দুর্গা-কালী ফিরে গিয়েছেন, এ বার মর্ত্যে আসার পালা জগদ্ধাত্রীর। আর জগদ্ধাত্রী পুজো শুনলেই বাংলার দুটি জায়গার নাম মাথায় আসে, চন্দননগর এবং কৃষ্ণনগর। যদিও বাংলার অন্যান্য জায়গাতেও সমারোহে পূজিত হন এই দেবী। তবে এই দুই শহর পুজোর ক’দিন একে বারেই অন্য রূপ ধারণ করে। চন্দননগরের অন্যতম জনপ্রিয় পুজো হল 'বুড়ি মা'র পুজো।
হুগলির ভদ্রেশ্বরে পূজিত হন বুড়ি মা। বুড়ি মায়ের পুজো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন। কিন্তু কী ভাবে শুরু হয়েছিল এই পুজো?
জনশ্রুতি অনুযায়ী রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সূত্র ধরেই নাকি ভদ্রেশ্বরে শুরু হয় বুড়ি মায়ের পুজো। এই পুজো প্রায় ২৩০ বছরের বেশি পুরনো। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী নাকি চন্দননগরে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন চাউলপট্টি বাজারে। এর কিছু বছর পরেই ভদ্রেশ্বরে তেঁতুলতলায় শুরু হয় বুড়ি মায়ের পুজো। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আরেক দেওয়ান দাতারাম শূর নাকি এই পুজো শুরু করেছিলেন।
এ ছাড়াও আরও এক কাহিনি শোনা যায়। নবাব মুর্শিদকুলি খাঁয়ের হাতে এক বার বন্দি হন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। সেই সময় তাঁর দেওয়ান দাতারাম রাজার প্রতিষ্ঠিত মূর্তি নিয়ে এই তেঁতুলতলায় পালিয়ে আসেন। এর পর সেই দেবীমূর্তি এখানে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু হয়। সেই থেকে আজও ধারাবাহিক ভাবে বুড়ি মা পূজিত হয়ে আসছেন।
বুড়ি মায়ের পুজোর জন্য কোনও চাঁদা তোলা হয় না। ভক্তরা যা দান করেন তাতেই পুজো হয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী বুড়ি মা নাকি ভীষণই জাগ্রত। ভক্তদের তিনি খালি হাতে ফেরান না। বহু মানুষ এখানে দণ্ডি কাটেন তাঁদের মনের ইচ্ছে পূরণ হলে। গোটা বছর ধরেই বুড়ি মায়ের মন্দিরে কাঠামো এবং পটে নিত্য পুজো হয়। আগে এই পুজোয় বলি দেওয়ার চল থাকলেও, বর্তমানে আর তা হয় না।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।