Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

প্রতিরক্ষায় চুক্তি নয়, দু’টি মউ ঢাকা ও দিল্লির

দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ঘণ্টা বাজিয়ে সুপ্রতিবেশীকে সরব সতর্ক করা নয়। বরং মউ-এর মোড়কে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড় মাপের সমঝোতার পথে হাঁটতে চলেছে ভারত। শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু’টি সমঝোতাপত্র সই হবে।

শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনা

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ঘণ্টা বাজিয়ে সুপ্রতিবেশীকে সরব সতর্ক করা নয়। বরং মউ-এর মোড়কে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বড় মাপের সমঝোতার পথে হাঁটতে চলেছে ভারত। শেখ হাসিনার আসন্ন সফরে দু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু’টি সমঝোতাপত্র সই হবে। বাংলাদেশকে সমরাস্ত্র কেনার জন্য দেওয়া হবে ৫০ কোটি ডলার ঋণ-সাহায্য। সব মিলিয়ে এর পর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ভূকৌশলগত রাজনীতিতে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় পৌঁছনো যাবে বলে আশা করছে নয়াদিল্লি।

এটা বাস্তব যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বেজিং-ঢাকা অক্ষ চাপ বাড়িয়েছে নয়াদিল্লির। দীর্ঘদিন আগেই সামরিক সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে চিনের চুক্তি হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিগুলির উপর নজরদারি এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দখলদারি রাখতে বেজিং-এর সক্রিয়তা বাড়ছে। আর সেই পরিকল্পনা রূপায়ণে ঢাকাকে পাশে পেতেও ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে চিন। পদ্মা সেতু থেকে শুরু করে বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিকাঠামোয় অকাতরে অর্থ ঢালছে বেজিং। গত দু’বছরে বাংলাদেশকে আড়াই

হাজার কোটি ডলার অর্থসাহায্য করেছে চিন, যার একটা ভাল অংশ সামরিক ক্ষেত্রে।

আরও পড়ুন: বন্ধুত্ব হোক, বৈরিতা নয় এই নীতি নিয়ে পথ চলছি

এই প্রেক্ষাপটে হাসিনার আসন্ন সফরে প্রতিরক্ষা নিয়ে সমঝোতাপত্রে সই-এর বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের ঘরোয়া রাজনীতিতে ভারতের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে বিরোধিতার ঝড় উঠেছে। সে দেশের বিএনপি-জামাত জোট এবং নাগরিক সমাজের একাংশ এ কথাও বলছে, যে অর্থের বিনিময়ে নিরাপত্তাকেও ভারতের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে হাসিনা সরকার। আর তাই এ ব্যাপারে কিছুটা সতর্কতার সঙ্গে নিচু তারে বিষয়টিকে বাঁধার পরিকল্পনা করা হয়েছে। লক্ষ্য— এক, বাংলাদেশে হাসিনা সরকারকে চাপে না ফেলা। দুই, চিনের উদ্দেশেও খুব ঢাক ঢোল পিটিয়ে কোনও বার্তা না দেওয়া। পাশাপাশি ঘরোয়া সমালোচনার প্রতিবাদে হাসিনা জানিয়েছেন যে তিনি ভারতের সঙ্গে যখন চুক্তি করবেন, সেখানে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখেই করবেন। দেশবাসীর কাছে কিছুই গোপন রাখবেন না। কিন্তু প্রতিরক্ষার মতো বিষয়ে কিছু গোপনীয়তা রাখা ভারতীয় কৌশলের মধ্যে পড়ে। তাই বেণী না ভিজিয়ে স্নান করার একটি কৌশল হিসাবে এখনই ভারত-বাংলাদেশ সমঝোতাকে চুক্তির আকার না দিয়ে, তার আগের ধাপ ‘মউ’-সই করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সাউথ ব্লকের বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন আজ জানিয়েছেন, মোট দু’টি সমঝোতাপত্রে সই করবে দু’দেশ। দু’দেশের মধ্যে চলতি সামরিক সহযোগিতাগুলিকে একটি ছাতার তলায় নিয়ে এসে একটি সামগ্রিক ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ তৈরি করা হবে। যার মধ্যে রয়েছে সাবমেরিন-প্রশিক্ষণ, তথ্য সহযোগিতা, উপকূলরক্ষীদের মধ্যে সহযোগিতা, সেনাপ্রধান পর্যায়ে আদানপ্রদানের মতো বিষয়। এ ছাড়া ভারত থেকে সমরাস্ত্র এবং সামরিক প্রযুক্তি কেনার জন্য বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sheikh Hasina Defense Treaty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE