চারদিক ঘিরে চলছে শুধুই কংক্রিট। আজ থেকে মাত্র কয়েক বছর আগেও যে জায়গাটা ছিল একেবারেই অন্য রকম, নতুন জেলার প্রধান শহর হওয়ার পরে তার যেন এখন এটাই নতুন রূপ। অথচ, পুরানো সেই শহরটার আগের ছবি দেখার আকাঙ্ক্ষা আজও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে এই শহরের অনেককেই। প্রবীণদের থেকে গল্প শুনে নতুন প্রজন্মের মধ্যেও তাতে আগ্রহ এতটুকুও কম নেই৷ আর সেই নবীন-প্রবীণদের বাসনা পূরণ করতে এই মুহূর্তে মরিয়া সেই শহরেরই একটি ক্লাব৷
কথাটা হচ্ছে আলিপুরদুয়ার শহরকে নিয়ে। আর এই শহরকে নিয়ে এমন একটি স্মৃতিকথায় যে ক্লাবটির নাম উঠে আসছে সেটি হল উপল মুখর ক্লাব। এই ক্লাব ঘরের অবস্থান শামুকতলা রোডে হলেও, শান্তিনগর মাঠের পুজোই তাদের পুজো হিসাবে পরিচিত আলিপুরদুয়ার শহরবাসীর কাছে৷ এ বার এই ক্লাবের পুজো ৭০ বছরে পা দিয়েছে। আর সাত-সাতটি দশক পেরনো নিজেদের সেই দুর্গা পুজোয় এ বার এই ক্লাব চমক আনতে চলেছে আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দাদের জন্য৷ তাদের সেই পুজোর এবারের মূল লক্ষ্য আলিপুরদুয়ার শহরবাসীকে তাদের পুরানো দিনের যতটা সম্ভব ফিরিয়ে দেওয়া।
তবে এই ক্লাবের দুর্গাপুজোর চাহিদা কিন্তু এতটুকুও কম নেই আলিপুরদুয়ারে। বরং বলতে গেলে গোটা এই জেলায় যে কয়েকটি ক্লাব দুর্গা পুজোয় নজর কাড়ে তাদের মধ্যে অন্যতম উপল মুখর ক্লাব। প্রতি বারই তাদের পুজো দেখতে ভিড় জমান প্রচুর দর্শনার্থী। তবে এ বার যেন সেই দর্শনার্থীর সংখ্যা আরও বেশি করে টানতে চাইছেন উদ্যোক্তারা৷ তাই শহরের নস্টালজিয়াই এবার পুজোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ৷
আরও পড়ুন: প্রাণের দুই ফুল হারিয়ে মালা গাঁথছেন দম্পতি
আরও পড়ুন: পুজোর ফ্যাশনে জিনস নয়, লেহেঙ্গার সঙ্গে জুটি শার্টের
ক্লাবের সম্পাদক অভিজিৎ কুন্ডুর কথায়, “একটা সময় ছিল, যখন খাল-বিলে ভরে ছিল গোটা আলিপুরদুয়ার শহর৷ আজ যেন সেই খাল-বিল হারিয়ে যাচ্ছে৷ আমরা সেই পুরানো স্মৃতিকে ফরিয়ে আনতে চাই শহরবাসীর কাছে৷ যাতে করে তারা পরিবেশ সম্পর্কেও সচেতন হন৷”
এ বার এই পুজোর মণ্ডপ গড়ার দায়িত্বে রয়েছেন চন্দননগরের শিল্পীরা৷ তাঁদের কথায়, গোটা একটা মাঠকে খালবিলের পরিবেশে পরিণত করা হবে। যেখানে গোটা মাঠ ভরে থাকবে কৃত্রিম ব্যাঙ আর ব্যাঙের ছাতায়। তার মাঝেই থাকবে একটি মন্দির৷ যে মন্দিরের সামনে ফুটিয়ে তোলা হবে একটা বিরাট পদ্ম।
ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা বিষ্ণু ভৌমিকের কথায়, দীর্ঘদিন থেকেই আমরা এক ঘরানায় পুজো করে আসছি। মানুষের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এ বার একটু পুজোর স্বাদটা পাল্টাতে চেয়েছি৷ তাঁর সঙ্গে সহমত রেখেই ক্লাবের সভাপতি বাসুদেব বিশ্বাস বলেন, ‘‘দর্শনার্থীরা নিজেরাও এখন অন্য রকম স্বাদ চাইছেন৷ তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়েই এ বারের পুজোটাকে একটা নতুন ভাবনায় করতে চাইছি আমরা।’’
তবে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ঐতিহ্য মেনেই এ বারও তাদের প্রতিমা ডাকের সাজেই হবে৷
ছবি: মীরা মজুমদার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy