এমনই অবস্থা হাওড়া স্টেশন চত্বরের। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
বছর ঘোরেনি। ফের বেহাল অবস্থা হাওড়া স্টেশন চত্বরের। স্টেশন থেকে বেরোনোর মুখে ভাঙাচোরা খানা-খন্দে ভরা রাস্তা, বেআইনি হোটেলের রমরমা আর হকারদের দাপাদাপি। ফের পূর্বাবস্থায় ফিরে গিয়েছে পূর্ব ভারতের অন্যতম গেটওয়ে এই স্টেশন চত্বর।
অথচ এক বছর আগেই জেলা প্রশাসন ও হাওড়া সিটি পুলিশের যৌথ উদ্যোগে হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্যাক্সি পরিষেবা থেকে শুরু করে রাস্তাঘাটের উন্নতি ও সৌন্দর্যায়ন করে স্টেশন চত্বর ঢেলে সাজার কাজ শুরু হয়। স্টেশনে ঢোকার নতুন রাস্তা তৈরি করে কেএমডিএ। নীল-সাদা রং করা হয় বাসস্ট্যান্ডের কাছে থাকা সরকারি দফতরগুলিতে। উঠিয়ে দেওয়া হয় স্টেশনের উল্টো দিকে ফুটপাথে গজিয়ে ওঠা সব হোটেল। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টেশন চত্বরে দিনের পর দিন ধরে চলা অবৈধ কাজকর্ম। কার্যত মুখ বদলে যায় হাওড়া স্টেশন চত্বরের।
কিন্তু বছর না ঘুরতেই ধীরে ধীরে গঙ্গার ধার জুড়ে আবার গড়ে উঠেছে বেআইনি হোটেলের অস্থায়ী স্টল। রাস্তা দখল করে শুরু হয়েছে তাদের বিক্রিবাটা। একই ভাবে স্টেশনের উত্তর দিকে, অর্থাৎ স্টেশনে ঢোকার মুখে সাবওয়েতে হকারদের দৌরাত্ম্য ফের বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। তবে নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রী সকলেরই অভিযোগ, স্টেশন চত্বরে বেআইনি হোটেল ও হকারদের রমরমা বেড়ে যাওয়ার থেকেও বেশি সমস্যা দেখা দিয়েছে ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট নিয়ে। স্টেশন থেকে বেরিয়ে কলকাতা আসার যে প্রধান রাস্তা, সেটির অবস্থা এককথায় ভয়াবহ। গোটা রাস্তায় ছোট-বড় গর্ত। সেখানে জল জমে থেকে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক অশোক ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট ও এলাকার উন্নতি নিয়ে আমি কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা বলব। এই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন চত্বরকে ঠিক রাখতেই হবে।’’ হাওড়া স্টেশনের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দাসমহাপাত্র বলেন, ‘‘বর্ষা আসার আগেই ওই রাস্তা সারানো না হলে সমস্যায় পড়বে প্রি-পেড ট্যাক্সি পরিষেবা। ওই রাস্তায় নিত্যদিন মারাত্মক যানজট হবে।’’
এ ব্যাপারে হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘হকার ও বেআইনি হোটেলের অস্থায়ী স্টল স্টেশন চত্বর থেকে মাঝেমধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ভাঙা রাস্তা সারানোর জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গত সাত-আট মাস ধরে কেএমডিএ-কে একাধিক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ ওই পুলিশকর্তা আরও জানান, হাওড়া স্টেশন চত্বরে কয়েকটি জায়গায় আরও আলো বসানো প্রয়োজন। কয়েকটি হাইমাস্ট আলোর জন্য কেএমডিএ-কে জানানো হয়েছে। তারও কোনও উত্তর আসেনি।
কেএমডিএ-র হাওড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক ইঞ্জিনিয়ার এ প্রসঙ্গে জানান, হাওড়া সিটি পুলিশের পক্ষ থেকে রাস্তা সারানোর ব্যাপারে চিঠি আসার পরে তা দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সে ব্যাপারে নির্দেশ আসার পরেই ওই রাস্তা সারাইয়ের জন্য ৮ কোটি টাকার প্রকল্প-রিপোর্ট তৈরি করে মাস সাতেক আগে পাঠানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার কোনও উত্তর আসেনি। ওই ইঞ্জিনিয়ার আরও বলেন, ‘‘যে রাস্তাটি খারাপ হয়েছে, তা আগেও এক বার মেরামত করা হয়েছিল। এ বার স্টেশন চত্বরের পুরো রাস্তার বেশির ভাগ অংশই ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট ও সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy