অযোধ্যার রামমন্দির। —ফাইল চিত্র।
কাল চলতি লোকসভার শেষ দিন। শেষ দিনে সংসদের উভয় কক্ষে অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে স্বল্পমেয়াদি আলোচনার প্রস্তাব শাসক শিবির থেকে আসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। অনেকের মতে, শেষ দিনে রামমন্দির নিয়ে আলোচনা করে অধিবেশন ভঙ্গ করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। লক্ষ্য রামমন্দির নির্মাণকে হাতিয়ার করে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের বার্তা দেওয়া।
পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজই ছিল সংসদের শেষ দিন। কিন্তু গত পরশু সংসদের অধিবেশন এক দিন বৃদ্ধি করার প্রস্তাব আনে শাসক পক্ষ। যাতে আর্থিক শ্বেতপত্র নিয়ে শনিবার সংসদে আলোচনা করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আজ লোকসভায় সেই আর্থিক শ্বেতপত্র নিয়ে আলোচনা শেষ হয়ে যাওয়ায় স্বভাবতই শনিবার কী নিয়ে আলোচনা হবে, তা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে রাতের দিকে জানা যায়, অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষেই স্বল্পমেয়াদি আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক শিবির। এ ছাড়া কাল লোকসভা অধিবেশনের শেষ দিন হওয়ায় বিদায়ী ভাষণ দেবেন বিভিন্ন দলের লোকসভার নেতারা। বক্তব্য রাখতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য দিকে রাজ্যসভায় আগামিকাল শ্বেতপত্র নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি রামমন্দির নিয়ে আলোচনা হওয়ার রয়েছে। রামমন্দির সংক্রান্ত প্রস্তাবটি আনার কথা রয়েছে বিজেপি সাংসদ কে লক্ষ্মণ, সুধাংশু ত্রিবেদী ও রাকেশ সিন্হার। লোকসভায় ওই প্রস্তাবটি আনতে পারেন সত্যপাল সিংহ, প্রতাপচন্দ্র ষড়ঙ্গী, ও সন্তোষ পাণ্ডে।
সংসদে রামমন্দির নিয়ে আলোচনায় বিরোধী দলগুলির অবস্থান কী হতে পারে তা নিয়েও রাত থেকে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন না গত ২২ জানুয়ারি আমন্ত্রণ থাকলেও রামমন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে অযোধ্যায় হাজিরা দেননি প্রায় কোনও বিরোধী নেতাই। বিরোধী শিবিরের যুক্তি ছিল, রামমন্দির প্রতিষ্ঠকে বিজেপি নিজেদের দলের অনুষ্ঠানে পরিণত করে ফেলেছে। অধিকাংশ বিরোধী দলের বক্তব্য ছিল, তাঁরা রামমন্দির বা রামলালার বিরুদ্ধে নন, যে ভাবে বিষয়টিতে বিজেপি রাজনৈতিক রং দিয়েছে তাতে আপত্তি রয়েছে বিরোধীদের। তাঁদের বক্তব্য, সময় মতো তাঁরাও অযোধ্যায় যাবেন।
প্রশ্ন হল, রামলালা নিয়ে যদি সংসদের উভয় কক্ষে আলোচনা হয় সে ক্ষেত্রে কী করবেন বিরোধীরা? তাঁরা কি আলোচনায় যোগ দেবেন? না কি আলোচনায় এড়িয়ে যাবেন? আলোচনায় যোগ দিলে সে ক্ষেত্রে রামমন্দির নির্মাণকে স্বাগত জানানো ছাড়া উপায় থাকবে না বিরোধীরা। যা ঘুরিয়ে দলের কৃতিত্ব বলে প্রচারের সুযোগ পাবেন বিজেপি নেতৃত্ব। অন্য দিকে আলোচনা এড়িয়ে গেলে নতুন করে বিরোধীদের হিন্দু-বিরোধী বলে দাগিয়ে দেওয়া সুযোগ পাবেন বিজেপি নেতৃত্ব। কংগ্রেসের এক নেতার হতাশ মন্তব্য, “কী আর করা যাবে! আলোচনা হলে যোগ দিতে হবে।” সব মিলিয়ে সংসদের শেষ দিনের শেষ প্রহরে নরেন্দ্র মোদীর কৌশলে নতুন করে প্যাঁচে বিরোধী নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy