কলকাতার দর্জি পাড়ার মিত্রবাড়ির দুর্গাপুজো অন্যান্য বনেদি বাড়ির থেকে খানিক ব্যতিক্রম। প্রায় ২১৬ বছর আগে রাধাকৃষ্ণ মিত্রের উদ্যোগে এ বাড়িতে শুরু হয়েছিল উদযাপন। এখন তার এক অন্যতম বিশেষত্ব হল— পুজোটি সম্পূর্ণরূপে মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত।
মিত্র বাড়ির পুজোয় দুর্গামূর্তি তৈরি হয় বাড়িতেই। পুরনো সংরক্ষিত ছাঁচেই এখনও গড়া হয় নতুন প্রতিমা। কুমোরটুলি থেকে আসে ডাকের সাজ। আর জরির কাজে হাত লাগায় বাড়ির ছোটরা।
রথের দিনে কাঠামো পুজো হয়। প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে যায় বোধনের রীতি। মিত্র বাড়ির দুর্গাপুজোয় সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত কুমারী পুজো হয়। অষ্টমীতে সন্ধি পুজোর সঙ্গে কল্যাণী পুজো হয়। এখানে ১০৮টি পদ্মের জায়গায় ১০৮টি অপরাজিতা ফুল ব্যবহারের রীতি রয়েছে। নবমীতে হোম ও প্রদক্ষিণের মাধ্যমে হয় দেবীর আরাধনা। দশমীতে কনকাঞ্জলি দেওয়ার পরে মা দুর্গার আসনে বাড়ির মহিলারা বসেন। প্রার্থনা করেন, মা দুর্গার মাতৃ স্নেহ ও অপরাজিত শক্তির আধার যেন তাঁদের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।
বাড়ির পুরুষ সদস্যরা এর পরে ধুতি পরে, ছড়ি হাতে নিয়ে দেবীকে কাঁধে করে বিসর্জনের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। আগে বিসর্জনের সময়ে নীলকন্ঠ পাখি ওড়ানোর রীতি থাকলেও বর্তমানে তা অবলুপ্ত।
দর্জিপাড়া মিত্র বাড়িতে ভোগের আয়োজনেও বৈচিত্র্য রয়েছে। এখানে ভোগের খিচুড়িতে চাল থাকলেও উপরে থাকে রোদে শুকনো মুগের ডাল। তার সঙ্গে নানা রকমের সব্জি ও ভাজা নৈবেদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। এ বাড়ির অন্যতম উল্লেখযোগ্য ভোগ হল মাখনের নৈবেদ্য। মাখনকে তিন কোনা অর্থাৎ মন্দিরের চূড়ার আকারে কেটে দেবীর উদ্দেশ্যে তা নিবেদন করা হয়।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy