উত্তর কলকাতা আর বাবু কালচার সে যুগে যেন ছিল সমার্থক! বনেদিবাড়িতে তো বটেই, একটু পয়সাওয়ালা হলেই সে বাড়ির বাবু কালচারে অনিবার্য ছিল পালকি। ঘোড়ায় টানা ফিটন গাড়ি চেপে ঘোরাঘুরি করতেন বাড়ির কর্তা। আর গিন্নি চাপতেন পালকিতে। পথে যাতে বনেদিবাড়ির বউ-মেয়েদের মুখ অচেনা পুরুষের চোখে না পড়ে, সে জন্য পালকির দরজা ভেজিয়ে তার ভেতর বসে পালকি বাহকদের ‘হুন হুনা রে হুন হুনা’ শুনতে শুনতে মহিলারা গন্তব্যে যেতেন।
আর খাঁটি উত্তর কলকাতার সেই সব বাবু কালচার-ই এ বছর পল্লীর যুবক বৃন্দ-র ৬২তম দুর্গাপুজোর মন্ডপ জুড়ে দেখা যাবে। যে থিমের নাম দেওয়া হয়েছে 'উত্তরসাক্ষী'! শোনা গেল, ভাবনাটা এঁদের থিম রূপকারের একার নয়, ক্লাবে মুখ্য সদস্যরা সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেন।
আসলে পুরনো উত্তর কলকাতার যে জায়গাটা ঐতিহাসিক ভাবে ‘পালকিপাড়া’ নামে স্বীকৃত ছিল, বর্তমানের সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে অবস্থিত আমহার্স্ট স্ট্রিট পোস্ট অফিসের উল্টোদিককার সেই মাঠে এঁদের দুর্গাপুজো হয়। ক্লাবের সদস্য তথা এবারের থিম-শিল্পী অভিজিৎ নন্দী বলছেন, পল্লির যুবক বৃন্দ-র পুজো যে জায়গায় হয়, সে যুগে ওখানেই সারি সারি পালকি থাকত, এই অঞ্চলের বনেদি, উচ্চবিত্ত, উঠতি ধনী বাড়িগুলির। মাঠে পালকির পাশে শুয়ে বিশ্রাম নিত পালকি বাহকদের দলবল। ‘উত্তরসাক্ষী’ থিমের মূল সুর সেটাই। প্যান্ডেলে পালকির একটা ‘রেপ্লিকা’-ও থাকছে এঁদের পুজোয়। বাবু কালচারের পাশাপাশি প্যান্ডেলের ভেতরে ফুটিয়ে তোলা হবে পুরনো কলকাতার পালকি কালচারও। যার মাঝে আরও শোভা পাবে সাবেকি একচালার দুর্গাপ্রতিমা।
কী ভাবে যাবেন : উত্তর কলকাতার সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটে আমহার্স্ট স্ট্রিট পোস্ট অফিসের উল্টো দিকের মাঠে হয় এই পুজো।
ভাবনা : উত্তরসাক্ষী
ভাবনায় : অভিজিৎ নন্দী
প্রতিমা শিল্পী : পরিমল পাল
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy