলকাতার বাইরে থাকা আমার বহু বছরের অভ্যাস। এ বারের কারণ যদিও পুরোপুরি কেজো। আপনারা হয়তো সমস্ত বিধি-নিষেধ মেনে আনন্দায়োজনে ব্যস্ত। আমি? ছবির কাজে এখানে এসেছি। পঞ্চমীর দিন পাহাড়ে পা রেখেই কাজে নেমে পড়েছি। এখনও ঘুরে দেখার সময় পাইনি। ঢাকের শব্দও কানে আসেনি।

ভাবছেন, পুজোর সময়ে নিজের শহরের সাজগোজ দেখতে পাচ্ছি না বলে মন খারাপ হচ্ছে? আমার কোনও আক্ষেপ নেই। দুঃখও নেই। বরং ছেলেবেলার পুজোর কথা ভাবলে মন খারাপ হয়। একেবারে ছোটবেলায় সারা ক্ষণ মেলার মাঠে কাটত। তার পর একটু বড় হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখা। নতুন জুতোর ফোস্কা। ইচ্ছা মতো খাওয়া, ঘুরে বেড়ানো। অনেক বছর ধরেই আর আগের মতো স্বাধীন ভাবে ঘোরা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন ঠাকুর দেখা হয় প্রতিযোগিতার বিচারক হয়ে। ফাঁকায় ফাঁকায় মণ্ডপ, প্রতিমা দেখি। গত বছর থেকে তাতেও বাদ সেধেছে করোনাসুর। তাই যে বয়স থেকে অভিনয়কে পেশা হিসাবে বেছেছি, পুজোয় কলকাতা ছেড়েছি। কলকাতার পুজো নিয়ে কোনও পিছুটান নেই। তবে লম্বা ছুটিতে নিজের মতো করে সময় কাটানোর প্রতি মোহ আছে।

Advertisement
অনেক বছর ধরেই পুজোয় আগের মতো স্বাধীন ভাবে ঘোরা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

অনেক বছর ধরেই পুজোয় আগের মতো স্বাধীন ভাবে ঘোরা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

এ বারের পুজোয় ছুটির কোনও প্রশ্ন নেই। টানা কাজ। আধ বেলার জন্যেও ছুটি পাব না। তাই পুজোয় কী খেলাম, কী খেলাম না— ভাল-মন্দ কিছু জুটল কি না, সেটুকুও ভাবার সময় নেই। আমি একটু অদ্ভুত প্রকৃতির। সবাই কাজ ফেলে পুজোর নেশায় নিজের বাড়ির দিকে দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড়োয়। আমি কাজের হাতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকি। পুজোর জন্য আমার কোনও তাড়া নেই। যে দিন কাজ থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি পাব, ইচ্ছা আছে পাহাড়ি পথে হেঁটে হেঁটে খুঁজব দুগ্গা মাকে। কান পাতব ঢাকের শব্দ শোনার জন্য। এ বার তাই অষ্টমীর অঞ্জলি নেই। ভোগও খাওয়া হবে না।

বহু বছর হয়ে গিয়েছে, নিজের জন্য পুজোয় কেনাকাটা করা ছেড়ে দিয়েছি। তবে মা, বাবা, বোনকে উপহার দিতে ভুলি না। আমার নতুন জামা কেনার দায়িত্ব আমার মায়ের। প্রতি বছর মায়ের দেওয়া পোশাক পরে অঞ্জলি দিতাম। এ বছরেও মা আমার জন্য শার্ট আর টি-শার্ট কিনে এনেছিলেন। তাড়াহুড়োয় নতুন জামা দু’টি আনতেই ভুলে গিয়েছি।

বহু বছর হয়ে গিয়েছে, নিজের জন্য পুজোয় কেনাকাটা করা ছেড়ে দিয়েছি। তবে মা, বাবা, বোনকে উপহার দিতে ভুলি না।

বহু বছর হয়ে গিয়েছে, নিজের জন্য পুজোয় কেনাকাটা করা ছেড়ে দিয়েছি। তবে মা, বাবা, বোনকে উপহার দিতে ভুলি না।

যে বছর কলকাতায় থাকি, সে বছর নিয়ম করে সুদীপা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাই। ওখানে অঞ্জলি দিই। ভোগ খাই। এ বছর দিদির পুজোতেও যাওয়া হবে না। সুদীপাদিকে বলে এসেছি, ‘‘এ বছর মা-কে বোলো, আমি আসতে পারলাম না। পরের বছর নিশ্চয়ই আসব। কাজ ফুরোলে ফিরে এসে দেখা করব।’’

আমি ঠিক জানি, দিদি আমার নামে পুজো দেবেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.