সম্প্রসারিত মেট্রো লাইন শহরের বিভিন্ন প্রান্তকে জুড়লেও ‘ব্লু লাইন’ অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত যাতায়াতকে ঘিরে যাত্রী-ভোগান্তির শেষ নেই। বিশেষত অফিস টাইমে রীতিমতো নাকানিচোবানি খাওয়ার জোগাড় মানুষের। সামনেই তো পুজো, তখনও যদি যাত্রী পরিষেবায় একই দৃশ্য দেখা দেয়, তা হলে বুদ্ধি করে বিকল্প পথ বাছাই শ্রেয়। উত্তর কলকাতার ঠাকুর ঘুরে দেখতে চাইলে মেট্রো ছাড়া কী ভাবে পৌঁছবেন এই মণ্ডপগুলিতে?
আরও পড়ুন:
নোয়াপাড়া দাদাভাই সঙ্ঘের পুজো দেখতে চান? তা হলে দমদম স্টেশন থেকে বাসে চেপে যেতে হবে দক্ষিণ সিঁথি। তার পরে আবার বাস। হাতে গুনে ছয় থেকে সাতটা স্টপেজ। পৌঁছে যাবেন নোয়াপাড়া। মিনিট দুয়েক হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন নোয়াপাড়া দাদাভাই সঙ্ঘের পুজোয়।
দমদমে যাবেন আর দমদম পার্কের ঠাকুর দেখবেন না, তা কী ভাবে হয়? এর জন্য মেট্রো রুটের উপরে ভরসা করার দরকার নেই। দমদম জংশন থেকে আরজি কর মেডিক্যাল হাসপাতালগামী অথবা শ্যামবাজারগামী বাসে উঠুন। শ্যামনগরে নেমে সেখান থেকে বাগুইআটিগামী অটোয় উঠে নামতে হবে দমদম পার্ক শনি মন্দিরের সামনে। তার পরে কিছু দূরেই দমদম পার্ক তরুণ দলের দেবীদর্শনের সুযোগ।
দমদম থেকে টালা প্রত্যয়ের ঠাকুর দেখতে চাইলে মেট্রো ছাড়াও যাওয়া যাবে বাসে। পাইকপাড়া বেশি দূর নয়। সেখানে নেমে কিছু ক্ষণ হাঁটলেই সামনে টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপ। সেখান থেকে গন্তব্য ধরুন টালা বারোয়ারি দুর্গা পুজো, আরজি কর হাসপাতালের সামনে নেমেই হাঁটাপথে পৌঁছে যাবেন সেখানে।
এ ছাড়াও আছে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো। এর জন্য বিধাননগর নেমে অটোয় অটোয় পৌঁছে যেতে পারবেন।
ধরা যাক জগৎ মুখার্জি পার্কের ঠাকুর দেখতে চাইছেন। মেট্রোর ব্লু লাইনে সমস্যা হলেও গ্রিন লাইন হতে পারে বিকল্প পথ। শিয়ালদহ থেকে গ্রিন লাইন ধরে নেমে পড়ুন এসপ্ল্যানেডে। তার পরে মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে সোজা বাসে। গ্রে স্ট্রিটে নেমে মিনিট দুই হাঁটলেই জগৎ মুখার্জি পার্কের পুজো। এ ছাড়া শিয়ালদহ থেকে বাস ধরে বাগবাজারে নেমেও পৌঁছে যেতে পারেন বাগবাজার সর্বজনীনে। সেখান থেকে কিছুটা হাঁটলেই আহিরীটোলার পুজো, একই সঙ্গে দর্শন পেয়ে যাবেন কুমোরটুলির দেবীরও।
শিয়ালদহ থেকে কাশী বোস লেনেও যেতে পারেন বাসে চেপে। প্রথমে স্কটিশ চার্চ কলেজের সামনে নামলেন, তার পরে কিছুটা হাঁটাপথ।
তেলেঙ্গাবাগানের ঠাকুর দেখতে চাইলে গ্রিন লাইনের মাধ্যমেই পৌঁছে যান ফুলবাগানে। বিধাননগর থেকে বাসেও যেতে পারেন। ফুলবাগান থেকে আবার বাস ধরে মুচি বাজার। তার পরে কিছুটা হাঁটলেই তেলেঙ্গাবাগান। উত্তরের পুজোগুলির মধ্যে আরও একটি বহুচর্চিত পুজো হল গৌরীবাড়ির পুজো। এ ক্ষেত্রে শিয়ালদহ থেকে টানা বাসে করেই পৌঁছে যেতে পারবেন সেখানে। একই সঙ্গে শিকদার বাগানের পুজো ঘুরে দেখতে চাইলে শিয়ালদহ সুরেন্দ্রনাথ কলেজের সামনে থেকে বাস ধরে টাউন স্কুলের সামনে নেমে হাঁটাপথ।
গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনে নেমে পেয়ে যেতেন চালতাবাগানের ঠাকুর। এ বার তার পরিবর্তে শিয়ালদহ থেকে মানিকতলা গিয়ে কিছুটা হাঁটলে পৌঁছে যাবেন সেখানে। বিবেকানন্দ স্পোর্টিংয়ের পুজো দেখতে চাইলেও শিয়ালদহ থেকে বাসে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি অথবা শ্রীমানী মার্কেট স্টপেজে নেমে পৌঁছে যেতে পারেন। এ ছাড়াও কলেজ স্কোয়ারের পুজো দেখার জন্য নামতে পারেন কলেজ স্ট্রিটে। সেখান থেকে সামান্য হাঁটলেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।