আধুনিক লেজার রশ্মি ও ফোয়ারা দিয়ে শহিদ মিনার সাজাতে চায় রাজ্য। মিনার ঘেরা হবে গ্রিল দিয়ে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ করছে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক। পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য সেনা-কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চেয়েছে পূর্ত দফতর।
এই আলো দিয়ে আকর্ষণ বাড়ানো হয়েছে ‘ইন্ডিয়া গেট’-এর। এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (পূর্ত) কনকেন্দু সিংহ এ কথা জানিয়ে বলেন, “দিল্লির ওই প্রকল্পে ব্যবহৃত হয় একটি রঙের আলো। শহিদ মিনারে বিচ্ছুরিত হবে অন্তত চার রঙের আলো। অন্ধকারে তা ছড়াবে গঙ্গার দিকে।” লেজার আলোর ব্যবস্থায় প্রচুর তাপ তৈরি হয়। প্রকল্পটি কার্যকরী রাখতে মিনারের চূড়ায় তাই কিছুটা অংশ শীতাতপ-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করতে হবে।
কনকেন্দুবাবু বলেন, “ইন্ডিয়া গেটের আলো-ব্যবস্থা রূপায়ণের দায়িত্ব সরাসরি এক বহুজাতিক সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শহিদ মিনারের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। কাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা বাছতে চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ইলেকট্রিক্যাল) শুভাশিস বিশ্বাসের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে কমিটি। শুভাশিসবাবু বলেন, “শীঘ্রই এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আলো-ব্যবস্থাতেই লাগবে দেড় কোটি টাকা। সেনার চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে কাজ শেষ হতে সাত মাসের মতো লাগবে।”
রাজ্যে নয়া সরকার আসার পরে বিদ্যাসাগর সেতুতে আধুনিক আলো-ব্যবস্থা করেছে হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। আলোয় সাজানো হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ-সহ কিছু প্রতিষ্ঠান। শহিদ মিনারের আলো-প্রকল্প এগুলির মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হবে বলেই মত পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের।
জে পি পার্কারের নকশায় তৈরি এই সৌধের নীচ থেকে উপরে যথাক্রমে মিশরীয়, সিরিয় ও তুর্কি স্থাপত্যের ছোঁয়া। ১৮০৪ সালে মারাঠারা দিল্লি আক্রমণ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি ডেভিড অক্টারলোনি তাঁর বাহিনী নিয়ে মারাঠাদের পরাস্ত করেন। অ্যাঙ্গলো-নেপাল যুদ্ধেও ব্রিটিশ বাহিনীর সেনাপতি ছিলেন তিনি। তাঁর স্মৃতিতে চিহ্নিত হয় সৌধটি। ১৯৬৯-এ নাম বদল করে রাখা হয় শহিদ মিনার। উচ্চতা ৪৮ মিটার (১৫৯ ফুট)। ২২৩টি সিঁড়ি।
প্রস্তাবিত পূর্ত পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, মিনারকে ঘিরে ৩টি ফোয়ারা হবে। মিনারকে মাঝে রেখে তিনকোণা তারার আদলে বাগান সাজিয়ে এর তিনটি মুখে বসানো হবে ‘বাবল জেট’ ফোয়ারা। এই ফোয়ারা ও আলো-ব্যবস্থায় ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির নিরাপত্তার জন্য গ্রিল দিয়ে ঘেরা হবে মিনারের চারপাশ।
বছর দুই আগে শহিদ মিনারে ‘রাসায়নিক রং’ করা হয়েছিল। ওই সময়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা যায়, মিনারের মূল ব্রোঞ্জের চূড়া বহু বছর আগে রঙের মোটা প্রলেপে ঢেকে গিয়েছে। সেই প্রলেপ ঘষে তোলা হয়। এ বার মিনারে এক প্রস্থ রং করা হবে। এর জন্য খরচ হবে লাখ দশেক টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy