নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ
‘’পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে
স্যাটেলাইট আর কেবলের হাতে
ড্রয়িংরুমে রাখা বোকাবাক্সতে বন্দী…”
তখনও বিজ্ঞান অভিশাপ কিনা, সে প্রশ্ন মাথাচাড়া দেয়নি। মুঠোফোন দূরে থাক, টিভির পর্দাতেও বাঁধা পড়েনি পৃথিবী। গোটা পরিবার রোজ একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া, সপরিবার ভ্রমণ, ঠাকুর দেখতে যাওয়া, উৎসব উদ্যাপন– এ সবই ছিল একান্নবর্তী পরিবারের কোলাজ ছবি। সময়ের হাত ধরে বড় বাড়ির জায়গা নিল ছোট ফ্ল্যাট। স্থানাভাব আর পাল্টে যাওয়া জীবনবোধের হাত ধরে শহুরে একান্নবর্তী পরিবার টুকরো ভাঙতে ভাঙতে হয়ে দাঁড়াল নিউক্লিয়ার পরিবার। দুদ্দাড়িয়ে পাল্টে গেল রোজনামচা। পুরনো ভাবনা, পুরনো জিনিস, পুরনো মানুষ সবাইকে ঝেড়ে ফেলে পরিবার এখন স্লিম অ্যান্ড ট্রিম। মা-ঠাকুমার হাতের রান্নার জায়গা নিয়েছে অনলাইনে অর্ডার করা খাবার।
হারিয়ে যাওয়া সেই একান্নবর্তী পরিবারের গল্পই ফিরে আসছে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘে। তাদের ‘একান্নবর্তী’ থিমে।
শিল্পী রিন্টু দাস বলেন, “মূলত ফেলে আসা সময়কেই তুলে ধরার চেষ্টা করছি আমরা। আশি-নব্বইয়ের দশকের থেকে এখনকার সময়ের যে পার্থক্য, তা পরতে পরতে ফুটে উঠবে এই থিমে। মা, কাকিমা, ন’পিসি, ফুল পিসি– এ সব ডাক যেমন হারিয়ে গিয়েছে, তেমনই এক হাঁড়িতে একত্রে সবার রান্না, একসঙ্গে বসে খাওয়াও আজ অতীত। হইহই, গল্পের জায়গা নিয়েছে মোবাইল ফোন। সুসজ্জিত ডাইনিং রুমে আসে অনলাইনের খাবার। পরিবারের বাঁধনগুলোও আলগা হয়ে গেছে। সেই ঠাকুমা-জেঠিমাদের শাসনও আর নেই। ভেঙে টুকরো হয়ে গিয়েছে পরিবার। হারানো সময়ের নস্টালজিয়া তুলে ধরতেই এ বারের থিম ‘একান্নবর্তী’। পিতলের বাসন, আধুনিক যুগের মোবাইল ফোন, মাটি, বাঁশ, থালা, কাঠের টেবিল– অর্থাৎ দৃশ্যকল্প ফুটিয়ে তুলতে যা যা উপাদান দরকার, সবই ব্যবহার করা হয়েছে এই মণ্ডপে।”
কী ভাবে যাবেন: গীতাঞ্জলি বা মাস্টারদা সূর্য সেন, যে কোনও একটি মেট্রো স্টেশন থেকে নাকতলা বাজারের মোড়ে যেতে হবে। বাজারের রাস্তা ধরে এগোলে বাঁ দিকে পড়বে নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘ।
এই প্রতিবেদনটি আনন্দ উৎসব ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy