আজ অন্নকূটপুজো। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনবাসীকে বাঁচানোর জন্য গোবর্ধন পাহাড় অঙ্গুলির ডগায় তুলে নেন। কিন্তু কেন? সে ঘটনায় আসছি। এক প্রকার ভগবানের সঙ্গে ভগবানের লড়াইয়ের কারণে বিপদে পড়েন বৃন্দাবনবাসী।বৃষ্টি যেন ভাল হয়, সে জন্য বৃন্দাবনের লোকেরা জাঁকজমক করে ইন্দ্রের পুজো করতেন। তা পছন্দ হয়নি কৃষ্ণের।
তিনি উপদেশ দেন, ইন্দ্রের পুজোয় যে খাবার ইত্যাদি দেওয়া হয়, তা বাচ্চাদের দিয়ে দেওয়া হোক। শ্রীকৃষ্ণের কথা ফেলতে পারেননি বাসিন্দারা। তাতে ক্ষুব্ধ হন দেবরাজ। শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি ইন্দ্রের ক্রোধের কারণেই।
তখন গ্রামবাসীকে বাঁচানোর জন্য নিজের লীলা দেখান কৃষ্ণ। সেই সময় গ্রামবাসীরা যে খাবার নিয়ে গিয়েছিল তাই-ই খাওয়া হয় ভাগাভাগি করে। যা খুব ভাল লাগে শ্রীকৃষ্ণের।
তারপর থেকেই শুরু হয় 'অন্নকূট' পুজো। অন্ন, মানে ভাত। কূটের অর্থ, পাহাড়। বিপদের সময়, ওই বৃষ্টিকালীন অবস্থায় গ্রামবাসী ও কৃষ্ণ যে খাবার ভাগ করে খান, তার আকার ছিল পাহাড়ের মতো! সেই থেকেই নাম, এই 'অন্নকূট'।
সাধারণত দীপাবলির পরের দিন এই পুজো হয়। এ বারেও তাই হচ্ছে। বাংলার অনেক জায়গায় এই পুজো হয়। পূর্ব বর্ধমানের রানিগঞ্জ বাজার বারোয়ারি পুজো উৎসব ও সেবা সমিতি এই পুজো করে। দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে, এখানে অন্নকূট পুজো হয়ে আসছে।৫২-র থেকে বেশি ভোগ দেওয়া হয় এই পুজোয়। ২৫-৩০ প্রকারের ভাজা খাবার থাকে বলে দাবি কমিটি সদস্যদের।দেওয়া হয় পোলাও, ভাত, চাটনি, পায়েস। থাকে অনেক প্রকারের মিষ্টিও।
আয়োজকদের দাবি, ২৫০ আগে এখানে প্রথম কালীপুজো করা হয়। তখন অবশ্য গণেশ তলার পুজো হিসেবে পরিচিত ছিল এই পুজো। পুজো কমিটির নথিভূক্তিকরণের পর এই নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। কালীপুজোর পাশাপাশি এই অন্নকূট পুজো হয়। কমিটির সদস্য সঞ্জয় পাল বললেন, “আমাদের এই অন্নকূট পুজোয় বর্ধমানবাসী অংশগ্রহণ করেন। পাড়ার ছেলেরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। আমাদের হাজার চার-পাঁচেক লোক প্রসাদ নেয়। আমরা খুব আনন্দ করে এই কাজ করি।"
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy