বাপ্পা এলেন মানেই উৎসবের মরশুম শুরু। আর এই গণেশপুজোয় টলিপাড়ার সেটে-সেটে যেন সাজো সাজো রব পড়ে গিয়েছিল। এই পুজোর মেজাজেই ধরা দিলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় তারকা জুটি রণজয় বিষ্ণু ও শ্যামৌপ্তি মুদলি। রণজয়ের কথায়, তাঁদের দু’জনের দিনটা কেটেছে শুটিংয়েই। স্টুডিয়োতে পুজোর আয়োজন ছিল, সেইখানে কাটিয়েছেন বেশ কিছুটা সময়।
প্রশ্ন ছিল, এই ব্যস্ততার মধ্যেও গণেশপুজো কেমন কাটালেন রণজয়? তিনি জানালেন, ধারাবাহিক শেষ হওয়ার পথে বলে তাঁদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। দম ফেলার সময় নেই। এক দৃশ্যের শুটিং শেষ হতে না হতেই পরের দৃশ্যের শুটিং শুরু হয়ে যাচ্ছে। শুটিং ফ্লোরেই চলছে সংলাপ মুখস্থ করার কাজ। তাই উৎসবের আমেজ উপভোগ করার সুযোগ তেমন পাননি।
শ্যামৌপ্তির অভিজ্ঞতাও প্রায় এক। “পুরো দিনটাই শুটিং সেটে। তবে খিচুড়ির আয়োজন হয়েছিল, সেইটুকুই যেন পুজোর স্বাদ,” হেসে বললেন তিনি।
বাংলাতেও যে গণেশপুজোর চল দিনে দিনে বাড়ছে, সে নিয়েও মতামত রাখলেন দু’জন। রণজয় মনে করেন, “মানুষ আনন্দ খোঁজে, তাতে দোষ নেই। তবে নিষ্ঠার জায়গাটা যেন হারিয়ে না যায়। মুম্বইয়ের মতো যদি দান বাক্স থাকত তা হলে চাপ কমত ছোট দোকানিদেরও।” অন্যদিকে শ্যামৌপ্তির সোজা কথা, “যত ক্ষণ না অন্যের ক্ষতি হচ্ছে, আনন্দে কোনও দোষ নেই।”
বাড়িতে আলাদা করে পুজো হয় না ঠিকই, তবে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণেই জমে ওঠে উদ্যাপন। দু’জনেরই বিশ্বাস, বাপ্পার আগমন আসলে দুর্গোৎসবের সূচনা। শ্যামৌপ্তির মুখে, “গণেশপুজো দিয়েই মনে হয় পুজো শুরু হল।”
পাশাপাশি রণজয় বললেন, তাঁর কাছে পুজো মানে কাজের চাপ। সপ্তমী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন প্যান্ডেলের বিচারক হিসেবে থাকেন, আর সেই সূত্রেই ঠাকুর দেখা হয়ে যায়। এর পরে বন্ধুদের সঙ্গে গ্রামের দিকে ঘোরার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
কাজ নিয়েও চলছে আলাদা ব্যস্ততা। ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’ ধারাবাহিকটি শেষ হওয়ার পর কিছু দিনের জন্য বিরতি নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রণজয়ের। জানালেন, মানসিক ক্লান্তি দূর করার জন্য এই বিরতিটা খুবই জরুরি। এই সময়ে তিনি নিজেকে নতুন করে তৈরি করে নিতে চান। অন্যদিকে, শ্যামৌপ্তিও জানালেন, ধারাবাহিক থেকে তিনি এখন সাময়িক বিরতিতে আছেন। কিন্তু অন্য কাজ যেমন নন-ফিকশন, গেম শো বা মিউজিক ভিডিয়োর কাজ চলছে। একটি নতুন ইউটিউব চ্যানেলে তাঁর একটি মিউজিক ভিডিয়ো মহালয়ার পর মুক্তি পাবে বলে জানালেন এদিন।
বাপ্পার কাছে তাঁদের প্রার্থনা একেবারেই সাদামাটা - সকলের মঙ্গল, সৎবুদ্ধির উদয়, আর সুস্থ স্বাভাবিক জীবন। রণজয় যোগ করে বলেন, “সবার সৎবুদ্ধির উদয় হোক। মানুষের মন থেকে যেন হিংসা, লোভ আর ঠকানোর প্রবণতা দূর হয়।” তিনি বিশ্বাস করেন, মানুষের স্বপ্নকে হত্যা করার চেয়ে বড় অপরাধ আর কিছু নেই। শ্যামৌপ্তিও একই ভাবে সুস্থ, স্বাভাবিক আর সামাজিক বোধসম্পন্ন জীবনের জন্য প্রার্থনা জানালেন।
পুজোর মণ্ডপে শ্যামৌপ্তিকে এই সাজে দেখে কেমন লাগছে রণজয়ের? হালকা হেসে তিনি জানালেন, তাঁকে লাল শাড়িতে দেখতে একেবারে ‘সাদা পরীর’ মতো লাগছে। শ্যামৌপ্তিও রণজয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁর মতে, “পাঞ্জাবি পরলে ছেলেদের একটু বেশিই সুদর্শন, অন্যরকম লাগে। শুটিং থেকেও ফিরলেও বেশ সতেজ দেখাচ্ছিল ওঁকে”।
(এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।)