ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তৃণমূল ছাড়া অন্য দলের সভা আটকাতে কলকাতা পুরসভা ‘প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত’ নিলে তার মোকাবিলায় রাস্তায় লড়াই করবে বিজেপি। পাশাপাশি আইনের পথেও যাবে তারা।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিমত, ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে ধর্মতলার ব্যস্ত এবং জনবহুল অঞ্চলে সভা করে পথচলতি মানুষকে বিপাকে ফেলা উচিত নয়। অতএব, ওই জায়গায় কোনও দলকেই সভা করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তারা তাকে সমর্থন করবে। কিন্তু কোনও একটি দলকে ওই জায়গায় সভা করতে দেওয়া হলে তা মানা হবে না। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ শুক্রবার বলেন, “সে ক্ষেত্রে হয় আমরাও সেখানে সভা করব, নয়তো অন্যরাও যাতে সভা করতে না পারে, তার বন্দোবস্ত করব।”
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ২১ জুলাই তৃণমূল ছাড়া বছরের অন্য কোনও দিন কেউই যাতে ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সেখানে সভা করতে না পারে, তার জন্য ‘প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হবে। নিজেদের মতো করে বামেদের সমাবেশ-স্থল বেছে দেওয়ার চেষ্টাও করতে চাইছে পুরসভা! গত ৩০ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের সভায় সম্মতি দিতে না চেয়ে আদালতের লড়াইয়ে হেরে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল পুরসভাকে। মুখ পুড়েছিল শাসক দল তৃণমূলেরও। শেষ পর্যন্ত অমিতের সভা সেখানেই হয়েছিল এবং সেখানে ভিড়ও হয়েছিল ভালই। এই প্রেক্ষিতেই রাহুলবাবুর কটাক্ষ, “বিজেপির সভার আকার এবং প্রকার দেখে তৃণমূল যে কত ভীত, তা পুরসভার প্রয়াসে প্রমাণিত হচ্ছে।”
ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করা নিয়ে সরকারের সঙ্গে দ্বৈরথে জড়িয়েছে কংগ্রেসও। সারদা কেলেঙ্কারির জেরে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার দাবিতে এবং বিজেপি-র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রতিবাদে ৬ জানুয়ারি ওই জায়গায় সভা করতে চেয়ে এ দিনই কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত এবং যুগ্ম কমিশনার (স্পেশাল)-কে চিঠি পাঠিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু লালবাজার জানিয়ে দেয়, তাদের ওই জায়গায় সভার অনুমতি দেওয়া যাবে না। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের আগে পার্ক সার্কাস ময়দানে রাহুল গাঁধীর প্রচারসভাতেও বাধা দিয়েছিল তৃণমূল প্রশাসন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী প্রশাসনের এই আচরণের নিন্দা করে বলেন, “স্বৈরাচারী শাসন চলছে। ২১ জুলাইয়ের আন্দোলন ছিল কংগ্রেসের এবং ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে কিছু হয়নি। তবু সেখানেই সভা করার জন্য একটা দল অধিকার কায়েম করতে চাইছে।” ৬ জানুয়ারির সভার জন্য তাঁরা বিকল্প জায়গার খোঁজ করছেন বলে জানান অধীরবাবু। এই ব্যাপারে তাঁরা কি আদালতে যাবেন? অধীরবাবুর জবাব, “রাজনীতির ব্যাপার রাজনীতির ময়দানেই মোকাবিলা হবে।”
সারদা কেলেঙ্কারি এবং সহারা কর্তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জড়িয়ে তৃণমূলের প্রচারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার কলেজ স্কোয়্যার থেকে ধর্মতলা মিছিল করবে বিজেপি। ওই কর্মসূচিতে থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী, সাংসদ সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া, কেন্দ্রীয় সম্পাদক তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। আগামী ১ এবং ২ ফেব্রুয়ারি ফের রাজ্যে আসছেন অমিত। ১ ফেব্রুয়ারি বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বিস্ফোরণ কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ওই জেলায় জনসভা করবেন তিনি। পর দিন কলকাতায় বিধানসভাপিছু নিযুক্ত দলের সর্বক্ষণের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন সর্বভারতীয় সভাপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy