প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

মা সারদার জন্মভিটে জয়রামবাটিতে কী ভাবে শুরু হয়েছিল জগদ্ধাত্রী পুজো?

১৮৭৭ সালে জয়রামবাটি গ্রামে নিজের বাড়িতে সারদা দেবীর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু করেছিলেন। সারদা দেবী নিজেও এই পুজোর সঙ্গে আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন।

সৌভিক রায়

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৩৫
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

পরম যোগিনী ব্রহ্মময়ী দেবী জগদ্ধাত্রী। কার্তিকের শুক্লপক্ষের নবমীতে তাঁর পুজো করে গোটা বাংলা। সারদা দেবীর জন্মভূমি বাঁকুড়ার জয়রামবাটির মাতৃমন্দিরে পূজিতা হন দেবী জগদ্ধাত্রী। এই পুজোর বয়স ১৪৮ বছর। আদতে পুজোটি সারদামণির বাপের বাড়ির পুজো। ১৮৭৭ সালে জয়রামবাটি গ্রামে নিজের বাড়িতে তাঁর মা শ্যামাসুন্দরী দেবী জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু করেছিলেন। সারদা দেবী নিজেও এই পুজোর সঙ্গে আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন। সারদার জন্মভিটেতে আজও জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করেন মাতৃমন্দির কর্তৃপক্ষ।

কথিত, স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবী হৈমন্তিকার পুজো শুরু করেছিলেন শ্যামাসুন্দরী। কালীপুজোর সময়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে মাঙন নেওয়া হত, যা ঈশ্বরকে নৈবেদ্য রূপে নিবেদন করা হত। গ্রামের মহিলারা নিত্যদিন সংসার থেকে বাঁচিয়ে এক মুঠো করে চাল তুলে রাখতেন একটি পাত্রে। যাতে পুজোর সময়ে মাঙন দিতে পারেন।

জয়রামবাটি গ্রামে কালীপুজোর সময়ে ব্রাহ্মণ নব মুখুজ্জেরা রীতি অনুযায়ী প্রত্যেক ঘর থেকে পুজোর জন্য চাল নিতেন। ১৮৭৭ সালে কোনও অজ্ঞাত কারণবশত নব মুখুজ্জে শ্যামাসুন্দরীর বাড়ি থেকে চাল নিতে অস্বীকার করেন। এতে মর্মাহত হন শ্যামাসুন্দরী। অভাবপীড়িত বিধবা মহিলা, ছেলেমেয়েদের মুখে ভাত তুলে দিতে ব্রাহ্মণের বাড়িতে ধান ভানার কাজ করতেন। হয়তো সে কারণে তাঁর মাঙন গ্রহণ করতে অস্বীকার করা হয়েছিল। কালীপুজোর জন্য একটু একটু করে যে চাল তিনি সঞ্চয় করে রেখেছিলেন, তা দেবীর কাছে পৌঁছল না। অপমানে, দুঃখে কাতর শ্যামাসুন্দরী কাঁদতে থাকেন। আচমকা তিনি দেখতে পান এক রক্তবর্ণা দেবী এসে বলছেন, “কাঁদছ কেন মেয়ে? তোমার নৈবেদ্য কালীর পুজোর জন্য নেয়নি কী হয়েছে! আমি তোমার নৈবেদ্য গ্রহণ করব।’’

শ্যামাসুন্দরীর বুঝতে ভুল হয় না, ওই রক্তবর্ণা নারী আদতে জগদ্ধাত্রী। সে বছর অভাবের সংসারে জয়রামবাটিতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করলেন তিনি। পুজোটা শ্যামাসুন্দরীর আত্মমর্যাদার লড়াইও ছিল। আপাত অশিক্ষিত, অভাবে জর্জরিত অসহায় হয়েও আত্মসম্মানে আঘাত লাগলে কী হতে পারে, দেখিয়ে দিয়েছিলেন শ্যামাসুন্দরী। পুজোয় যোগ দিতে সে বছর দক্ষিণেশ্বর থেকে গ্রামে ফেরেন তাঁর মেয়ে সারদামণিও। ১৯১৯ সাল পর্যন্ত বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব সামলেছেন সারদা দেবী। তাঁর নামেই পুজোর সংকল্প হয়। আজও রীতি মেনে শুক্ল নবমীতে সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী তিথির পুজো একসঙ্গে হয় মাতৃমন্দিরে। জয়রামবাটিতে মাতৃমন্দিরের মধ্যেই জগদ্ধাত্রী পুজো হত। ২০১১ সাল থেকে মন্দিরের বাইরে মণ্ডপ গড়ে পুজো হচ্ছে। জয়রামবাটির জগদ্ধাত্রী পুজোয় এখন দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তের মানুষ ভিড় জমান।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy