মধ্যবিত্তের মন জয়। বাড়ি, ফ্ল্যাটের আরও বেশি ক্রেতাকে করের আওতায় এনে কোষাগারের কলেবর বৃদ্ধি। আর সেই সঙ্গে আবাসন শিল্পকে চাঙ্গা করা। কেন্দ্রীয় বাজেটের এক দিন আগে স্ট্যাম্প ডিউটি কমানোর হাত ধরে এক তিরে এই তিন লক্ষ্য ভেদ করতে চাইল রাজ্য বাজেট। বুধবার সেখানে ঘোষণা হল, শহরে ও গ্রামে ৪০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত দামের সম্পত্তিতে স্ট্যাম্প ডিউটি কমছে এক শতাংশ করে।
অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘৪০ লক্ষ টাকা থেকে এক কোটি পর্যন্ত দামের সব সম্পত্তিতে গ্রামে ৬% স্ট্যাম্প ডিউটি কমে ৫% হবে ও শহরে তা ৭% থেকে কমে হবে ৬%।’’
পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের রাজস্ব বাড়াতে আবগারি ও আবাসনই প্রধান ভরসা। আবাসনের ক্ষেত্রে সেই ভরসায় টোল ফেলেছিল নোটবন্দি ও জিএসটির জুজু। মার খেয়েছিল বিক্রি।
লোকসান হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যেরও। নোট বাতিলের প্রথম তিন মাসে স্ট্যাম্প ডিউটি খাতে তারা হারিয়েছে ১,২০০ কোটি। পশ্চিমবঙ্গের কোষাগারেও ৩০ কোটি কম জমা পড়েছে। আর এই লোকসান পূরণ করার বাজার এখনও তৈরি হয়নি বলে দাবি নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের।
উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের গত ছ’মাসের সমীক্ষাও বলছে, গত বছরের তুলনায় ৫% বেড়েছে অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যা। কলকাতায় বিক্রি হয়নি ৩৯ হাজারের বেশি ফ্ল্যাট। যার জন্য সময় লাগবে তিন বছর।
তলানিতে ঠেকা এই বাজার চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে স্ট্যাম্প ডিউটি কমানোর আর্জি বহু দিন ধরেই রাজ্যকে জানিয়েছে ক্রেডাই। একে চাহিদা কম। তার উপরে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এ রাজ্যে স্ট্যাম্প ডিউটি বরাবরই চড়া। শহরে ১২% জিএসটি, ৭% স্ট্যাম্প ডিউটি ও ১.১% রেজিস্ট্রেশন ফি মিলিয়ে ক্রেতাদের উপর করের বোঝা দাঁড়াচ্ছিল ২০%। মার খাচ্ছিল কেন্দ্রের সকলের জন্য ছাদের নীতিও। তাই চাপ ছিল কেন্দ্রেরও।
ক্রেডাইয়ের দাবি, এখন আরও বেশি মানুষ সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশনের পথে হাঁটবেন। করের হার কম হলেও করদাতার সংখ্যা বাড়বে। ফলে বাড়বে আয়। তা ছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, জিএসটি চালুর আগে নির্মীয়মাণ বাড়িতে ৪.৫% পরিষেবা কর ছিল। যা কেন্দ্র পেত। ১২% হারে জিএসটি চালু হওয়ায় কেন্দ্র ও রাজ্য পায় ৬% করে। তাই সে দিকেও রাজ্যের ক্ষতি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy