সর্বদল বৈঠকে মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ও জেটলি। ছবি: পিটিআই।
রাজনৈতিক তাল ঠোকাঠুকিতে সংসদের শীত অধিবেশন যে উত্তপ্ত হতে চলেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারওই। কিন্তু তার মধ্যেও পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) বিল পাশ হবে কি না, তা অনেকটাই নির্ভর করছে ওই করের হার কম রাখা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছনোর উপরে।
বিরোধী দল কংগ্রেস যেমন চায়, জিএসটি-র ঊর্ধ্বসীমা ১৮ শতাংশের আশপাশে বেঁধে দিক কেন্দ্র। যাতে পরে ইচ্ছেমতো তা বাড়ানো না যায়। তাদের মতে, এই হার শিল্পের পক্ষে সুবিধাজনক। ভাল সাধারণ মানুষের জন্যও।
জিএসটি বিল পাশের পক্ষে গোড়া থেকেই নৈতিক সমর্থন জুগিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু করের হার বেশি উঁচুতে না বাঁধার পক্ষপাতী তারাও। এ দিন দিল্লিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ওই হার খুব বেশি হলে, কর ফাঁকির প্রবণতা বাড়বে। তাঁর কথায়, ‘‘শেষমেশ হার কত হবে, জানি না। কিন্তু তা ২৬-২৭% হলে ফাঁকির প্রবণতা থাকবেই।’’
অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের কথায় ইঙ্গিত মিলেছে যে, এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে মরিয়া কেন্দ্রও। তাঁদের হিসাব অনুযায়ী, মদ এবং পেট্রোপণ্যকে বাইরে রেখে এখনকার মতো একই পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে জিএসটির হার হতে হবে ১৮%। কর্তাদের দাবি, ওই হারকে গ্রহণযোগ্য বলে সায় দিতে পারে মুখ্য উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের নেতৃত্বাধীন কমিটিও। উল্লেখ্য, দীর্ঘ দিন এর থেকে বেশি হারে করের পক্ষে সওয়াল করেছে বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি।
যে কোনও মূল্যে এই বিল পাশ করাতে মোদী সরকার যে বদ্ধপরিকর, এ দিন তার স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে সরকার পক্ষের কথাতেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, জিএসটি বিল পাশ হওয়া দেশের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি। এবং এ নিয়ে বিভিন্ন দল ও রাজ্যের সমস্যা শুনতে কথা বলবেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। কিছুটা আশা জাগিয়ে কংগ্রেসের রাহুল গাঁধীও বলেছেন, জিএসটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনায় তাঁরা রাজি। তবে তার জন্য আগে বিরোধী পক্ষের দিকে হাত বাড়াতে হবে কেন্দ্রকে।
আজ দীর্ঘ দিন ধরেই তীরে এসে তরী আটকে আছে জিএসটি বিলের। লোকসভায় পাশ হলেও, তা আটকে গিয়েছে রাজ্যসভায়। অথচ বহু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, শুধু ওই বিল পাশ হলেই এক লাফে দু’শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে বৃদ্ধির হার। লগ্নিতে অনেক বেশি আগ্রহ দেখাতে পারে ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি। নয়ের দশকের পরে তা চিহ্নিত হতে পারে সব থেকে বড় সংস্কার হিসেবে। অনেকে মনে করেন, এই সব কারণেই জিএসটি বিল দ্রুত পাশ করাতে প্রয়োজনে নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত সম্প্রতি দিয়েছেন জেটলি। আলোচনার রাস্তা খোলা রাখার কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রীও।
২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি কার্যকর করতে হলে রাজ্যসভায় তা পাশ করাতে হবে। সেই সঙ্গে তাকে উতরোতে হবে অন্তত অর্ধেক রাজ্যের বিধানসভায়। ফলে কেন্দ্রের হাতে সময় অল্প। এই পরিস্থিতিতে বিল পাশের জন্য করের হার নিয়ে মোদী সরকার কিছুটা নমনীয় হবে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy