Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

হাসিনার প্রত্যুত্তর: বিএনপি জমানায় চিন-বাংলাদেশ গোপন প্রতিরক্ষা চুক্তি ফাঁস

গত ৭ এপ্রিল ভারত সফরে হাসিনার সব চুক্তিতেই নাকি দেশ বেচার অঙ্গীকার। বিরোধীরা এ ভাবে যতটা পারছেন বিঁধছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। ভারতের মতলবে পা পড়লে নাকি রক্ষে নেই। হড়কে, আছড়ে, ছন্নছাড়া। সর্বনাশ হবে বাংলাদেশের।

এপ্রিলের সেই সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এপ্রিলের সেই সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ১৫:২৭
Share: Save:

গত ৭ এপ্রিল ভারত সফরে হাসিনার সব চুক্তিতেই নাকি দেশ বেচার অঙ্গীকার। বিরোধীরা এ ভাবে যতটা পারছেন বিঁধছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে। ভারতের মতলবে পা পড়লে নাকি রক্ষে নেই। হড়কে, আছড়ে, ছন্নছাড়া। সর্বনাশ হবে বাংলাদেশের। শেখ হাসিনা জেনেশুনে নাকি সেই ভুলই করেছেন। সর্বস্বান্ত হওয়ার বাকি নেই। নির্বাচনে ভারতকেই আসামির কাঠগড়ায় তোলার তোড়জোড়। তিস্তা চুক্তি এখনও না হওয়ায় হাতে আরও বড় অস্ত্র। তারা বলছে, এই তো ভালবাসার ছিরি। তেষ্টার পানি দিতেও ভারত নারাজ। তিস্তার একফোঁটা জলও সোনার চেয়ে দামি। গাজলডোবা ব্যারেজে বেঁধে রেখেছে নদীটাকে।

বিরোধীরা যা খুশি বলে যাবে, নিঃশব্দে সয়ে যাওয়ার মতো নেত্রী নন হাসিনা। কড়ায় গন্ডায় জবাব দিতে তৈরি। ভারত সফর থেকে ফিরেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, তিস্তার জল আনবেনই। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। হাসিনা এখানে-ওখানে বিরোধী প্রশ্নের জবাব দিলেও সংসদে দাঁড়িয়ে কোনও কথা বলেননি। এ বার সংসদীয় কক্ষে দাঁড়িয়েই বিরোধীদের লক্ষ্য করে পাল্টা এমন তির ছুড়েছেন, যা ঠেকানো বিএনপি'র দুঃসাধ্য। হাসিনা জানিয়েছেন, আওয়ামি লিগ সরকার কখনও দেশের স্বার্থবিরোধী কোনও চুক্তি করেনি, করবেও না। বরং বিএনপি-ই এতে অভ্যস্ত। তারা সরকারে থাকতে চিনের সঙ্গে গোপনে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিল। কাজটা ছিল এক তরফা। কেউ যাতে জানতে না পারে, সে দিকে লক্ষ্য রেখেছিল। গোপনীয়তা বজায় রাখতে সংসদেও বিষয়টি জানানো হয়নি। মানুষ টের পেলে কেলেঙ্কারি হতে পারে ধরে নিয়ে ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল।

হাসিনার কথায় স্পষ্ট, চিনকে অন্যায় প্রশ্রয় দিয়েছিল বিএনপি সরকার। যাতে ভারতকে বাগে রাখতে চিনের সুবিধে হয়। চিন একই ধরনের কাজ করেছিল পাকিস্তানে সামরিক তৎপরতা দেখিয়ে।

বাংলাদেশে এখন চিনের ভূমিকা বদলেছে। তারা সহযোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু নির্মাণে তাদের অবদান অতুলনীয়। ১২ মার্চ চিনের দুটো সাবমেরিন কমিশনড হয়েছে চট্টগ্রাম নৌঘাঁটিতে। হাসিনা রক্ষণাবেক্ষণে যত্নবান হতে বলেছেন। চালাতে আর তদারকীতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন। বাংলাদেশ-ভারতের মাঝে বহমান বঙ্গোপসাগরেই হবে সাবমেরিনের বিচরণক্ষেত্র। নৌবাহিনীকে উন্নত করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান। তাঁর আশাপূরণের রাস্তা প্রশস্ত।

আরও পড়ুন: দিনাজপুর সীমান্তে চোরা পাতাল পথের হদিশ কিন্তু চিন্তা বাড়াল

চিনের সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্যটা অবশ্য স্পষ্ট নয়। ভারতকে বেকায়দায় ফেলাটাই যদি তাদের লক্ষ্য হয়, সেটা সমর্থন যোগ্য হতে পারে না কখনই। সংসদেই হাসিনা জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি হয়েছে, এমন বিবৃতি সম্পূর্ণ অসত্য এবং মনগড়া, অবিবেচনাপ্রসূত। বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা মাত্র। হাসিনার মন্তব্যকে মিথ্যে প্রমাণের দায়িত্ব নেয়নি বিরোধীরা। এটা যদি শুধু বিএনপি-র ভোট বাড়ানোর কৌশল হয়, তাহলেও মানা যায় না। প্রতিবেশী দেশকে শত্রু বানিয়ে ফায়দা তোলাটা রাজনৈতিক দেউলেপনারই নামান্তর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE