Mystery of north facing tarapith temple and its connection with udaypur kali dgtl
Tarapith temple north facing mystery
উত্তরমুখী তারাপীঠ! মুখোমুখি দেবী কালী ও তারা, কেন এমন রীতি, জানেন?
কালীপুজোর আবহে তারাপীঠের প্রাচীন কাহিনি; বশিষ্ঠের সাধনা থেকে বামাখ্যাপার সিদ্ধিলাভ—রহস্য আর ভক্তির এক অন্য আখ্যান।
আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১০
শারদ উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতেই আসে কালীপুজোর পালা। আর এই সময়েই বাংলার সাধনপীঠগুলির মহিমা যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তেমনই এক জাগ্রত স্থান হল তারাপীঠ। কিন্তু কখনও কি খেয়াল করেছেন, এই মন্দিরের মুখ কেন উত্তর দিকে? এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে এক গভীর তান্ত্রিক রহস্য, যা দুই দেবী তারা আর কালীর এক দুর্লভ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়।
০২১০
গুপ্ত চিনাকার তিন্ত্রমে নাকি বলা আছে, তারাপীঠ থেকে উত্তরে প্রায় এক ক্রোশ দূরে উদয়পুরে দেবী কালীর আসন। সেখানে দক্ষিণ দিকে মুখ করে থাকেন স্বয়ং দেবী তারা। অর্থাৎ, তারা আর কালী— দু’জনেই একে অপরের মুখোমুখি অবস্থান করছেন।
০৩১০
লোকশ্রুতি, এক কালে নাকি দুই দেবীকে একসঙ্গে দেখা যেত।
০৪১০
শাস্ত্রে আরও বলা হয়েছে, যদি কোনও সাধক উদয়পুরের কালীপিঠে বসে দেবী তারা-র সাধনা করেন এবং তারাপীঠে বসে দেবী কালীর সাধনা করেন, আর মনে করেন—‘যা কালী সা তারা, যা তারা সা কালী’— তবেই তিনি মন্ত্রসিদ্ধ হন, হয়ে ওঠেন মহান সাধক। এই প্রথা মেনেই প্রাচীন কালে ঋষি বশিষ্ঠ থেকে শুরু করে আনন্দনাথ, এমনকি আধুনিক যুগের বামাখ্যাপা পর্যন্ত সবাই এই দুই স্থানে সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছেন।
০৫১০
কোজাগরী পূর্ণিমার ঠিক আগের দিনেই তারাপীঠের মহিমা যেন ভিন্ন মাত্রা নেয়। কথিত, এই দিনেই তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেত শিমুল গাছের নীচে ঋষি বশিষ্ঠ খুঁজে পেয়েছিলেন দেবীর আদি শিলামূর্তি। কালের গর্ভে সেই মূর্তি তলিয়ে গেলেও জনশ্রুতি বলে, পাল রাজাদের সময়কালে জয়দত্ত সওদাগর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুক্লা চতুর্দশী তিথিতে তা উদ্ধার করে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন। পরে নাটোরের রানি তৈরি করেন বর্তমান মন্দির।
০৬১০
আবির্ভাব তিথিতে দেবীর রোজনামচা পাল্টে যায়। সূর্যোদয়ের আগেই ভোর তিনটে নাগাদ গর্ভগৃহ থেকে দেবীর বিগ্রহ বার করে আনা হয়। বিরাম মঞ্চে বসানো হয় পশ্চিম দিকে মুখ করে।
০৭১০
জীবিত কুণ্ড থেকে জল এনে স্নান করানো হয়, তার পরে পরানো হয় রাজবেশ। চলে মঙ্গল আরতি।
০৮১০
কথিত, এক বার রাজা রাখর চন্দ্রকে প্রধান তান্ত্রিক আনন্দনাথ পুজোয় বাধা দেন। অভিমানী রাজা দ্বারকা নদীর পশ্চিম পাড়ে ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। সেই রাতেই আনন্দনাথকে স্বপ্নে দেখা দেন দেবী তারা। আজ্ঞা দেন, পশ্চিম মুখে কালী বাড়ির দিকে মুখ করেই যেন তাঁর পুজো করা হয়। সেই থেকে এক দিনের জন্য পশ্চিম মুখে বসিয়ে পুজো করার এই রীতি চালু হয়।
০৯১০
সারা দিন বিরাম মঞ্চে থাকার পরে সন্ধ্যায় আরতির পর দেবীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মূল মন্দিরে। এ দিন দেবীর উপোস। তাই মধ্যাহ্ন ভোগ হয় না। ফল-মিষ্টি খান তিনি। সকালে শীতল ভোগে থাকে লুচি, মিষ্টি, সুজি। রাতে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচ রকম ভাজা, মাছ-মাংস দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয়।
১০১০
আবির্ভাব তিথির আগের দিন, অর্থাৎ ত্রয়োদশীতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা হালখাতা করেন। তাঁদের বিশ্বাস, এতে দেবী সহায় হন এবং সারা বছর ব্যবসা ভাল চলে। (‘আনন্দ উৎসব ২০২৫’-এর সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছেন একাধিক সহযোগী। প্রেজ়েন্টিং পার্টনার ‘মারুতি সুজ়ুকি অ্যারেনা’। অন্যান্য সহযোগীরা হলেন ওয়েডিং পার্টনার ‘এবিপি ওয়ানস্টপ ওয়েডিং’, ফ্যাশন পার্টনার ‘কসমো বাজ়ার’, নলেজ পার্টনার ‘টেকনো ইন্ডিয়া ইউনিভার্সিটি’, ব্যাঙ্কিং পার্টনার ‘ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’, কমফোর্ট পার্টনার ‘কার্লন’)। (এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ)।