প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

‘পুজোতেই আমার প্রেমিকা সারদাকে খুঁজে পেয়েছিলাম’ বললেন শান্তনু মৈত্র

লে থেকে মিজোরাম, কুর্গ থেকে হর্ষিল, বহু জায়গার পুজো দেখেছেন, কিন্তু কলকাতার পুজো তেমন করে দেখা হয়নি। কেন?

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৩৯

যখন থেকে দিল্লি ছেড়ে মুম্বই চলে এসেছি, আমার পুজোর আকর্ষণটাই শেষ হয়ে গিয়েছি। মুম্বইতে প্রচুর বাঙালি, প্রচুর দুর্গাপুজো। কিন্তু এখানকার পুজো দেখতে কোথাও যাই না। পুজোয় বরং মুম্বই ছেড়ে বাইরে চলে যাই। পুণেতে আমার পরিবার থাকে। সেখানকার পুজোতে অত জাঁকজমক নেই। কিন্তু আন্তরিকতা আছে।

এবার পুজোয় বাইরে কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি না। ওই সময়টায় সিনেমার গানের কাজ থাকবে। আমার মা এখন নয়া দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের শিব মন্দিরের পুজোর হর্তাকর্তা। মা বলেন, '‘যেখানেই পুজোয় যাস না কেন, এক দিনের জন্য আমার সঙ্গে থাকবি। আর সেটা মহাষ্টমী।’ সেই নির্দেশ পালন করে চলেছি। এ বারেও যাব। পুজোর আয়োজন থেকে ভোগ প্রসাদ বিতরণ করা, সবেতেই থাকব। পুজোয় নতুন পোশাক পরে অঞ্জলি দেওয়াটাতে খুব আনন্দ পাই। আমার অনেক অবাঙালি বন্ধু আছে মুম্বইতে। তাদের মহালয়া শুনতে বলি। আমি তো শুনিই।

আমি লে-র মতো দুর্গম জায়গায় দুর্গা পুজো হতে দেখেছি। পুজো হতে দেখেছি মিজোরাম, অরুণাচল প্রদেশেও দেখেছি। দক্ষিণ ভারতের কুর্গে দেখেছি। উত্তরাখণ্ডের প্রত্যন্ত জায়গা হর্ষিল-এ দেখেছি। কোটাতে দেখেছি। দেখেছি গোয়ার কাছে রাজামান্ডিতে। কখনও কখনও ওখানকার পুজো উদ্যোক্তারা 'পরিণীতা'র সুরকারকে চিনতে পারলে বেশ গর্ব বোধ হয়েছে।

দিল্লির পুজোর একটা ব্যাপার ছিল। বাবা বিজ্ঞানের সাধক হিসেবে দিল্লিতে কাজ নিয়েছিলেন। সেই সুবাদে আমরা বেনারস থেকে দিল্লি চলে এসে ইস্ট প্যাটেল নগর বলে একটা কলোনিতে থাকতাম। সেখানকার নব্বই শতাংশ মানুষ ছিলেন বিজ্ঞানী। আমরা ওখানে জমিয়ে থাকতে শুরু করলাম। মা-বাবারা দুর্গাপুজোয় জড়িয়ে পড়লেন।

আকারে ছোট হলেও ওখানকার পুজোটা বেশ জমিয়ে হত। দিনের বেলা মা থেকে শুরু করে পাড়ার মাসি, কাকি, দিদির দল পুজোর আয়োজন করতেন। রাতে তাঁরাই নাটক করতেন। সমবেত গান গাইতেন। পুজোর দু' মাস আগে থেকে রিহার্সাল শুরু হত। ঠিক পুজোর আগে প্যাটেল নগরের পাড়ায় একটা ক্রীড়া দিবস হত। আমি খেলাধুলোয় ভাল ছিলাম। আমার মা নৃত্যশিল্পী ছিলেন। শরীরস্বাস্থ্য খুব ভাল ছিল। মা আমি দু’জনেই প্রতিযোগিতায় নাম দিতাম। দু’জনে পাঁচ-সাতটা মেডেল জিতে নিতাম।

আমি যখন ক্লাস সিক্স, তখন চিত্তরঞ্জন পার্কে চলে যাই। প্রথম প্রথম পুরনো পাড়ার পুজোর জন্য মন খারাপ হত। কিন্তু ধীরে ধীরে চিত্তরঞ্জন পার্কের শিবমন্দিরের দুর্গাপুজোর সঙ্গে মা-বাবা জড়িয়ে পড়েন।

ক্লাস টেন-এ পড়তে আমি কয়েক জন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুললাম গানের দল। নাম দিলাম 'সপ্তক'। দিল্লির বিভিন্ন পাড়ার পুজো কমিটি থেকে আমরা গান গাওয়ার ডাক পেতাম। একটা বাস বুক করে আমরা গানের দল নিয়ে বেরোতাম। গান গেয়ে যে টাকা পেতাম, তাই দিয়ে রাতে হই হই করে রেস্তোরাঁয় খেতে যেতাম।

পুজোর ফাংশনে গান গাইবার প্রস্তুতি চলত সারা বছর। মন দিয়ে তখন শুনছি সলিল চৌধুরীর গান, ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’র গান। আর ভাবতাম, কী করে আইপিটিএ-র মতো গানের সুর দেওয়া যায়। পুজোর রিহার্সাল দিতে গিয়েই বুঝেছিলাম নাচ, গান, অভিনয় যদিও বা শেখা যায়, সুরকার হওয়ার কোনও ট্রেনিং হয় না।

চিত্তরঞ্জন পার্কের পুজোর মধ্যেই আমার প্রেমিকা সারদাকে খুঁজে পেয়েছিলাম। সারদা এসে ছিল আমাদের দলে গান গাইতে। আমাদের বাড়ির কাছাকাছিই থাকত। ওর সঙ্গে প্রেমটা পুজোতেই জমে উঠেছিল।

আমি অনেক জায়গার পুজো দেখেছি দেশভ্রমণ করতে গিয়ে, কিন্তু কলকাতার পুজোই দেখা হয়নি ভাল করে। এক বার মাত্র এক ষষ্ঠীর রাতে ম্যাডক্স স্কোয়্যারের ঠাকুর দেখতে গিয়েছি। পরদিন সপ্তমীতে দিল্লি চলে যেতে হয়। ইচ্ছে আছে, সামনের বছর পুজোর কিছুটা সময় কলকাতায় কাটাব।

এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।

Shantanu Moitra Celeb Puja Durga Puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy