E-Paper

সংখ্যালঘু কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘লিড’ কম, দাবি বামের

২০০৪ সালে তৎকালীন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জুলুবাবুকে হারিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী জ্যোর্তিময়ী সিকদার। সে-ই শেষ। তার পর থেকে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে একটানা জিতে আসছে তৃণমূল।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ০৮:১৬
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

সংখ্যালঘু এলাকায় ভোট কেটে সিপিএম কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘পথের কাঁটা’ হয়ে উঠল কি না তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে, ভোটের আগে যতটা ভাবা হয়েছিল, আদৌ কি ততটা ভোট বাড়ল সিপিএমের? না কি আবার হতাশ হতে হবে বামেদের? ভোটের পর থেকে এই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে, কারণ সিপিএমের প্রাপ্ত ভোটের উপরেই কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের ভাগ্য ঝুলছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।

২০০৪ সালে তৎকালীন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় ওরফে জুলুবাবুকে হারিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী জ্যোর্তিময়ী সিকদার। সে-ই শেষ। তার পর থেকে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে একটানা জিতে আসছে তৃণমূল। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমেছে সিপিএমের ভোটও। ২০১৪ সালে এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রায় সাড়ে ২৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। ২০১৯ সালে তা কমে মাত্র নয় শতাংশে দাঁড়ায়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও তা আরও এক শতাংশ কমেছে। তবে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে বামেদের ভোট আবার এক লাফে বেড়ে প্রায় ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে তলানিতে ঠেকে যাওয়া কংগ্রেসের ভোটও বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ছয় শতাংশে। ফলে বাম-কংগ্রেসের যৌথ ভোট বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২৭ শতাংশ। প্রশ্ন হল, লোকসভা ভোটে সেই প্রবণতা অক্ষুণ্ণ থাকবে কি না।

এ বার ভোটে কয়েকটি জায়গা ছাড়া সে ভাবে বুথ দখল, ছাপ্পা বা সন্ত্রাসের অভিযোগ তেমন ওঠেনি। অনেকটাই আবাধ ভোট হয়েছে। এখন সব দলই দাবি করছএ, ভোটারেরা তাদের সঙ্গে আছেন। জেলা তৃণমূলের এক নেতার দাবি, “কেন্দ্রে বিজেপি দূর্বল না হওয়া পর্যন্ত সংখ্যালঘুরা লোকসভা ভোটে আমাদের ছেড়ে সিপিএমের সঙ্গে যাবেন না।” আবার সিপিএম নেতাকর্মীদের একাংশের দাবি, চাপড়ায় তাঁরা তুলনামূলক ভাবে ভাল ফল করবেন। তার জেরে এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ‘লিড’ গত বারেরর ৫০ হাজার থেকে ৩০-৩৫ হাজারে নামতে পারে। একই আশঙ্কা রয়েছে তৃণমূলের একটা অংশের, এমনকি বিজেপির একাংশেরও। তবে মহুয়া মৈত্রের ঘনিষ্ঠদের দাবি, এ বার ‘লিড’ বেড়ে ৫৫-৬০ হাজার হতে পারে।

বামেদের একাংশের ধারণা, পলাশিপাড়া বিধানসভা এলাকাতেও তাদের ভোট বাড়ায় ‘লিড’ অনেকটাই কমবে তৃণমূলের। মহুয়া-বিরোধী বলে পরিচিত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বেরও দাবি, গত বারের প্রায় ৩৬ হাজারের ‘লিড’ কমে ২০ হাজারের নীচে নেমে যেতে পারে। যদিও মহুয়াপন্থীদের দাবি, ‘লিড’ ২৫ হাজারের বেশি হবেই। কালীগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রায় ৩৭ হাজার ভোটের ‘লিড’ পেয়েছিল। বামেদের একাংশের দাবি, এই এলাকা থেকে এ বার ১৫ হাজারের মতো ‘লিড’ পেতে পারে তৃণমূল। যদিও মহুয়াপন্থীদের দাবি, এবার এই এলাকায় ‘লিড’ আরও বেড়ে প্রায় ৪০ হাজারে গিয়ে দাঁড়াবে।

বাস্তবে কি আদৌ এমনটা ঘটতে পারে যাতে বিপদে পড়তে পারেন তৃণমূল প্রার্থী? অনেকেই কিন্তু সেই সম্ভাবনা দেখছেন না। তাঁরা বরং মনে করছেন, বামেদের ভোট কিছুটা বাড়লেও সেটা ১ লক্ষ ৭০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে আটকে যেতে পারে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসের দাবি, “শুধু সংখ্যালঘু কেন, সকলেই তৃণমূল আর বিজেপির নকল যুদ্ধ ধরে ফেলেছে। নিজেদের জীবন-জীবিকার স্বার্থেই মানুষ আমাদের বেছে নিয়েছেন।” যদিও তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের দাবি, “মানুষের কাছে স্পষ্ট যে তৃণমূলই একমাত্র বিজেপির বিরোধিতা করছে। বাকিরা ভোট কেটে বিজেপিকে সাহায্য করতে চাইছে। তাই এ বারও মানুষ তৃণমূলকে বিপুল ভোটে জয়ী করবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 TMC CPM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy