ইতিহাস-প্রসিদ্ধ পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিট। সেকালের এক অভিজাত, বনেদি পাড়া।রবীন্দ্র সরণির অন্তহীন কোলাহল, রাস্তার দু’পাশে ঔপনিবেশিক স্থাপত্য, টানা রিকশার পরিচিত আওয়াজ আর সারিবদ্ধ সেকেলে বাড়িগুলি যেন অতীতের নীরব সাক্ষী। এই পাড়াতেই কয়েক শতাব্দী ধরে বেশ কিছু অভিজাত পরিবারের বসবাস। পাড়ায় আজও তিনটি পারিবারিক পুজো হয়, যার মধ্যে অন্যতম হরকুটিরের পুজোটি।
এই পরিবারের আদি পুরুষ কেশব চক্রবর্তী।তাঁর উত্তরসূরী আনারপুর নিবাসী রাধাকান্ত চট্টোপাধ্যায় পাথুরিয়াঘাটায় এসে একটি কুঁড়েঘরে বসবাস শুরু করেছিলেন।রাধাকান্ত সেকালে নুনের ব্যবসায় বহু অর্থ উপার্জন করেছিলেন। সেই উপার্জনের টাকায় যে বাড়িটি নির্মাণ করেন, তারই নাম হরকুটির। পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাধাকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই এই বাড়িতে পারিবারিক পুজো শুরু। বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত আছেন সিদ্ধেশ্বর মহদেব এবং শ্রীধর নারায়ণ শিলা। প্রতিদিনই হয় অন্নভোগ।শোনা যায়, আড়াইশোটি নৌকা ছিল রাধাকান্তের।তাঁর ছেলে ছিল না কোনও। মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতামহ ঈশানচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদি নিবাস ছিল বর্ধমানের কেশেরা বৈকুণ্ঠপুরে। ঈশানচন্দ্রের পুত্রের নাম গঙ্গানারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ছিলেন বিদ্যায় ও মৃদঙ্গে পারদর্শী। কদৌসিংহের কাছে মৃদঙ্গের তালিম নেন।গঙ্গানারায়ণের পুত্র হরপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা, সংস্কৃত, তৈলঙ্গি, উর্দু, ফার্সি, ইংরেজি,ফরাসী, লাতিন ইত্যাদি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন। তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের সংস্পর্শেও আসেন।এ ছাড়া তিনি ছিলেন সঙ্গীতে বিশেষ পারদর্শী।