অণ্ডাল বিমানবন্দরে নতুন বছরের সকালে। নিজস্ব চিত্র
নববর্ষে অণ্ডালের আকাশে ফের উড়ে এল বিমান। রবিবার সকালে যখন সাদা-লাল রঙের বিমানটিকে দেখা যেতেই স্বস্তির শ্বাস ফেললেন শিল্পাঞ্চলের অনেকে, আবার চালু হল বিমানবন্দর।
রবিবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ দুর্গাপুরের আকাশে দেখা যায় দিল্লি-দুর্গাপুর রুটের এয়ার ইন্ডিয়ার ১২২ আসনের বিমানটি। সকালে তখন কেউ ফিরছেন প্রাতভ্রমণ সেরে। কেউ বাজার করতে বেরিয়েছেন। বিমান দেখে তাঁদের অনেকেই বলেন, ‘‘যাক, আবার উড়ান মানচিত্রে যাক জায়গা পেল দুর্গাপুর।’’
দিল্লি থেকে এ দিন বিমানটি ছাড়ে সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে সেটির অণ্ডালে নামার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ আগেই সেটি নেমে পড়ে রানওয়েতে। এই বিমানেই দিল্লি থেকে এলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তিনি বলেন, ‘‘নববর্ষের দিন ফের বিমান পরিষেবা চালু হল। আসানসোল-দুর্গাপুরের মানুষ এই পরিষেবা উপভোগ করুন। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি জারি থাকায় কোনও অনুষ্ঠান হয়নি।’’ এ দিন দিল্লি থেকে আসার সময়ে ১২২ জন, অণ্ডাল থেকে ফিরে যাওয়ার সময়ে ১১৮ জন যাত্রী ছিলেন বিমানে। বাবুল বলেন, ‘‘প্রথম দিনে এত যাত্রী বেশ উৎসাহব্যঞ্জক।’’
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবি, সোম, বৃহস্পতি ও শুক্রবার— সপ্তাহে চার দিন দিল্লি-দুর্গাপুর রুটে বিমানটি যাতায়াত করবে। এয়ার ইন্ডিয়ার এয়ারবাস এ-৩১৯ দিল্লিতে সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে অন্ডালে পৌঁছবে সকাল ৭টা ৫০ নাগাদ। আবার সেটি অণ্ডাল থেকে সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে উড়ে যাবে। দিল্লি পৌঁছবে সকাল ১০টা ৩৫ নাগাদ।
ফের বিমান পরিষেবা চালু হওয়ার খবরে শিল্পাঞ্চলের সাধারণ মানুষজনের পাশাপাশি খুশি বণিক মহলও। দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি কবি দত্ত বলেন, ‘‘সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে অন্ডাল থেকে ফের উড়ান চালুর আর্জি জানিয়েছিলাম। তা চালু হওয়ায় আমরা খুশি।’’
অণ্ডাল থেকে এর আগে বেশ কয়েক বার বিমান চালু হলেও যাত্রীর অভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ২০১৫ সালের মে মাসে এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী অ্যালায়েন্স এয়ারের ৪৮ আসনের বিমান দিয়ে কলকাতা-অণ্ডাল রুটে প্রথম পরিষেবা চালু হয়। ডিসেম্বরে এয়ার ইন্ডিয়া সপ্তাহে তিন দিন কলকাতা-দিল্লি ভায়া অণ্ডাল রুটে বিমান পরিষেবা শুরু করে। কিন্তু জুনে পর্যাপ্ত যাত্রীর অভাবে পরিষেবা বন্ধ করে দেয় এয়ার ইন্ডিয়া। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি বেসরকারি সংস্থা ওই একই রুটে বিমান পরিষেবা চালু করে। সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় পরিষেবা।
রবিবার থেকে ফের উড়ান মানচিত্রে এল শিল্পাঞ্চল। তবে শিল্পাঞ্চলবাসীর অনেকের মতে, গত কয়েক বছরে পুরনো বেশ কিছু কারখানায় ঝাঁপ পড়েছে। কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। নতুন কোনও বড় বিনিয়োগ দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে শিল্পনির্ভর অর্থনীতির উপরে ভর করে চালু বিমানে যথেষ্ট যাত্রী হবে কি না, সে নিয়ে সংশয় থাকছেই বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy