দেবলীনা কুমার
দিদা আর ঠাম্মার বাড়ি এক পাড়াতেই। আমার বাড়ি যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শুরু হয় ত্রিধারার পুজো, ওটা আমার বাড়ির পুজোর মতোই। বিয়ের পরে আমার স্বামী গৌরব এই পাড়াতেই এল। ফলে পুজোর সংজ্ঞা খুব একটা বদলায়নি আমার।
এ বারও পাড়াতেই কাটবে। আসলে এ পাড়ার পুজোটাই এত জমজমাট যে, অন্য কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না আর! গৌরবের সঙ্গে এক দিন লাঞ্চ। আর একটু ঠাকুর দেখা, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা- এ সব তো আছেই। সেপ্টেম্বরে দু’সপ্তাহের জন্য আমেরিকায় যাচ্ছি, নাচের অনুষ্ঠান আছে। কালীপুজোর সময়ে একটা সিরিজ, আর নভেম্বরে রাজর্ষিদার ‘মায়া’ ছবির মুক্তি আছে। সব মিলিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত হয়ে আছি!
ছোটবেলা থেকেই আমার বাড়িতে কড়া বিধিনিষেধ। তা বলে কি পুজোয় প্রেম হবে না? লুকিয়েচুরিয়ে দেখা করার মজাই তো আলাদা! মণ্ডপে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরছি, তার মধ্যেই আধ ঘণ্টা আমি অন্য কোথাও। কাউকে ভাল লেগেছিল হয়তো, তার সঙ্গে টুক করে দেখা করে এসেছি ওই আধ ঘণ্টায়। এ সব যে কত, বলে শেষ করা যায় না!
হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যাওয়াও দারুণ একটা রোমাঞ্চ! এক বার নবমীতে এক ঘণ্টার জন্য পালিয়ে সিসিডি-তে গিয়েছিলাম। তখন বোধহয় ক্লাস ইলেভেন- টুয়েলভ। ফিরলাম যখন, মা বললেন, ‘‘কোথায় ছিলি এত ক্ষণ? একটু আগে তো ছিলি না এখানে!’’ আমি তো ভয়ে কিছু বলতেই পারিনি। কী দারুণ সব স্মৃতি! এখন মনে পড়লে নিজেই হেসে কুটিপাটি হই!
উত্তমকুমারের পরিবারের বৌ আমি। শ্বশুরবাড়িতে লক্ষ্মীপুজো খুব বড় করে হয়। বৌমা হিসেবে তখন অনেক দায়িত্ব! আর দুর্গা পুজোয় সকলের জন্য কিছু না কিছু কেনাকাটা করি। বিয়ের আগে বন্ধুদের সঙ্গে বেশি সময় মণ্ডপে থাকতে পারতাম না। গৌরবের সঙ্গে প্রেম করার সময়ে বিয়ের ঠিক আগে সেই ছাড়পত্র পেলাম। এখন তো খুব একটা রাত জেগে মণ্ডপে থাকা হয় না। তবু বাড়ি ফিরে মাকে ফোন করে জানানোর অভ্যেসটা একই আছে। গত বছর থেকে মা দুর্গাকে বরণ, সিঁদুর খেলার শুরু। এই অনুভূতিগুলো কিন্তু বেশ অন্য রকম।
এ বছর মা দুর্গার কাছে তিন-তিনটে আশীর্বাদ চাইব। প্রচুর ভাল কাজ যেন করতে পারি, তাতে মানসিক শান্তি থাকে। বাড়ির সবাই যেন সুস্থ থাকেন। আর তিন নম্বর, আমার মনে যেন অনেকটা ভালবাসা থাকে। ওটাই আমার অক্সিজেন।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy