মর্যাদার দাবি: ওইখানে জঙ্গলে সহযোদ্ধাদের কবর। বাংলাদেশের সেনারবাদী গ্রামের প্রান্তে দাঁড়িয়ে দেখাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা বাহার মিয়াঁ মালদার। নিজস্ব চিত্র
বাংলাদেশের প্রায় আড়াইশো মুক্তিযোদ্ধার কবর অবহেলায় পড়ে রয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। আখাউড়া লাগোয়া আগরতলার রামনগর অঞ্চলের সীমান্তে। ৪৭ বছরেও সেই কবরস্থান উপযুক্ত মর্যাদা না-পাওয়ায় ক্ষুব্ধ তাঁদের সহযোদ্ধারা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া আখাউড়া, কসবা, মনতলা, কুমিল্লা ও বিলোনিয়া এলাকার আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য আগরতলা জি বি হাসপাতালে নিয়ে আসা হত। ত্রিপুরার প্রবীণ বাসিন্দা শহিদ ভুঁইয়া জানাচ্ছেন, এখানে মৃত্যু হলে মুক্তিযোদ্ধাদের দেহ গাড়ি করে রামনগর অঞ্চলের সীমান্তে এনে কবর দেওয়া হত। জায়গার অভাবে একটি কবরে পাঁচ-ছ’জনকে এক সঙ্গে কবর দিতে হত। সেই কবরস্থান এখনও রয়েছে।
আখাউড়া মুক্তি দিবস গেল গত ৬ ডিসেম্বর। সেই উপলক্ষে ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের সেনারবাদিতে এক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন আখাউড়া মুক্তিযোদ্ধা কম্যান্ডের সহকারী কম্যান্ডার (সাংগঠনিক) বাহার মিয়াঁ মালদার। এত দিনেও সহযোদ্ধাদের কবর মর্যাদা না-পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১৭ বছরের সাজা মাথায় ভোটের দৌড়ে ঠাঁই নাই খালেদার
ভারতের সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের সেনারবাদি গ্রামে দাড়িয়ে মহম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘‘৪৭ বছর ধরে একটি দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কবর অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এর সংরক্ষণের জন্যে বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে কথা বলে কাজটি সম্পন্ন করতে পারে। ভারতের সঙ্গে এখন সুসম্পর্ক থাকায় এ কাজ সহজ হবে।’’ রফিকুল আলম নিজেও ৩ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি জানান, এই কবরস্থানে আড়াইশোর বেশি মুক্তিযোদ্ধার কবর রয়েছে। আখাউড়া চেকপোস্ট, গাজির বাজার, কর্নেল বাজার এলাকায় যাঁরা পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদেরও এখানে এনে কবর দেওয়া হয়েছে। দুই দেশের সরকারের কাছে মুক্তিযোদ্ধারা দাবি জানিয়েছেন, এই কবরস্থান সংরক্ষণ করে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হোক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে রেলপথে জুড়ছে কলকাতা-শিলিগুড়ি
কবরস্থানটি কী ভাবে সংরক্ষণ করা যায় তা দেখতে গত মাসে আগরতলার বাংলাদেশের উপদূতাবাসের কর্মকর্তারা ঘুরে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের তখনকার সহকারী হাইকমিশনার মহম্মদ শাখাওয়াত হুসেন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কাছে তাঁরা একটি রিপোর্ট পাঠাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy