অতীতের ভূত এখনও তাড়া করে ফিরছে ভারতকে। যে কারণে বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে এই মুহূর্তে এ দেশের অর্থনীতি যথেষ্ট সম্ভাবনাময় এবং লগ্নির পক্ষে আদর্শ মনে হলেও, বাস্তবে তাঁরা দূরত্ব বজায় রেখেই চলছেন। ভারত সম্পর্কে এই ছবি তুলে ধরেছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক রথ্সচাইল্ড। তাদের বক্তব্য, এখন যে কোনও ধরনের কৌশলী বিনিয়োগের পথে পা রাখার আগে বিদেশি লগ্নিকারীরা ভারত সরকারের জমি অধিগ্রহণ বা কর সংক্রান্ত ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতিগুলির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হয়ে নিতে চাইছে।
ভারতের লগ্নি সম্ভাবনা সম্পর্কে রথ্সচাইল্ড ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অমিতাভ মলহোত্র বলেন, ‘‘এ দেশের বাইরে বসবাসকারী ব্যবসায়ী ও অনাবাসী ভারতীয়দের মধ্যে আগে ভারত সম্পর্কে সব কিছুতেই নাক সিঁটকানো ভাব দেখা যেত। সেই তুলনায় এখন নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে তাঁরা অনেক বেশি বিশ্বাস করছে। প্রচুর ব্যবসায়িক চুক্তিও হতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় বিদেশি সংস্থার বিনিয়োগ আনতে হলে বিশ্বাস অর্জনের জায়গাটা আরও বেশি পোক্ত করে তোলা জরুরি।’’
মলহোত্রর মতে, অন্যান্য দেশের লগ্নিকারীরা এখন ইতিবাচক দৃষ্টিতেই ভারতের দিকে তাকাচ্ছেন। কিন্তু তার মানে, ভারতের কোনও সংস্থা কেনার জন্য যে বিদেশি লগ্নিকারীদের লাইন পড়ে যাচ্ছে এমনটা নয়। কারণ, সাম্প্রতিক কিছু সংস্কারকে স্বাগত জানালেও তাঁরা যে অতীতের অভিজ্ঞতাগুলি এখনও ভুলতে পারছেন না, সেটা স্পষ্ট জানিয়েছেন রথ্সচাইল্ড কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নি নীতি হালে কিছুটা আশার আলো দেখালেও, কর-নীতি নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি বলে তাঁদের অভিমত।
মলহোত্র বলেন, ‘‘ভারতে করছাড়ের সুবিধা হয়তো আজ কাউকে আর্কষণ করল। কিন্তু কাল ছবিটা পুরো উল্টে যেতে পারে। আজ কর দিতে হচ্ছে না। কিন্তু কাল আচমকা সরকারের তরফে অতীতের কোনও ঘটনাকে খাড়া করে করের দাবি পূরণ করতে বলা হতে পারে। কোথায় কতটা নিয়ন্ত্রণ রাখা হবে, তার কোনও নিশ্চয়তা না-থাকায় ইতিমধ্যেই হাত পোড়াতে হয়েছে বহু লগ্নিকারীকে। তাই ভারত যে ব্যবসা করার ভাল জায়গা, এটা মন থেকে বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে বিদেশি লগ্নিকারীদের সামনে।’’
বস্তুত, দক্ষ মানব সম্পদ, বিশাল বাজার বা গণতান্ত্রিক রাজনীতির মতো বিষয় ভারতের সামগ্রিক ছবিটাকে আন্তর্জাতিক মহলে যথেষ্ট ইতিবাচক করেই তুলে ধরে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট মহল। কিন্তু অতীতে যা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি হবে না, এই নিশ্চয়তা এখনও পাননি বিদেশি লগ্নিকারীরা। ফলে আস্থা অর্জনের বিষয়টিও এখনও দূরেই রয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে রথ্সচাইল্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy