Advertisement
০২ মে ২০২৪
Housing Industry

আবাসনে বিক্রিতে প্রভাব ফেলতে পারে কর্মী ছাঁটাইও

অতিমারিতে ঘর থেকে কাজের পরিধি বৃদ্ধি, সার্বিক ভাবে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ ইত্যাদি কারণে পরের দিকে আবাসনের চাহিদা বাড়ছিল।

housing.

সাম্প্রতিককালে কর্পোরেট সংস্থায় ফের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা আগামী কয়েক মাসে প্রভাব ফেলবে এই ক্ষেত্রের চাহিদায়। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫৮
Share: Save:

অতিমারি সামলে ঘুরে দাঁড়ালেও দেশের আবাসন শিল্পের সামনের পথ কতটা মসৃণ, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং তার মোকাবিলায় সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ার জেরে ফ্ল্যাট-বাড়ির চাহিদা ধাক্কা খেয়েছে। আর এ বার শিল্প মহলের সমীক্ষা জানাচ্ছে, এপ্রিলের ঋণনীতিতে স্থির থাকলেও, আগামী দিনে ফের সুদ বাড়লে ধাক্কা খাবে বাড়ি কেনার সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গে উপদেষ্টা মহলের আশঙ্কা, সাম্প্রতিককালে কর্পোরেট সংস্থায় ফের কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা আগামী কয়েক মাসে প্রভাব ফেলবে এই ক্ষেত্রের চাহিদায়।

অতিমারিতে ঘর থেকে কাজের পরিধি বৃদ্ধি, সার্বিক ভাবে অনিশ্চয়তার বাতাবরণ ইত্যাদি কারণে পরের দিকে আবাসনের চাহিদা বাড়ছিল। বিশেষত গৃহঋণের সুদ তলানিতে ঠেকার সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে সচেষ্ট হন অনেকে। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির বেলাগাম দৌড়ের জেরে ভারত-সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলি গত বছর থেকে পর্যায়ক্রমে সুদ বাড়িয়েছে। এ দেশে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক গত বছর মে থেকে টানা ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে রেপো রেট (যে সুদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে ধার দেয় আরবিআই) নিয়ে গিয়েছে ৬.৫ শতাংশে। এপ্রিলের ঋণনীতিতে সুদ একই থাকলেও, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে তা প্রয়োজনে ফের বাড়ানো হবে। তার আগেই অবশ্য দুই অঙ্কের কাছে পৌঁছেছে গৃহঋণের সুদের হার।

সুদ বৃদ্ধির বিষয়টি যে ক্রেতা মহলের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা স্পষ্ট শিল্পের বক্তব্যেই। যে কারণে ঋণনীতির আগে সুদ কমানোর আর্জি জানিয়েছিল আবাসন সংগঠন ক্রেডাই। আর এ বার বণিকসভা সিআইআই এবং আবাসন ক্ষেত্রের উপদেষ্টা সংস্থা অ্যানারকের যৌথ সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯৬ শতাংশই জানাচ্ছেন, আগামী দিনে যদি শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ায়, তা হলে আরও বাড়বে গৃহঋণে সুদও। ফলে তা ফ্ল্যাট কেনার সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলবে। ধাক্কা খাবে আবাসনের চাহিদা। বিশেষত, বসবাসের জন্যই যেখানে ক্রেতাদের মধ্যে ফ্ল্যাটের চাহিদা দেখা যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে সমীক্ষা। একশোর মধ্যে ৭১ জনই এ জন্য বাড়ি কিনতে আগ্রহী।

পাশাপাশি, ৪৬৬২ জনকে নিয়ে ওই সমীক্ষা জানাচ্ছে, সুদের সঙ্গে আবাসনে সংশয় তৈরি করতে পারে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনাও। অ্যানারকের চেয়ারম্যান অনুজ পুরী বলেন, ‘‘সুদের হার বৃদ্ধি সার্বিক চাহিদার ছবির একটা অংশ তুলে ধরে। তার সঙ্গেই বড়-ছোট উভয় ধরনের কর্পোরেটে সাম্প্রতিক ছাঁটাই আগামী দু’টি ত্রৈমাসিকে প্রভাব ফেলতে পারে। যা আবাসনের বাজারে বৃদ্ধিতে ধাক্কা দিতে পারে।’’ তাঁর মতে, বাড়ি কিনতে আগ্রহী অথচ কাজ গিয়েছে এমন ক্রেতা তা কেনা পিছোতে পারেন।

সমীক্ষা বলছে, ৮০% আগ্রহী ক্রেতার কাছেই ফ্ল্যাট-বাড়ির দাম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুদ বৃদ্ধি ছাড়াও গত এক বছরে সম্পত্তির মূল দাম বেড়েছে। রয়েছে সম্পত্তি নথিভুক্তির খরচও। এই সংশয়ের মধ্যেও অবশ্য বড় ফ্ল্যাট কেনার আগ্রহ বেশি। ৪২% অংশগ্রহণকারীই তিনটি ঘরের এবং ৪০% দু’টি ঘরের ফ্ল্যাটের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ৫৮% জানিয়েছেন ৪৫ লক্ষ থেকে ১.৫ কোটি টাকার ফ্ল্যাটের খোঁজের কথা। ৩৬ শতাংশের দাবি, এক বছরের মধ্যেই পুরো তৈরি হতে হবে ফ্ল্যাট-বাড়ি। বাড়ি কেনার সময়ে মূলত তিনটি বিষয় মাথায় রাখছেন ক্রেতারা। কত দ্রুত প্রকল্প শেষ হচ্ছে, পড়াশোনা করার আলাদা জায়গা রয়েছে কি না এবং বাড়িতে আলো-হাওয়া চলাচল পর্যাপ্ত কি না।

তবে অনুজের বক্তব্য, কেনা পিছোনো মানে বিক্রির রাস্তা বন্ধ হওয়া নয়। বরং তা থমকে থাকা। তাই তাঁদের আশা, ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে এই ঝড়-ঝাপ্টা কেটে যাবে এবং আবাসনের বাজারে চাকা ঘুরবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Housing Industry Inflation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE