—প্রতীকী ছবি।
১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এক সংস্থায় কাজ করছেন তরুণ। চাকরিতে যোগ দেওয়ার চার বছর পর থেকেই সংস্থার সঙ্গে নতুন চুক্তি হয় তাঁর। তরুণকে এমন এক পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, যেখানে তাঁকে দরকার পড়লেই উপস্থিত থাকতে হবে। প্রথম দিকে তাঁর কাজ নিয়ে ঊর্ধ্বতনেরাও সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু গত এক বছর ধরে তরুণকে নিয়ে একের পর এক অভিযোগ আসতে শুরু করেছে। কাজ চলাকালীন নাকি তরুণের দেখা মেলে না। এমনকি, ফোন অথবা মেসেজ করার পরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাত্তা পাওয়া যায় না, অভিযোগ এমনটাই। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয় না।
অভিযোগের ভিত্তিতে দফতরের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। জানা যায়, কাজের মাঝে লম্বা বিরতি নিয়ে শৌচালয়ে চলে যান তরুণ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শৌচালয়েই কাটান তিনি। এমনকি, একটানা চার ঘণ্টাও শৌচালয়ের ভিতর ছিলেন তরুণ। এমন অপেশাদার আচরণের জন্য সংস্থার তরফে তাঁকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন তরুণ। আদালতের তরফে সংস্থাকে লক্ষ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই ঘটনাটি পূর্ব চিনের জিয়াংসু প্রদেশে ঘটেছে। তরুণের নাম লি। ২০১০ সালে চাকরিতে যোগ দেন তিনি। চার বছর পর সেই সংস্থার সঙ্গে নতুন ভাবে চুক্তিবদ্ধ হন লি। তাঁকে এমন পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়, যা সামলানোর জন্য তৎপরতার প্রয়োজন। প্রথম কয়েক বছর নতুন পদের দায়িত্ব ভাল ভাবেই সামলাচ্ছিলেন তিনি। লি-এর কাজের প্রশংসাও করতেন সংস্থার ঊর্ধ্বতনেরা। কিন্তু গত বছর থেকেই তাঁর উপর চটতে শুরু করেন ঊর্ধ্বতনেরা।
অধিকাংশের দাবি, কাজের সময় লি-কে ফোন অথবা মেসেজ করলে পাওয়া যায় না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা কোনও উত্তরও দেন না লি। ঊর্ধ্বতনদের অভিযোগের ভিত্তিতে অফিসের সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয়। ফুটেজ থেকে জানা যায় যে, শৌচালয়ে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটান লি। কাজে ফাঁকি দিয়ে লম্বা বিরতি নেওয়া এবং শৌচালয়ে গিয়ে অধিকাংশ সময় কাটানোর জন্য লি-কে চাকরি থেকে বার করে দেওয়া হয়। লি-এর অপেশাদার আচরণ লক্ষ করে তাঁর প্রতি বিরক্ত হয়েছিলেন ঊর্ধ্বতনেরা।
চাকরি খোয়ানোর পর সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন লি। আদালতে গিয়ে তিনি জানান, ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাস থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অর্শরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। লি-এর দাবি, সে কারণে মাঝেমধ্যে দীর্ঘ সময়ের জন্য শৌচালয়ে যেতে হত তাঁকে। এমনকি, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে অস্ত্রোপচারও হয় লি-এর। প্রেসক্রিপশন থেকে শুরু করে হাসপাতালের সমস্ত বিল আদালতে পেশ করেন তিনি। সংস্থার দাবি, লি তাঁর অসুস্থতার কথা কখনও অফিসে জানাননি।
এমনকি, শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে কখনও আলাদা ভাবে ‘সিক লিভ’ও নেননি। বিষয়টি নিয়ে একেবারেই অবগত ছিলেন না সংস্থার ঊর্ধ্বতনেরা। শেষ পর্যন্ত আদালতের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় যে, লি-কে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার জন্য সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সংস্থার তরফে লি-কে ৩০ হাজার ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা) ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।