Advertisement
২১ মে ২০২৪

কলকাতায় ৪জি চালু ভোডাফোনের

বহু দিন ধরেই চলছিল প্রস্তুতি। সোমবার কলকাতায় ৪জি পরিষেবা চালু করল ভোডাফোন। মেট্রো শহরগুলির মধ্যে প্রথম এই শহরেই পরিষেবাটি চালু করল তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:০২
Share: Save:

বহু দিন ধরেই চলছিল প্রস্তুতি। সোমবার কলকাতায় ৪জি পরিষেবা চালু করল ভোডাফোন। মেট্রো শহরগুলির মধ্যে প্রথম এই শহরেই পরিষেবাটি চালু করল তারা।

বছর কয়েক আগে লাইসেন্সের শর্ত পূরণের জন্য কলকাতায় প্রথম ৪জি পরিষেবা চালু করেছিল এয়ারটেল। এই দৌড়ে এ বার সামিল অন্য সংস্থাগুলিও। তবে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় পর্যায়ক্রমে এই পরিষেবা চালু করেছে ভোডাফোন, আইডিয়া-র মতো সংস্থা। সকলেই অবশ্য তাকিয়ে মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স-জিও-র দিকে। ফেব্রুয়ারি-মার্চে তাদেরও দেশ জুড়ে ৪জি পরিষেবা চালু করার কথা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, দিল্লি, মুম্বই বা বেঙ্গালুরুতে গ্রাহক সংখ্যা ও পরিষেবার বহর অনেক বেশি হওয়ায় এই পরিষেবা চালুর প্রস্তুতি নিতে সময় বেশি লাগছে। সেই তুলনায় কলকাতায় প্রস্তুতি পর্ব কিছুটা সহজ হওয়াতেই দেশের মধ্যে প্রথম এই শহরে পরিষেবাটি চালু করল তারা। রাজ্যের অর্থ তথা শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপস্থিতিতে এ দিন পরিষেবা চালু করার পরে সংস্থাটির চিফ অপারেটিং অফিসার নবীন চোপড়া বলেন, ‘‘বেঙ্গালুরুতে এই পরিষেবা এখনই চালু করতে পারলে নিশ্চয়ই খুশি হতাম। কিন্তু সেখানে গোটা ব্যবস্থা চালু করতে সময় লাগছে।’’ তবে তিনি জানান, দিল্লি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরুতে শীঘ্রই তা আসবে। উল্লেখ্য, ভারত ছাড়া আরও ১৯টি দেশে ৪জি পরিষেবা চালু রয়েছে। চোপড়ার দাবি, তাঁরাই প্রথম সংস্থা, যাঁরা ভারতে ৪জি পরিষেবায় প্রথম আন্তর্জাতিক ‘রোমিং’ চালু করলেন।

পুরো কলকাতায় অবশ্য এখনই এই পরিষেবা মিলবে না। আপাতত বিবাদি বাগ, পার্ক স্ট্রিট, আলিপুর, বালিগঞ্জ, সল্টলেক সেক্টর৫, বিমানবন্দর এবং ই এম বাইপাসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক ও আবাসিক এলাকায় মিলবে। জুনের মধ্যে ধাপে ধাপে কলকাতা সার্কেলের সর্বত্রই এই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে, জানান রাজ্যে সংস্থাটির ‘বিজনেস-হেড’ আনন্দ সহায়।

তবে আপাতত ৪জি পরিষেবায় ‘ডেটা’ বা ইন্টারনেট পরিষেবাই দেবে সংস্থাটি। ফোন করা যাবে না। ফোন হবে ২জি বা ৩জি পরিষেবা মারফত। সে ক্ষেত্রে যিনি ৪জি সিম নেবেন, তিনি ৪জি পরিষেবায় ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও ফোন করার সময়ে তা ওই ফোন থেকেই ৩জি বা ২জি-র মাধ্যমে হবে।

ভোডাফোনের দাবি, ৩জি-র চেয়েও ৪জি পরিষেবায় ইন্টারনেটের গতি অনেক বেশি। ফলে কম সময়ে এবং ‘বাফারিং’ ছাড়াই দ্রুত এবং সহজে কোনও তথ্য ‘ডাউনলোড’ ও ‘আপলোড’ যাবে। ৪জি পরিষেবা পোস্ট-পেড ও প্রি-পেড, উভয় ধরনের গ্রাহকের জন্যই মিলবে। তবে এ জন্য ৪জি সহায়ক মোবাইল ফোন থাকা জরুরি। বর্তমান গ্রাহকের যে ‘প্ল্যান’ রয়েছে, সেটিই ৪জি পরিষেবাতেও চালু থাকবে। তবে এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ‘ডেটা প্যাক’-ও রয়েছে তাদের।

গত আট বছরে এ রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার মতো লগ্নি করেছে ভোডাফোন। কর্তারা জানান, চলতি অর্থবর্ষে লগ্নির অঙ্ক প্রায়
৯৮৬ কোটি টাকা। বস্তুত, মোবাইলে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার জেরেই ৩জি, ৪জি-র মতো পরিষেবার চাহিদা বাড়ছে। গোড়ায় ৩জি-র চাহিদা তেমন ছিল না। পরে বাজারে মোবাইল ফোনের জোগান বেড়ে যাওয়ায় তা বৃদ্ধি পায়। ৪জি-র ক্ষেত্রেও অবশ্য ছবিটা অনেকটাই একই। বাজারে ৪জি সহায়ক মোবাইল ফোনের জোগান কম হওয়ায় এই পরিষেবার ব্যাপ্তি নিয়ে একটা বাধা রয়েছে। কিন্তু যে হারে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে ও সেই বাজার ধরার প্রতিযোগিতা বাড়ছে, তাতে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় কোনও সংস্থাই। এ দিন ভোডাফোনের কর্তারাও জানান, এখন সংস্থার মোট ব্যবসার প্রায় ২৫% আসে ‘ডেটা’ পরিষেবা থেকেই। এবং বছরে এই খাতে আয় বাড়ছে ৪৫% হারে। তাঁরা জানান, গ্রাহকদের ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ছে ৮৫% হারে। পাশপাশি ‘স্মার্ট ফোনে’র বাজার বাড়ছে ৫৫% হারে। সব মিলিয়ে ৪জি পরিষেবার চাহিদা আগামী দিনে বাড়বে বলেই আশাবাদী তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE