কালীঘাটের দেবী দক্ষিণাকালী
‘কালীঘাট এড়াইল বেনের নন্দন। কালীঘাটে গিয়া ডিঙি দিল দরশন’, কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তীর চন্ডীমঙ্গলে যথার্থই উল্লেখ রয়েছে কালীঘাট প্রসঙ্গে। কালীঘাটে দেবী দক্ষিণাকালী বিরাজমান স্বমহিমায়। সতীর ৫১ পীঠের অন্যতম কলকাতার অভিভাবক স্বরূপ এই দেবী। কথিত, পীঠনির্ণয় তন্ত্র অনুসারে কালীক্ষেত্র কলকাতার মাহাত্ম্য বারাণসীর সমতুল্য।
কালীঘাটে কালীকে মহালক্ষ্মী রূপে আরাধনা করা হয়। সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভক্তের আনাগোনা। দেশের নানা প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা পুজো দিতে এসেছেন এই মন্দিরে। আজ গভীর রাত পর্যন্ত কালীঘাট মন্দির খোলা থাকবে। কালীঘাটের পীঠদেবী দক্ষিণাকালী এবং নকুলেশ্বর দেবীর ভৈরব বা পীঠরক্ষক। পৌরাণিক কাহিনি অনুসরণ করলে জানা যায় সতীর দেহ খণ্ড হিসাবে তাঁর ডান পায়ের আঙুল পড়েছিল এই তীর্থক্ষেত্রে। তবে একটি আঙুল নাকি চারটি তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
বাকি দিনগুলির মতোই আজও সকালে নিত্য পুজো এবং দুপুরে ভোগ নিবেদন করা হয়। তার পর সন্ধ্যায় অলক্ষ্মী পুজো করে অলক্ষ্মী বিদায় করা হয়। পাট কাঠি জ্বালিয়ে মন্দিরের সেবায়েতরা মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। তার পর ওই আগুন বাড়িতে নিয়ে যান প্রত্যেকে। অলক্ষ্মী বিদায়ের পর পুরো মন্দির ধুয়ে ফেলা হয় এবং শুরু হয় লক্ষ্মীপুজো। দেবী কালীকে মহালক্ষ্মী রূপে পুজ করা হয়। পুজোর নৈবেদ্য হিসাবে থাকে খই, মুড়কি, নাড়ু, ফল, মিষ্টি, লুচি, তরকারি ইত্যাদি। তবে সন্ধ্যার পুজো শেষে রাত্রে আরও একবার ভোগ নিবেদন করা হয়। এবং ভোগে থাকে খিচুড়ি, পোলাও, মাছ ও পরমান্ন।
প্রায় সারা বছরই শনিবার ও মঙ্গলবার মন্দিরে বেশ ভিড় লক্ষ করা যায়। বিপত্তারিণী পুজোতেও ভক্তের আনাগোনা থাকে তুঙ্গে। এছাড়াও পয়লা বৈশাখ এবং অক্ষয় তৃতীয়ায় হালখাতা পুজোতেও ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। তবে এই পুজোগুলি ছাড়াও কালীঘাটের মূল পুজো আটটি। রক্ষাকালী, স্নানযাত্রা, জন্মাষ্টমী, মনসাপুজো, চড়ক, গাজন, রামনবমী এবং দীপাবলি। কালীঘাট মন্দিরে দুর্গাপুজোও কর হয় সাড়ম্বরে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy