প্রেজেন্টস্
Knowledge Partner
Fashion Partner
Wedding Partner
Banking Partner
Comfort Partner

পশ্চিমবঙ্গের এই স্থানগুলিতে কালী কৃষ্ণবর্ণা নন বরং শ্বেতবর্ণা, এই কালীপুজোয় দেখে আসুন শ্বেতকালী নিজের চোখে

পশ্চিমবঙ্গেই ৪টি জায়গায় শ্বেতকালী রূপে পুজো হয় মা কালীর। জেনে নেওয়া যাক সেই চার ঠিকানার হদিশ এবং কী তার মাহাত্ম্য।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ২৩:২০
শ্বেতকালী

শ্বেতকালী

কালীপ্রতিমার কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠেন এক কৃষ্ণবর্ণা বা নীলবর্ণা দেবী। কখনও তিনি উগ্র, আবার কখনও স্নিগ্ধ, মায়াবী মুখখানি। কিন্তু কখনও কি শুনেছেন শ্বেতবর্ণের কালীর কথা? হ্যাঁ, এই শ্বেতবর্ণা রূপেও মা কালী পূজিত হয়ে আসছেন বহু বছর ধরে। পশ্চিমবঙ্গেই ৪টি জায়গায় শ্বেতকালী রূপে পুজো হয় মা কালীর। জেনে নেওয়া যাক সেই চার ঠিকানার হদিশ এবং কী তার মাহাত্ম্য।

পশ্চিম বর্ধমানের কুলটির শ্বেতকালী: পশ্চিম বর্ধমানের কুলটিতে পুজো হয় শ্বেতবর্ণা কালীর। এই শ্বেতকালীকে দেখতে ভক্তরা ছুটে আসেন দূর দূরান্ত থেকে। ২০০৫ সালে দেবীর প্রতিষ্ঠাতা এবং পূজারী মধুময় ঘোষ স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই কালীর পুজো শুরু করেন। কথিত, এক কালে নাকি শ্রীরামকৃষ্ণ এই রূপ কালীর দর্শন পেয়েছিলেন।

কুলটির শ্বেতকালী

কুলটির শ্বেতকালী

শ্বেতকালীর পুজো শুরু হওয়ার পর থেকেই আস্তে আস্তে ছড়াতে থাকে তাঁর নাম। পুরোহিত মধুময় ঘোষের মতে, দেবী নিজে তাঁকে এই রূপে পুজো করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখানে এই শ্বেতকালী ফলহারিণী কালী রূপে পুজো পান।

বীরভূমে অজয়পুরের শ্বেত কালী: বীরভূম জেলার সদর শহর সিউড়ি। সেখান থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে এক ছোট্ট ও স্নিগ্ধ গ্রাম অজয়পুর। সেখানেও দেখা মেলে শ্বেত কালীর। ১৯৭৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় নদীর অন্য পাড়ের একটি গ্রাম ভেসে যায়। সেখানকার গৃহহীন অসহায় মানুষেরা এই অজয়পুরে এসে বসতি স্থাপন করেন। সেই দলে ছিলেন এক জন সাধুও।

অজয়পুরের শ্বেত কালী

অজয়পুরের শ্বেত কালী

কথিত, এই সাধুই নাকি এই শ্বেতকালীর পুজোর সূচনা করেছিলেন গ্রামে। অন্যান্য কালী পুজোর থেকে এই পুজোর রীতি একটু আলাদা। অমাবস্যা নয়, অগ্রহায়ণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই মা কালীর পুজো করা হয়।

লোকমুখে শোনা যায়, এই সাধুর চিন্তাভাবনা ছিল একদম ভিন্ন ধাঁচের। তিনি মনে করতেন, অমাবস্যার নিকষ অন্ধকারে পুজোর রীতিনীতি ভাল ভাবে পালন করা যায় না। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নেন, পূর্ণিমা তিথিতেই পুজো করবেন। এই সাধুর সাতকুলে কেউ ছিল না। তাই মৃত্যুর আগে এই পুজোর দায়ভার দিয়ে যান তাঁর এক শিষ্য হৃষিকেশ মাহারাকে। বর্তমানে তাঁরই বংশধরেরা এই পুজো করে আসছেন আজও। পুজোর সময়ে আশপাশের গ্রামের মানুষরা ভিড় জমান।

রাজবলহাটের শ্বেত কালী: হুগলি জেলার রাজবলহাট বিখ্যাত তার রাজবল্লভী দেবী মন্দিরের জন্য। অনেক ঐতিহাসিকের মতে, এই মন্দির প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো। কেউ বলেন, ১২৪২ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন রাজবলহাটের রাজা সদানন্দ রায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। আবার অনেকের মতে, ষোড়শ শতকে রাজা রুদ্রনারায়ণ রায় ছিলেন এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা।

রাজবলহাটের শ্বেত কালী

রাজবলহাটের শ্বেত কালী

এই মন্দিরে দেবী শ্বেত কালী রূপেই পুজো পান। ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট, তাঁতের শাড়ি পরিহিতা কালীর স্নিগ্ধ রূপ সবারই নজর কাড়ে। স্থানীয় মানুষরা মনে করেন, এই দেবী দুর্গা, সরস্বতী ও কালীর মিশ্রিত রূপ। কথিত, এই মন্দিরেই নাকি পঞ্চমুণ্ডি আসনে বসে এককালীন তন্ত্র সাধনা করেছিলেন রাজা সদানন্দ রায়।

স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই মন্দিরে রাখা কাঠের খাটে রাত্রে ঘুমোন দেবী। কখনও কখনও নাকি তামাক সেবনেরও ইচ্ছা হয় তাঁর। রোজই এই মন্দিরে ভিড় জমে। তবে কালীপুজোয় দেখা যায় জনজোয়ার। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন দেবীর এই রূপ দর্শনে।

আঁটপুর, হুগলী- শ্বেতকালী: স্থানীয় মানুষদের বক্তব্য অনুযায়ী, আঁটপুরের সিদ্ধেশ্বরী শ্বেতকালী ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম রাজবলহাটের রাজবল্লভী দুই বোন।

গড় ভবানীপুরের রাজা সদানন্দ প্রতিষ্ঠা করেন রাজবলহাটের দেবী রাজবল্লভীকে। আর রানি তারাদেবী স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই সিদ্ধেশ্বরী শ্বেত কালীকে আঁটপুরে প্রতিষ্ঠা করেন। স্বপ্নে নাকি দেবী জানিয়েছিলেন, পূর্ণিমার পূর্ণচন্দ্রের মতো যেন তাঁর রূপ হয়। সেই নির্দেশ মেনেই প্রতিষ্ঠা হয় এই শ্বেতকালীর।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ

Ananda Utsav 2024 Kali Puja 2024 Puja Parikrama Myths Diwali 2024 Birbhum Hoogly
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy