কলকাতায় অশোক গজপতি রাজু। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।
এয়ার ইন্ডিয়া (এআই) বিলগ্নিকরণে গত ২৮ জুনই নীতিগত ভাবে সায় দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটি নিয়ে লিখিত ভাবে এখনও পর্যন্ত একমাত্র আগ্রহ দেখিয়েছে ইন্ডিগো। তা-ও শুধু তার আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবাটুকু হাতে নিতে প্রাথমিক ভাবে আগ্রহী সস্তার বিমান পরিবহণ সংস্থাটি। এই অবস্থায় বিপুল দেনার বোঝা ঘাড়ে থাকা এআই-কে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে সমস্ত রাস্তাই খোলা রাখার কথা জানালেন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু।
মঙ্গলবার কলকাতায় রাজু জানিয়ে গেলেন, সংস্থা বাঁচাতে সমাজের যে কোনও ক্ষেত্র থেকে আসা যুক্তিগ্রাহ্য পরামর্শ স্বাগত। এ দিন কলকাতা বিমানবন্দরে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ‘‘এয়ার ইন্ডিয়াকে বাঁচাতে বিকল্প উপায়ের খোঁজ চলছে। আমরা চাই, এআই চলুক। সংস্থার কার্যকরী লোকসান (অপারেটিং লস) নেই। কিন্তু ধারের সুদ গুনতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।’’
তবে কি এআই বিক্রি বা বিলগ্নিকরণ না-করে নিজেরাই ফের তা চাঙ্গা করার কথা ভাবছে বিমান মন্ত্রক? কিন্তু বিলগ্নিকরণের ভাবনা ইতিমধ্যেই সায় পেয়েছে মন্ত্রিসভায়। সম্প্রতি ওই পথে হাঁটার কথা বলেছেন বিমান পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী জয়ন্ত সিন্হাও। তা হলে?
বিষয়টি এ দিন খোলসা করেননি রাজু। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের অনেকে বলছেন, বিলগ্নিকরণের কথা বললেও এখনও সে ভাবে আগ্রহী ক্রেতা পায়নি এআই। আন্তর্জাতিক পরিষেবা কিনতে আগ্রহ দেখিয়ে মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছে ইন্ডিগো। বিমানবন্দরের মাটিতে দেওয়া পরিষেবা হাতে নিতে আগ্রহীদের মধ্যে শোনা গিয়েছে বার্ড গোষ্ঠী, সেলেবি-র মতো সংস্থার নাম। গত কয়েক মাসে বারবার জল্পনায় ভেসে উঠেছে টাটাদের নামও। যদিও লিখিত ভাবে আগ্রহ তারা এখনও দেখায়নি। অনেকেরই ধারণা, সংস্থার কতখানি শেয়ার বিক্রি করা যাবে, আগে তার আন্দাজ পেতে চাইছে কেন্দ্র। সব রাস্তা খুলে রাখার কথা বলা তারও একটি কারণ হতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।
কারণ হিসেবে যুক্তি, এআইয়ের ব্র্যান্ড-পরিচিতি নিয়ে সন্দেহ নেই। তাদের আন্তর্জাতিক উড়ানের অনেক রুট লোভনীয় ভাবে লাভজনক। বোয়িং ড্রিমলাইনারের মতো জ্বালানি সাশ্রয়ী বিমান রয়েছে। আছে বিদেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দরগুলিতে ওঠা-নামার অনুমতি। তাই আন্তর্জাতিক শাখাকে আলাদা করলে হয়তো তার জন্য ভাল ক্রেতা মিলবে। কিন্তু তখন বিক্রি করা কঠিন হবে বাকি ব্যবসা। তা তুলনায় কম আকর্ষণীয় হওয়ায় এবং সংস্থার মাথায় ৫০ হাজার কোটি টাকা দেনা চেপে থাকায় আলাদা করে বাকি অংশ বিক্রিতে সমস্যা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা। সম্প্রতি সিন্হা-ও বলেছিলেন, সংস্থার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিষেবা এক সঙ্গে বিক্রি করা হবে। আর এই কারণেই কেন্দ্র এখন সব রাস্তা খুলে রাখতে চাইছে বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy