Advertisement
১১ মে ২০২৪
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রস্তাব সেই তিমিরে: কয়লা ব্লক বণ্টন বাতিলের জের

ফের ৩টি খনি পেতে দরপত্র দিচ্ছে রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম

নতুন করে ৩টি কয়লা খনি হাতে পেতে দরপত্র দাখিল করছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট গত সেপ্টেম্বরে ২১৪টি খনি ব্লক বণ্টন বাতিল করার জেরে বিপাকে পড়ে নিগম। ১৯৯৩ সাল থেকে বণ্টন করা ওই সব খনির মধ্যে ছিল তাদের ৫টি খনি। প্রথম ধাপে ৩৬টি কয়লা খনি দরপত্রের মাধ্যমে ফের বণ্টন করবে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক। ওই খনিগুলির মধ্যে থেকেই ৩টি পাওয়ার দৌড়ে দরপত্র জমা দিচ্ছে নিগম।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৫
Share: Save:

নতুন করে ৩টি কয়লা খনি হাতে পেতে দরপত্র দাখিল করছে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম। অনিয়মের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট গত সেপ্টেম্বরে ২১৪টি খনি ব্লক বণ্টন বাতিল করার জেরে বিপাকে পড়ে নিগম। ১৯৯৩ সাল থেকে বণ্টন করা ওই সব খনির মধ্যে ছিল তাদের ৫টি খনি। প্রথম ধাপে ৩৬টি কয়লা খনি দরপত্রের মাধ্যমে ফের বণ্টন করবে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক। ওই খনিগুলির মধ্যে থেকেই ৩টি পাওয়ার দৌড়ে দরপত্র জমা দিচ্ছে নিগম।

শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুসারে চলতি ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষের মার্চ মাস পর্যন্ত বণ্টন বাতিল হওয়া খনিগুলি ব্যবহার করতে পারবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। তার পর ওই সব খনিতে তাদের কোনও অধিকার থাকবে না। ফলে মার্চ মাসের শেষে আর কোনও কয়লা খনি থাকবে না পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। নতুন করে খনি পেতে গেলে ফের দরপত্র দিয়ে অন্য সংস্থার সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তা পেতে হবে।

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, সেই প্রক্রিয়ায় ৩টি খনি পাওয়ার জন্য দরপত্র দিতে চলেছে নিগম। কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রক রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থাগুলিকে তাদের খনি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেবে বলে এর আগে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানানো হলেও, সেই প্রস্তাব এখনও দিনের আলো দেখেনি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তের কথা সরকারি ভাবে জানানো হয়নি বলেই দরপত্রে অংশগ্রহণের এই উদ্যোগ। কারণ নিজেদের খনিগুলি হাতছাড়া হয়ে গেলে তখন কয়লা পেতে শুধুমাত্র ভরসা করতে হবে কোল ইন্ডিয়ার উপর। বাস্তবে তা সম্ভব নয়। সেই কারণেই দরপত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে ওই কর্তা জানিয়েছেন।

পাশাপাশি, সিইএসসি সূত্রে খবর, তারাও কয়লা পাওয়ার দৌড়ে বেশ কয়েকটি খনির জন্য দরপত্র দিতে চলেছে। তার মধ্যে সরিষাথলিও থাকছে। বাকিগুলির নাম অবশ্য সংস্থা কর্তৃপক্ষ জানাতে চাননি। তবে এর জন্য সিইএসসি পৃথক একটি কমিটি তৈরি করেছে, যারা ওই বিষয়টি দেখাশোনা করছে।

সরিষাথলি খনিটি সিইএসসি-র কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সংস্থার মোট চাহিদার ৫০ শতাংশই আসে এখান থেকে। ফলে ওই খনিটি যাতে হাতছাড়া না হয়ে যায়, তার জন্য সিইএসসি-ও যথাসম্ভব চেষ্টা করবে। আবার রাজ্যের মধ্যেই আসানসোলের কাছে সরিষাথলি খনিটি পাওয়ার জন্য নিগম কর্তৃপক্ষও অঙ্ক কষে দরপত্র জমা দেবে বলেই জানা গিয়েছে। সরিষাথলিতে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ টনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে।

কয়লার জোগান নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম ও সিইএসসি, দু’পক্ষই চিন্তায় রয়েছে। গত কয়েক মাসে সিইএসসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব গোয়েন্কাকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট উত্তর দেননি। তবে আশঙ্কার কথা সবসময়েই তিনি জানিয়েছেন। দরপত্রে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি বিকল্প উপায়ে কয়লা পাওয়ার বিভিন্ন উৎস তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।

কয়লা মন্ত্রক সূত্রে খবর, প্রথম ধাপে যে ৩৬টি খনি দরপত্রের মাধ্যমে বণ্টন করা হব, তার মধ্যে ৩৫টি বিলি করা হবে বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থাগুলির মধ্যে। একটি পাবে কোনও ইস্পাত সংস্থা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় ধাপে ফের ৪৬টি খনি দরপত্রের মাধ্যমে বণ্টন করা হবে, যার মধ্যে ১৬টি দেওয়া হবে বিদ্যুৎ শিল্পকে। বাকিগুলি ইস্পাত, সিমেন্ট প্রভৃতি শিল্পের জন্য বরাদ্দ হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

national agencies coal pinaki bandopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE