Advertisement
E-Paper

বাংলাদেশের পুলিশ কর্তা এ কী কথা কন!

হাত বাড়ালেই পুলিশ হলে কথা নেই। নিশ্চিন্ত জীবনযাপন। বিপদ আপদ দাবিয়ে সহজ চলাফেরা। পুলিশ অনেকটা বালিশের মতো। মাথা রেখে আরামে ঘুমোন যায়। সরলে নিদ্রাভঙ্গ, অস্বস্তি। সেইটুকু করে বলেই পুলিশের ওপর এত ভরসা। তারা তো অন্য গ্রহের জীব নয়। সমাজের একজন। তাদেরও সংসার আছে।

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৬ ১৩:৪৩
এ কে এম শহিদুল হক, বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান।

এ কে এম শহিদুল হক, বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান।

হাত বাড়ালেই পুলিশ হলে কথা নেই। নিশ্চিন্ত জীবনযাপন। বিপদ আপদ দাবিয়ে সহজ চলাফেরা। পুলিশ অনেকটা বালিশের মতো। মাথা রেখে আরামে ঘুমোন যায়। সরলে নিদ্রাভঙ্গ, অস্বস্তি। সেইটুকু করে বলেই পুলিশের ওপর এত ভরসা। তারা তো অন্য গ্রহের জীব নয়। সমাজের একজন। তাদেরও সংসার আছে। নিজেদের স্ত্রী-সন্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাদেরই। নিজের ঘর বাঁচানোর তাগিদ যতটা, অন্য পরিবার রক্ষায় ততটা সতর্কতা না থাকলে কর্তব্যচ্যুতির আশঙ্কা। পুলিশ সমাজের বন্ধু। বন্ধুত্বের দায়িত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। বাইরের শত্রু রোখে সেনাবাহিনী, পুলিশ আটকায় ভিতরের সমাজবিরোধীদের। যাতে সমাজ স্বচ্ছ, সুন্দর থাকে। অন্ধকারের উপদ্রবে মানুষকে অতিষ্ঠ হতে না হয়।

পুলিশ আছে বলেই জনপদ জঙ্গল নয়। যেখানে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা, সেখানে কিন্তু অরণ্যের অনিশ্চয়তা। মানুষ ভয়ে সিঁটিয়ে থাকে। দুর্বৃত্তরা দাপিয়ে বেড়ায়। ডেকে ডেকে পুলিশের সাড়া না পেয়ে, মানুষ চেয়ে থাকে অন্তিম পরিণতির দিকে। ঢাকার কলাবাগান লেকসার্কাসে ইউএসএআইডির কর্মকর্তা জলহাজ মাম্মাস, তাঁর বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় খুন হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্য। পুলিশকে ঘিরে অজস্র প্রশ্ন। এ ঘটনা ঘটল কী করে। জায়গাটা এমন, বাইরের লোক এসে সহজে বেরোতে পারে না। বাড়ি দিয়ে ঘেরা অভিজাত বসতি। দুষ্কৃতীদের ঠাঁই নেই। সেখানকার নিরাপত্তার দায়িত্ব তো পুলিশের। তারা কী করছিল। পুলিশের অদ্ভুত জবাব, ঘরে ঘরে পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রত্যেককে নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে হবে। নিজের নিরাপত্তা, প্রতিবেশীর নিরাপত্তা, এলাকার নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন হবে।

পুলিশের কণ্ঠে রাজনৈতিক নেতার সুর। পুলিশ প্রধান একেএম শহীদুল হক ‘জনগণ’ শব্দটা বার বার উচ্চারণ করেছেন। বলেছেন, নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে জনগণকে। তাহলে পুলিশ কী করবে? তারা দর্শকের ভূমিকা নেবে? সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা যখন নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপাবে তখন তারা দূর থেকে মানুষকে উৎসাহ যোগাবে? হত্যাকান্ডের পর তদন্ত করতে আসবে?

আরও পড়ুন:

বন্দি সংশোধনের আগে নিজেদের সংশোধন চাই, শেখাচ্ছেন হাসিনা

পুলিশের প্রস্তাব, সব বাড়িতে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হবে। যাতে ফুটেজ দেখে অপরাধীদের ধরা সহজ হয়। সেটা তো পরের কথা। খুন হলে ক্যামেরার ছবি দেখে, মৃত মানুষটাকে ফেরানো যাবে না। খুনিকে ধরা গেলেও নয়। পুলিশ নিজেই যদি গা বাঁচাতে চায়, অন্যের প্রাণ বাঁচাবে কী করে।

অনেক বড় অপারেশনে পুলিশ সফল হয়েছে। আবার চূড়ান্ত ব্যর্থতার নজিরও তাদের আছে। কাজে সাফল্য বা ব্যর্থতা দুই থাকে। কাজটাই বন্ধ হলে গোলমাল। পুলিশ যদি মানুষের নিরাপত্তার দায় এড়িয়ে সরে দাঁড়ায়, দুর্বৃত্তরা জঙ্গলের রাজত্ব তৈরি করবে। তারাও ভাববে, পুলিশ যখন তফাতে, আমাদের কেল্লাফতে।

Bangladesh Police Controversial Remark Voice of Politicians
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy