Beyond Rituals, Exploring ranna puja's Social and Seasonal Significance dgtl
Ranna puja traditions
রান্নাপুজোর আচার শুধু ধর্মীয় নয়, নেপথ্যে রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও ঋতুভিত্তিক কারণ, জানেন সেগুলি কী কী?
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৩
বাংলার অসংখ্য আচার-অনুষ্ঠান ও লোক উৎসবের মধ্যে অন্যতম হল রান্নাপুজো বা অরন্ধন। এটি বাংলার গ্রামীণ সমাজের এক বিশেষ লোকাচার, যা ভাদ্র মাসে পালিত হয়। এই দিনে গৃহদেবী, বিশেষত মা অন্নপূর্ণা বা মা মনসাকে ভোগ নিবেদন করা হয় নানা প্রকার রান্না দিয়ে।
০২১৩
বিশ্বাস করা হয়, এর মাধ্যমে সংসারে অন্ন-সমৃদ্ধি ও শান্তি বজায় থাকে। লোকবিশ্বাস, আচার, দেবী পূজা এবং সামাজিক মিলনমেলার এক অনন্য সংমিশ্রণ এই উৎসব।
০৩১৩
‘অরন্ধন’ শব্দের অর্থই হল ‘না-রাঁধা’। অর্থাৎ এই দিনে নতুন করে রান্না হয় না। উৎসবের মূল নিয়ম হল আগের দিন রান্না করে রাখা খাবার খাওয়া। ভাদ্র মাসে রেঁধে আশ্বিনে খাওয়া, এই রীতি থেকেই উৎসবের নাম ‘অরন্ধন’।
০৪১৩
এই নিয়মের নেপথ্যে বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও ঋতুভিত্তিক কারণ রয়েছে।
০৫১৩
১) ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত - রান্নাপুজো সাধারণত ভাদ্র মাসে (ভাদ্র সংক্রান্তি বা রান্না পুজো) পালন করা হয়। এই সময় নতুন ধান বা শস্য মাঠে আসে, আবার বর্ষা শেষে কৃষকদের জীবনে স্বস্তি ফেরে। তাই রান্না পুজো মূলত নতুন ফসল ও প্রকৃতিকে ধন্যবাদ জানানোর এক রীতি।
০৬১৩
২) অন্নপূর্ণা বা গৃহদেবীর আরাধনা - এই পূজোতে মা অন্নপূর্ণা, মা মনসা বা গৃহদেবীকে সন্তুষ্ট করার প্রথা আছে। বিশ্বাস করা হয়, দেবীকে ভোগ দিলে সংসারে অন্নাভাব দূর হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে।
০৭১৩
৩) পরিবার ও সমাজের মিলন - রান্না পুজোতে বিভিন্ন রকম রান্না হয় এবং তা সবাই মিলে ভাগ করে খাওয়া হয়। ফলে গ্রামে-গঞ্জে এক ধরনের মিলন উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়।
০৮১৩
৪) প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা - মানুষ যে প্রকৃতির দান করা ধান, শস্য, জল, মাটির উপর নির্ভরশীল, সেই উপলব্ধির প্রকাশ হল এই রান্নাপুজো।
০৯১৩
অরন্ধন কেবল ভাদ্র মাসেই নয়, বছরে দু’বার পালিত হয়। মাঘ মাসে সরস্বতী পুজোর পরদিন শীতল ষষ্ঠীতে (শিলনোড়া পুজোর দিন)। ভাদ্র সংক্রান্তিতে, মনসা পুজোর দিনে। দু’দিনই উনুন জ্বালানো বারণ, তাই আগের দিনের রান্নাই খাবার হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
১০১৩
অরন্ধনকে অনেক জায়গায় মনসা পুজোর অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করা হয়। ভাদ্র সংক্রান্তিতে, অর্থাৎ বিশ্বকর্মা পুজোর আগের রাতে, বিশেষভাবে পালিত হয় এই পার্বণ। এ দিন গৃহস্থ বাড়িতে হেঁশেল পরিষ্কার করে ফণিমনসা বা শালুক গাছের ডাল দিয়ে সাজানো হয় মনসার ঘট, আর দেবীর পূজা করা হয় নির্দিষ্ট নিয়মে।
১১১৩
অর্থাৎ, রান্নাপুজো একদিকে দেবীকে আরাধনা, অন্য দিকে প্রকৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং সমাজকে একত্রিত করার এক বিশেষ উৎসব। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।