পুজো মানেই তো নতুন কিছু দেখার উত্তেজনা! চেনা ছকে বাঁকা পথে হেঁটে চমকে দেওয়ার সাহস। এ বার সেই চমকের বারুদ নিয়ে হাজির হয়েছে কৃষ্ণনগরের রায়পাড়া মালিপাড়া বারোয়ারী। রাজবাড়ির শহর, তাই থিমে রাজবাড়ির ছায়া থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এ কী! কৃষ্ণনগর রাজবাড়ীর কাছেই তৈরি হওয়া এই মণ্ডপটি বাইরে থেকে দেখলে তাকে মণ্ডপ বলে ঠাহর করা কঠিন। রাজবাড়ির থিম এখানে অন্য রূপে ধরা দিয়েছে – সেজে উঠেছে 'হানা বাড়ি'র বেশে।
মণ্ডপ দেখতে এসে দর্শকরা থমকে দাঁড়িয়েছেন। কারিগরদের নৈপুণ্য এতটাই নিখুঁত যে, মণ্ডপটির সঙ্গে আশপাশের পুরনো বাড়িগুলির, এমনকি রঙেরও দারুণ সামঞ্জস্য রাখা হয়েছে। এক লহমায় মণ্ডপের কাঠামোটি দেখে মনে হয় না যে এটি সম্প্রতি তৈরি হওয়া কোনও প্যান্ডেল। বরং মনে হবে বহু পুরনো, পরিত্যক্ত কোনও বাড়ি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে বুঝি! শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় যেন সময় থমকে গিয়েছে প্রায় ৩০০-৪০০ বছর আগে!
মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঐতিহ্যের কৃষ্ণনগরে এ কেমন নতুন লীলাখেলা! ভিতরে ঢুকলে গা ছমছমে অনুভূতি। রাজবাড়ির গাম্ভীর্য নয়, এখানে মিশেছে এক ভুতুড়ে আমেজ। চার দিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কঙ্কালের মডেল। এক লহমায় মনে হবে যেন কোনও গল্পের পাতা থেকে উঠে আসা রাজবাড়ির অলিন্দ, যেখানে প্রাণের স্পন্দন থেমে গিয়ে শুধুই রহস্যের আনাগোনা। উৎসবের হাসিখুশি আবহের মাঝে এমন হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে রায়পাড়া মালিপাড়ায়। রসবোধ আর বিনোদনের এই অনবদ্য বুনন দেখতে পেলে মন ভরে উঠবে বৈকি! তবে সাবধান! ভূতের বাড়ি বলে কথা! একা ঢুকবেন না যেন!
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।